Advertisement
E-Paper

ঘরেই ডেঙ্গি রোগী, উদাসীন প্রশাসন

পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর ২ ব্লকের উত্তর খাড় গ্রাম জুড়েই এই জ্বর-চিত্র। পাশের জেলা পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুরে ডেঙ্গি ভয়াবহ আকার নিয়েছে।

শান্তনু বেরা

শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৫:০৮

আক্রান্ত: বাড়িতেই চিকিৎসা চলছে অনুষ্কার। নিজস্ব চিত্র

আক্রান্ত: বাড়িতেই চিকিৎসা চলছে অনুষ্কার। নিজস্ব চিত্র

সত্তর বছরের রঘুনাথ দাস জ্বরে ভুগছেন। আর তাঁর দুই নাতনি ১২ বছরের নেহা ও ৪ বছরের অনুষ্কা ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। নেহা নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছিল ২৭ অগস্ট। এখন তার চিকিৎসা চলছে কলকাতার হাসপাতালে। অনুষ্কা অবশ্য বাড়িতেই। কারণ, তার চিকিৎসা করানোর মতো লোক পরিবারে নেই। অসুস্থ ছোট মেয়েকে কোলে নিয়ে গীতা দাস বললেন, ‘‘আমার স্বামী দিলীপ পণ্ডা ও ছেলে শ্রীদীপ সবাই জ্বরে আক্রান্ত। আমারও জ্বর ছিল। গোটা পাড়ারই এই হাল।’’ খোঁজ নিয়ে জানা গেল, ওই পাড়ারই শম্ভু মাইতির ডেঙ্গি হয়েছিল। এখন একটু ভাল আছেন।

পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর ২ ব্লকের উত্তর খাড় গ্রাম জুড়েই এই জ্বর-চিত্র। পাশের জেলা পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুরে ডেঙ্গি ভয়াবহ আকার নিয়েছে। সেখানে দেরিতে অভিযান শুরু হওয়ায় কিছুতেই পরিস্থিতি আয়ত্তে আনা যাচ্ছে না। ইতিমধ্যে তিন জন ডেঙ্গিতে মারাও গিয়েছেন। কিন্তু সে সব থেকে শিক্ষা নেয়নি পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। স্বাস্থ্য দফতরের উদাসীনতাতেই পটাশপুরের উত্তর খাড় গ্রামে জ্বর-ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে এবং অধিকাংশেরই যথাযথ চিকিৎসা হচ্ছে না বলে অভিযোগ।

সোমবার গ্রামে ঢোকার মুখে দেখা হল স্থানীয় দোকানি গীতা পণ্ডার। তিনি সাফ বললেন, “দিন পাঁচেক আগে স্বাস্থ্য দপ্তর মেডিক্যাল ক্যাম্প করেছিল। আর একুট ব্লিচিং ছড়িয়েছে। তাতেই দায় সেরেছে তারা।’’ গ্রামে ঘুরে অবশ্য দেখা গেল, প্রায় সব বাড়ির সামনেই ব্লিচিং ছড়ানো। তবে আবর্জনা ও জমা জলও রয়েছে নানা দিকে। বেশিরভাগ বাড়িতে মশারিও ব্যবহার করা হচ্ছে না।

কেন এই উদাসীনতা? ফোন ধরেই জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচরণ মণ্ডল বললেন , “ প্রচণ্ড ব্যস্ততার মধ্যে আছি। তা ছাড়া, ডেঙ্গি ভাইরাল ফিভারের মতোই। এ ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি হতেই হবে এমন কোনও কথা নেই। খুব সঙ্কটজনক না হলে না হলে বাড়িতেই চিকিৎসা হতে পারে।’’ নিতাইবাবুর আরও দাবি, মেডিক্যাল টিম প্রতিদিন গ্রামে যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে। সোমবার পর্যন্ত পটাশপুরের এই গ্রামে ৯ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত বলে জানিয়েছিলেন নিতাইবাবু। এ দিন কি সংখ্যাটা বেড়েছে? এ বার আর জবাব না দিয়ে ‘ব্যস্ত আছি’ বলে ফোন কেটে দেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক।

পটাশপুর ২-এর বিডিও শুভজিৎ কুণ্ডুর অবশ্য দাবি, “ ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা আর বাড়েনি। তবে কয়েকজনের টাইফয়েড হয়েছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। আর প্রায় ৮৫ জন ভাইরাল জ্বরে আক্রান্ত।’’ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক গৌরাঙ্গ শীলও বলেন, “বেশিরভাগ লোকেরই ভাইরাল জ্বর হয়েছে।’’

Dengue Malaria Kharagpur খড়্গপুর
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy