মশা মারতে রাস্তায় কামান দাগছেন পুরকর্মীরা। অথচ দোকান থেকে বাড়ির উঠোন, জমা জলে কিলবিল করছে মশার লার্ভা। এমনই ছবি ডেঙ্গি-জ্বরে কাবু খড়গপুর শহরের।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে বিশেষ নজরদারি চালু হতেই শহরের মশা-চিত্র সামনে এসেছে। বৃহস্পতিবার ১৯ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডে বিশেষ নজরদারি চালায় জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও খড়গপুর পুরসভা। ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা, এসিএমওএইচ দেবাশিস পাল, জেলার নোডাল অফিসার ডেপুটি সিএমওএইচ -২ রবীন্দ্রনাথ প্রধান এবং পুর-আধিকারিকরা। বাড়ি বাড়ি ঢুকে মশার লার্ভা ও জমাজল পরিষ্কার করা হয়। ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে খরিদা বাজার এলাকায় শঙ্কর দে-র চা দোকানের সামনে ফেলে দেওয়া খুড়িতে মেলে মশার লার্ভা। শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘আমি জানতাম না চায়ের খুড়িতেও মাশার লার্ভা থাকতে পারে। এ বার থেকে খদ্দেরদের নির্দিষ্ট জায়গায় খুড়ি ফেলতে বলব।’’ একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, এলাকায় একটু বেশি করে ব্লিচিং পাউডার ছড়ালে ভাল হয়। ১৯ নম্বর ওয়ার্ডেরই ফুল ব্যবসায়ী রঞ্জন ঘোষের বাড়িতেও মশার লার্ভা মিলেছে। রঞ্জনবাবুর কথায়, ‘‘আমার বাড়িতে যে ডেঙ্গি মশার লার্ভা রয়েছে জানতাম না। বাড়িতে আর জল জমতে দেব না।’’
রঞ্জন ঘোষের পাশের বাড়িতেই খোঁজ মিলেছে এক ডেঙ্গি আক্রান্তের। স্নিগ্ধা পাল নামে ওই মহিলার রক্তে ম্যাক অ্যালাইজা পজিটিভ পাওয়া গিয়েছে। এ সিএমওএইচ দেবাশিস পাল বলেন, ‘‘স্নিগ্ধাদেবী এখন ভাল আছেন। রক্তে প্লেটলেটের সংখ্যা ঠিকাঠাক রয়েছে।’’ সচেতনতা ছাড়া এই পরিস্থিতি বদলানো সম্ভব নয় বলে মানছেন সকলেই। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশবাবু বলেন, ‘‘আমরা খড়গপুর শহরে ঘুরে সচেতনতার কথাই লোকজনকে বলছি।’’ ডেপুটি সিএমওএইচ -২ রবীন্দ্রনাথবাবুরও বক্তব্য, ‘‘আমি নিজে ৭ নম্বর ওয়ার্ডে শ্রীকৃষ্ণপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকা ও পড়ুয়াদের ডেঙ্গি সচেতনতার কথা বুঝিয়েছি। বাড়ির বাচ্চারা বড়দের বিষয়টি বোঝালে সচেতনতার কাজ ভালভাবে বলেই আশা।’’
খড়্গপুর পুরসভা অবশ্য জানিয়েছে, মশা প্রতিরোধে সব রকম পদক্ষেপই করা হচ্ছে। পুরসভার স্যানেটারি ইন্সপেক্টর প্রদীপ দাস জানান, বাড়ি বাড়ি ঘুরে মশার লার্ভা পরিষ্কারের পাশাপাশি হেলথ সুপারভাইজাররা ব্লিচিং ছড়াচ্ছেন, মশা নাশক তেল স্প্রে করছেন। বিভিন্ন ওয়ার্ডে ধোঁয়া দেওয়ার কাজও চলছে। পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “আমরা প্রতিটি এলাকা নিয়মিত পরিচ্ছন্ন রাখছি। কিন্তু বাড়ির মধ্যে জমা জলে, আবর্জনায় ডেঙ্গির মশার লার্ভা দেখা যাচ্ছে। মানুষকে সচেতন হতে হবে। না হলে তো বিপদ।”