মঞ্চের অভাবে ক্লাবঘরে চলছে নাটকের মহড়া।
স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রেক্ষাগৃহ পেল না ঝাড়গ্রাম
জঙ্গলমহলের বর্হিরঙ্গের পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে অরণ্যশহর ঝাড়গ্রামেও। ঝাড়গ্রাম পুলিশ জেলা হয়েছে। কিন্তু ঐতিহ্যের এই শহরে আজ পর্যন্ত স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রেক্ষাগৃহ তৈরি হল না। সেটা থাকলে নাটক ও শিল্প সংস্কৃতির উপস্থাপনে সহায়তা হতো। ঝাড়গ্রামে নাট্যচর্চার ইতিহাস সমৃদ্ধ। ষাট-সত্তরের দশক থেকেই বিশু সেন, বঙ্কুবিহারী রায়, নারায়ণ ভট্টাচার্য, কুমারেশ বিশ্বাস, শ্রীকান্ত পাল, দিব্যেন্দু হোতার মতো বিশিষ্টজনের হাত ধরে শহরে নাট্যচর্চার উন্নত ধারার প্রবর্তন ঘটেছিল। ঝাড়গ্রাম পেয়েছে গীতা চক্রবর্তী, দুলালি বিশ্বাসের মতো মঞ্চ সফল অভিনেত্রীদের। বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই এই অভিনেতা-অভিনেত্রীদের লড়াইয়ের ইতিহাস জানেন না। পরবর্তী কালে সঞ্জীব সরকার ও প্রদীপ চক্রবর্তীর হাত ধরে ঝাড়গ্রামে নাট্যচর্চা বিশেষ মাত্রা পায়। অন্য দিকে, তপন সেনরায়ের মতো নাট্যপ্রেমীরা নাট্যচর্চা অব্যহত রেখেছেন। অরণ্যশহরের নাট্যচর্চার এই নিরবিচ্ছিন্ন ইতিহাসের একটি মূল্যায়ন সম্বলিত প্রতিবেদন ‘আমার শহর’ বিভাগে ঠাঁই পাক, প্রত্যাশা আমাদের।
কুন্তল পাল ও দেবলীনা দাশগুপ্ত পাল। নাট্যকর্মী, কদমকানন।
সাহিত্যের সংগ্রহশালা চাই
ঝাড়গ্রামের সাহিত্যচর্চার একটি স্বতন্ত্র ধারা রয়েছে। দীর্ঘ পাঁচ দশক ধরে বহু বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিকের হাত ধরে অরণ্যশহর তথা জঙ্গলমহলের সাহিত্যের ক্ষেত্রটি সমৃদ্ধ হয়েছে। আঞ্চলিক কুড়মালি ও বাংলা ভাষায় সাহিত্য সৃষ্টি হয়েছে এখানে। শ্রদ্ধেয় অগ্রজ কবি-সাহিত্যিকদের পাশাপাশি, নতুন প্রজন্মের অনেক কবি ও লেখক উঠে এসেছেন জঙ্গলমহলের সাহিত্যের আঙিনায়। জীবন সংগ্রামে ক্ষতবিক্ষত হয়েও আমাদের কলম থেমে নেই। কিন্তু দুঃখের বিষয়, জঙ্গলমহলের কবি ও সাহিত্যিকদের জন্য সরকারি স্তরে কোনও ভাবনা নেই। জঙ্গলমহলের জন্য উদার সরকারের ছায়ায় আমরাও কী স্বস্তির শ্বাস নেওয়ার সুযোগ পাব না? সরকারের কাছে আমার একান্ত অনুরোধ, জঙ্গলমহলের সাহিত্যকর্মের একটি সংগ্রহশালা তথা প্রদর্শনশালা গড়ে তোলা হোক। না হলে কয়েক দশকের এত বিপুল সাহিত্যসম্ভার সংরক্ষণের অভাবে অজানা ইতিহাসের গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
তপন চক্রবর্তী। কবি-সাহিত্যিক, বাছুরডোবা।
অটো প্রয়োজন
ঝাড়গ্রাম শহরে দূষণ বিহীন অটো সার্ভিস চালু করা প্রয়োজন। শহরে রিকশার নির্দিষ্ট ভাড়ার হার নেই। ব্যক্তিগত সাইকেল ও মোটর বাইক ছাড়া উপযুক্ত পরিবহনের ব্যবস্থা না থাকায় আমার মতো বয়স্ক মানুষজনের সমস্যা হয়। প্রশাসন ও পুর কর্তৃপক্ষ উপযুক্ত পদক্ষেপ নিলে সকলেই উপকৃত হবেন।
সৌম্যেন বসু মল্লিক। সমাজকর্মী, ঘোড়াধরা।
শহরের উত্তর প্রান্ত উপেক্ষিত
শহরের মেন রোডের বুক চিরে গিয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের টাটা-খড়্গপুর শাখার রেল পথ। সেখানে এখন উড়ালপুল তৈরি হয়েছে। প্রায় সাড়ে তিন বছর পরে দৈনন্দিন যন্ত্রণার অবসান হতে চলেছে। কিন্তু আমাদের মতো মেন রেল ক্রসিংয়ের উত্তর প্রান্তের বাসিন্দারা শহরবাসী হয়েও চিরকালই অবহেলিত। দক্ষিণ প্রান্তে যাবতীয় অফিস কাছারি, আদালত, রেল স্টেশন, প্রধান ডাকঘর, গুরুত্বপূর্ণ ব্যাঙ্ক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলি রয়েছে। প্রধান বাজারটিও দক্ষিণপ্রান্তে। অথচ শহরের জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক বাসিন্দা উত্তরপ্রান্তে থাকেন। উত্তরপ্রান্তে বড় বাজারহাট নেই। এখানে বড় সব্জিবাজার ও প্রাত্যহিক প্রয়োজনের জিনিসপত্রের বাজার দরকার।
বাবলু পাল। চশমা ব্যবসায়ী, জামদা।
বহু রাস্তার নাম নেই
১৭টি ওয়ার্ড বিশিষ্ট এই শহরে অনেক রাস্তারই নাম নেই। আগের বাম পুরবোর্ড শহরের পিচ রাস্তাগুলির নামকরণ করেছিল। কিন্তু এলাকার দোকানপাটে সেই সব রাস্তার নামের কোনও উল্লেখ নেই। ঝাড়গ্রামের সর্বশেষ রাজা নরসিংহ মল্লদেব ও তাঁর পুত্র যুবরাজ বীরেন্দ্রবিজয় মল্লদেবের নামে শহরের দু’টি অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ পিচ রাস্তার নামকরণ করা হয় বাম জমানাতেই। মল্লদেব রাজ পরিবারের বর্তমান সদস্য দুর্গেশ মল্লদেবের নেতৃত্বাধীন বর্তমান পুরবোর্ডও রাস্তাঘাটের সুনির্দিষ্ট নামকরণ নিয়ে কিছুই ভাবছেন না। বেশির ভাগ রাস্তার কোনও নাম না-থাকায় এতবড় শহরে ঠিকানা খুঁজে পেতে খুবই সমস্যা হয়।
সঙ্গীতা মুখোপাধ্যায়। গৃহবধূ, রঘুনাথপুর
অবিলম্বে বেহাল পার্ক সংস্কার দরকার
ইদানিং শহরটা ভীষণ রকম অপরিচ্ছন্ন হয়ে যাচ্ছে। শহরে বিনোদনের ব্যবস্থা নেই। শহরের সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য আগের পুরবোর্ড উদ্যোগী ছিল না। বর্তমান পুর-কর্তৃপক্ষও তেমন উদ্যোগী নয়। এক সময় এই শহরে চারটি সিনেমা হল ছিল। এখন সব বন্ধ। শহরের পার্কগুলিরও অবস্থা তথৈবচ। সর্বসধারণের জন্য সেগুলি সব সময় খোলাও থাকে না। সঞ্চয়িতা পার্কটি একসময় দারুণ সেজে উঠেছিল। এখন সেটির ভূতুড়ে দশা। এই শহরে পরিবার নিয়ে ছুটি কাটানোর জন্য মিনি চিড়িয়াখানা ছাড়া আর জায়গা নেই।
সায়ন্তন রায়। ব্যবসায়ী। রঘুনাথপুর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy