বন্ধে জনজীবন স্বাভাবিক রইল মেদিনীপুর-খড়্গপুর দুই শহরেই। স্কুল খোলা, দোকান-বাজার খোলা, পথে বাসও চলল অন্য দিনের মতোই।
সব দেখে মেদিনীপুরে আর বন্ধের সমর্থনে মিছিল করার ঝুঁকিই নিল না সিপিএম। অথচ, সকাল থেকেই শহরে মিছিলের প্রস্তুতি সারা ছিল। দলের কর্মী-সমর্থকদের খবর দেওয়া হয়েছিল। তাঁরা একে একে আসতেও শুরু করেছিলেন। বন্ধের সমর্থনে এ দিন সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের পথে দেখাই যায়নি। জনজীবন স্বাভাবিক দেখে মিছিল স্থগিত রাখার কথা অবশ্য সরাসরি মানছে না সিপিএম। দলের মেদিনীপুর শহর জোনাল সম্পাদক সারদা চক্রবর্তীর কথায়, “সকালে মিছিল হওয়ার কথা ছিল। হয়নি। সকালে না-হলেও বিকেলে শহরে মিছিল হয়েছে।”
যুব তৃণমূলের কর্মীরা মেদিনীপুরে বাইক মিছিল করেছেন। তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক দীনেন রায় বলেন, “এ দিন সব কিছুই স্বাভাবিক ছিল। সিপিএম জনজীবন স্তব্ধ করতে চেয়েছিল। পারেনি।”
জনজীবন স্বাভাবিক রাখার আর্জি জানিয়ে রবিবার দিনভর প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহরে মাইকে প্রচার করা হয়। এ দিন মেদিনীপুরে পরিবহণ ব্যবস্থাও স্বাভাবিক ছিল। প্রায় সব বাসই চলেছে। অনভিপ্রেত ঘটনা এড়াতে সকাল থেকে শহরে কড়া পুলিশি নজরদারি ছিল। স্কুল, কলেজ, সরকারি অফিসের সামনে পুলিশ মোতায়েন ছিল। মেদিনীপুরের (সদর) মহকুমাশাসক দীননারায়ণ ঘোষ বলেন, “এ দিন মেদিনীপুরে সব কিছুই স্বাভাবিক ছিল।”
যদিও বামেদের দাবি, পুলিশের সহায়তায় বন্ধ ব্যর্থ করার চেষ্টা করেছে তৃণমূল। সিপিএমের শহর জোনাল সম্পাদক সার দা চক্রবর্তী বলেন, “মেদিনীপুরে ওরা বাইক মিছিল করেছে। তৃণমূলের বাহিনী রাস্তায় নেমে বন্ধবানচাল করার চেষ্টা করেছে।” যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিতবাবুর পাল্টা বক্তব্য, “মানুষই বন্ধ ব্যর্থ করেছে।”
খড়্গপুরে বন্ধে যে প্রভাব পড়েনি তা স্বীকার করেছে বামেরাও। সিপিএমের খড়্গপুর শহর জোনাল কমিটির সম্পাদক অনিতবরণ মণ্ডল বলেন, “রবিবার রাত থেকে পুলিশ-প্রশাসন বন্ধ ব্যর্থ করতে সাধারণ মানুষের উপর চাপ তৈরি করে। তাই মানুষ ভয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। আমরাও কোথাও জোর করিনি।’’ একইসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘এটাও ঠিক প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে অনেকে সমর্থন করায় বন্ধ সফল হয়নি। আগামী দিনে তাঁদের মোহভঙ্গ হবে।”
বামেদের ডাকা বন্ধ নিয়ে সরব খড়্গপুরের তৃণমূল নেতা তথা পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার। তিনি বলেন, “বামেদের বন্ধ ব্যর্থ হয়েছে। এতে বামেদের লজ্জা হওয়া উচিত। মানুষ সিপিএমের বন্ধের রাজনীতিকে যে সমর্থন করে না তা এ দিনের বন্ধে প্রমাণিত হয়েছে।”
নোট বাতিলের প্রতিবাদে এ দিন মেদিনীপুরে মিছিল করে কংগ্রেস। দলের জেলা কার্যালয়ের সামনে থেকে এই মিছিল শুরু হয়। পরে তা শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে। নেতৃত্বে ছিলেন জেলা কংগ্রেসের সহ-সভাপতি শম্ভুনাথ চট্টোপাধ্যায়। কংগ্রেস নেতৃত্বের বক্তব্য, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের ফলে সাধারণ মানুষ চরম সমস্যায় পড়েছেন।