এগিয়ে আসছে ফণী। সুনসান দিঘা। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
শক্তি বাড়িয়ে অন্ধ্রপ্রদেশ উপকূলে ঢুকে পড়েছে বৃহস্পতিবার বিকেলেই। পূর্বাভাস অনুয়ায়ী, আজ শুক্রবার গভীর রাতে পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতেও আছড়ে পড়বে সে। তাই ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র সঙ্গে লড়তে এ দিন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, জেলার উপকূলবর্তী পাঁচটি ব্লকে থাকা ৪০টি ‘রেসকিউ সেন্টারে’র তালা ইতিমধ্যেই খোলা হয়েছে। রামনগর-১, ২, কাঁথি-১, ২ এবং খেজুরি-২ ব্লক প্রশাসনের অফিসে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে জরুরিকালীন সাহায্যের জন্য। জেলায় এ দিনই এসে গিয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল ‘এনডিআরএফে’র তিরিশ সদস্যের একটি দল। এছাড়া, রাজ্য অসামরিক প্রতিরক্ষা দফতরের বেশ কয়েকটি দলও জেলায় এসেছে। ঝড় পরবর্তী উদ্ধার কাজের জন্য চারটি নৌকা আনা হয়েছে। ইতিমধ্যেই জেলায় প্রাথমিক আর্থিক সাহায্যও এসে গিয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে।
দিঘা, মন্দারমণি এলাকায় সমুদ্র স্নানে নিষেধাজ্ঞা জারির পাশাপাশি, এ দিন কাঁথি দেশপ্রাণ ব্লকের রসুলপুর নদী এবং সমুদ্র সংলগ্ন এলাকায় মাইক প্রচার চালানো হয়। পেটুয়া মৎস্যকন্যা থেকে মাছ ধরতে যাওয়ার জন্য মৎস্যজীবীদের নিষেধ করা হয়। ওই ব্লকের শিলাবেড়িয়া, পাঁচুড়িয়া, আমতলিয়া-সহ আটটি এলাকায় রেসকিউ সেন্টার খোলা হয়েছে। বিপদগ্রস্তদের দ্রুত রেসকিউ সেন্টারে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সব রকম ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সেখানের পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তরুণ জানা।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
একই রকম প্রস্তুতি সেরেছে কাঁথি-১ ব্লক প্রশাসনও। সূত্রের খবর, শাবাজপুট-সহ ১০টি রেসকিউ সেন্টার এখন চালু রয়েছে। উপকূলবর্তী এলাকার বাসিন্দারা চাইলে এ দিন থেকেই সেখানে আশ্রয় নিতে পারেন। সে জন্য পঞ্চায়েত সদস্যদের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি বার্তা পাঠানো হচ্ছে। কাঁথির মহকুমাশাসক শুভময় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘উপকূলবর্তী এলাকায় জেলা প্রশাসনের নির্দেশ মেনে সর্তকতা জারি করা হয়েছে। মানুষদের রেসকিউ সেন্টারে নিরাপদে রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে এখন থেকেই সজাগ থাকতে বলা হয়েছে।’’
শুধু উপকূলবর্তী এলাকা নয়, ‘ফণী’র প্রভাব পড়তে পারে হলদিয়াতেও। এ দিন হলদিয়ার টাউনশীপ-সহ নদী তীরবর্তী এলাকার সর্বত্র বাসিন্দাদের সতর্ক করা হয়। হলদিয়া থানার উদ্যোগে অটোয় করে মাইকে প্রচার করে পুলিশ। নন্দীগ্রাম-১ ব্লকে বি এম টি হাই স্কুল, কালিচরণপুর হাই স্কুল, সোনাচূড়ায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিপদগ্রস্ত মানুষদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় ব্লক প্রশাসনের।
জেলাশাসক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘ঘূর্ণিঝড়ের জেরে ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। উদ্ধার কাজের জন্য এনডিআরএফ এবং রাজ্য অসামরিক প্রতিরক্ষা দফতরের দুটি দল জেলায় এসেছে। জরুরিকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলা ত্রিপল, পোশাক এবং চালের মতো অন্য ত্রাণ সামগ্রী মজুত করা হচ্ছে। এছাড়া, রাজ্য সরকারে তরফে ১০ লক্ষ টাকাও দেওয়া হয়েছে আমাদের।’’
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের জেরে পাকা বোরো ধান ঘরে তুলে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে কৃষকদের। সেজন্য জেলার উপকূলবর্তী কাঁথি মহকুমা ছাড়াও তমলুক, হলদিয়া এবং এগরাতেও কৃষকদের মধ্যে ধান কেটে নেওয়ার ব্যস্ততা দেখা গিয়েছে। জেলা কৃষি দফতরের সহ-অধিকর্তা মৃণালকান্তি বেরা বলেন, ‘‘জেলায় প্রায় ৮০ শতাংশ বোরো ধান মাঠ থেকে তোলার কাজ শেষ। বাকি ধান তোলার কাজও চলছে। তবে কিছু জায়গায় সদ্য রোয়া ধান এখনও না পাকায় মাঠে থেকে গিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy