E-Paper

শুঁড়ে তার জড়ানো হস্তিশাবকের দেহ, তদন্তে বন দফতর

বন দফতর সূত্রে খবর, সাঁকরাইল বিটের  হাড়িভাঙা জঙ্গলে ১১টি হাতির দলেই শাবকটি  ছিল। হাড়িভাঙার জঙ্গল থেকে বেরিয়ে পাশের সাতভান্ডারী গ্রামে ধানজমিতে নেমে যায় হাতিগুলি।

নিজস্ব সংবাদদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৮:১০
চাষজমিতে তার জড়ানো হস্তিশাবক। এমন ছবিই ছড়িয়েছে সমাজমাধ্যমে।

চাষজমিতে তার জড়ানো হস্তিশাবক। এমন ছবিই ছড়িয়েছে সমাজমাধ্যমে।

শুঁড়ে তার জড়ানো হস্তিশাবকের দেহের ছবি প্রকাশ্যে এসেছিল। তবে বনকর্মীরা পৌঁছনোর আগেই উধাও সেই তার!

রবিবার রাতে কলাইকুন্ডা রেঞ্জের সাঁকরাইল বিটের সাতভান্ডারী চাষজমিতে ওই হস্তিশাবকের দেহ উদ্ধার হয়। তার শুঁড়ে তার জড়ানো ছবি প্রকাশ্যে আসায় অস্বস্তি শুরু হয়েছে বন দফতরে। সম্প্রতি লালগড় ব্লকের লকাট গ্রামে চাষজমিতেই এক হস্তিশাবকের দেহ মিলেছিল, যার শুঁড়েও ছিল ক্ষত। দু’টি ক্ষেত্রেই বিদ্যুতের তারে লেগে মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছেন প্রাণী চিকিৎসকরা। খড়্গপুরের ডিএফও শিবানন্দ রাম বলেন, ‘‘ইলেকট্রিক তারটির উপর কেবল্‌ ছিল। ছবি দেখে আমরা বিভাগীয় তদন্ত শুরু করেছি। তবে আমরা যাওয়ার সময় তার ছিল না। বাঁশের খুঁটিগুলি ছিল।’’

বন দফতর সূত্রে খবর, সাঁকরাইল বিটের হাড়িভাঙা জঙ্গলে ১১টি হাতির দলেই শাবকটি ছিল। হাড়িভাঙার জঙ্গল থেকে বেরিয়ে পাশের সাতভান্ডারী গ্রামে ধানজমিতে নেমে যায় হাতিগুলি। জমিতে বৈদ্যুতিক তার বিছানো ছিল বলে অভিযোগ। শাবকের মৃত্যুর খবরে এলাকায় আসেন খড়্গপুর বনবিভাগের ডিএফও এবং কলাইকুন্ডা রেঞ্জ অফিসার শুভেন্দু বিশ্বাস। তখন শাবকটিকে আগলে ছিল একটি দাঁতাল-সহ ৩টি হাতি। ফলে দেহ উদ্ধারে দেরি হয়। ততক্ষণে শুঁড়ে তার জড়ানো শাবকের দেহের ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়েছে। বন দফতর লোকজন যখন দেহের কাছে যান, বিদ্যুতের তার পাননি। সোমবার ভোর রাতে শাবকটির দেহ উদ্ধার করে চাঁদাবিলা রেঞ্জ অফিসে আনা হয়। মঙ্গলবার ময়নাতদন্তের পরে দেহ পোড়ানো হয়েছে।

হাতির হানায় ফসল বাঁচাতে জমির চারপাশ বিদ্যুতের তার দিয়ে ঘিরে রাখেন জঙ্গলমহলের একাংশ চাষি। তাতেই বিপদ ঘটছে। শুধু হাতি নয়, ওই তারে মানুষও মরেছে। ২০২১ সালের অক্টোবরে নয়াগ্রামের রাঙ্গিয়াম গ্রামের জমি পেরিয়ে মাছ ধরতে যাচ্ছিলেন বছর পঞ্চাশের সন্তোষ ভক্তা। অন্য এক চাষির এক জমিতে বিছানো তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তিনি। গত তিন বছরে নয়াগ্রাম ও সাঁকরাইলে এ ভাবে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। তবে তার দিয়ে জমি ঘেরা বন্ধ হয়নি। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি লালগড়ের কাঁটাপাহাড়ি বিটের লকাট গ্রামের জঙ্গল লাগোয়া জমিতে উদ্ধার হওয়া হস্তিশাবকের দেহ ময়নাতদন্তের পরও বিদ্যুতের তারে লেগে মৃত্যুরই ইঙ্গিত মিলেছিল। মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হতে নমুনা কলকাতায় পাঠানো হয়েছে। মেদিনীপুর বনবিভাগের ডিএফও সন্দীপ বেরওয়াল বলছেন, ‘‘চূড়ান্ত রিপোর্ট এখনও হাতে আসেনি।’’

এ বার সাঁকরাইলের ঘটনায় অস্বস্তি বেড়েছে বন দফতরের। খড়্গপুরের ডিএফও বলছেন, ‘‘ময়নাতদন্তের রিপোর্টে নিশ্চিত হওয়ার পর আইনত পদক্ষেপ করা হবে।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Elephant Calf sankrail

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy