Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪

সিলিন্ডার ফেটে মৃত ৪, ১৬ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ

খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতাল, সেখান থেকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল এবং শেষে অগ্নিদ্বগ্ধদের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সন্দীপবাবুর ছেলে বেঁচে গেলেও বাকি ৪ জনেরই মৃত্যু হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৭ ০৫:৪২
Share: Save:

রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার ফেটে মারা গিয়েছিলেন একই পরিবারের ৩ জন। মৃত্যু হয়েছিল এক মেকানিকেরও। প্রায় তিন বছর আগে খড়্গপুরের এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট গ্যাস ডিলার এবং বিমা সংস্থাকে ১৬ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালত। সোমবার এই নির্দেশ দিয়ে আদালত জানিয়েছে, আগামী দু’মাসের মধ্যে ক্ষতিপূরণের টাকা দিতে হবে ওই পরিবারকে। দু’মাসের মধ্যে না দিলে ৬ শতাংশ সুদ-সহ ক্ষতিপূরণের টাকা দিতে হবে বলে জানিয়েছে আদালত।

ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের রায় জেনে খুশি ওই পরিবারের কর্তা সন্দীপ সিংহ। তিনিই গ্যাস ডিলারের বিরুদ্ধে পরিষেবায় গাফিলতির মামলা দায়ের করেছিলেন। এ দিন তিনি বলেন, “যাদের গাফিলতির জন্য পরিজনেদের হারিয়েছি, তাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জিতে ভাল লাগছে। এতে ওই ডিলারের শিক্ষা হবে।” সন্দীপবাবুর আইনজীবী আশীর্বাদ হালদারও বলেন, “গ্যাস সিলিন্ডারে ত্রুটি ছিল। তাই এই মর্মান্তিক ঘটনা।” মেদিনীপুরের আইনজীবীদের একাংশ মনে করছেন, এমন রায়ের ফলে ক্রেতা সুরক্ষা বলয় মজবুত হবে।

২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর খড়্গপুরের নিমপুরায় সন্দীপবাবুদের বাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়েছিল। মারা যান সন্দীপবাবুর বাবা তেজপাল সিংহ, মা অসীমা কৌওর এবং ভাই কপিল সিংহ। গুরুতর জখম হন ছেলে আকৃত সিংহ। খড়্গপুরে ইন্ডিয়ান অয়েলের ডিলার ‘ঊষা গ্যাস এজেন্সি’-র গ্রাহক ছিলেন সন্দীপবাবুরা। ২০১৪ সালের ৪ নভেম্বর ওই সংস্থা থেকে তাঁর বাড়িতে সিলিন্ডার এসেছিল। ১৩ নভেম্বর ওভেনের সঙ্গে সংযুক্ত করার পরই দেখা যায়, সিলিন্ডার কাজ করছে না। সন্দীপবাবুরা ডিলারকে সে কথা জানালে দেবাশিস মজুমদার নামে এক মেকানিককে পাঠানো হয়। তিনি মেরামতির কাজ করার সময়ই সিলিন্ডার ফেটে বাড়িতে আগুন ধরে যায়। দ্বগ্ধ হন মেকানিক-সহ ৫জন।

খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতাল, সেখান থেকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল এবং শেষে অগ্নিদ্বগ্ধদের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সন্দীপবাবুর ছেলে বেঁচে গেলেও বাকি ৪ জনেরই মৃত্যু হয়। ঘটনার বিহিত চেয়ে ২০১৫ সালে জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হন সন্দীপবাবু। ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের সভাপতি বিবেকানন্দ প্রামাণিক, পুলককুমার সিংহ এবং সাগরিকা সরকারকে নিয়ে গঠিত তিন সদস্যের বেঞ্চে মামলার বিচার হয়।

পরিষেবায় গাফিলতির অভিযোগ মানতে নারাজ ওই গ্যাস ডিলারের আইনজীবী সুরজিৎ দত্ত। রায়ের বিরুদ্ধে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে আবেদন করবেন তাঁরা। সুরজিৎবাবু বলেন, “এ ক্ষেত্রে ডিলারের দোষ ছিল না। এটি দুর্ঘটনাই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE