Advertisement
E-Paper

উঠোনে ঘুমন্ত বৃদ্ধকে পিষে মারল দাঁতাল

স্থানীয়রা জানান, করবাবুকে ঘায়েল করার পরে হাতিটি উঠোনে ঘুরপাক খেয়ে উচ্চস্বরে আওয়াজ করছিল। গ্রামবাসীরা জড়ো হতেই হাতিটি উপরখাঁকড়িরজঙ্গলের দিকে পালিয়ে যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় করবাবুকে নয়াগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৭ ১৯:০০

রাতে গরমে উঠোনে খাটিয়া পেতে ঘুমোচ্ছিলেন কর টুডু। খাটিয়ার পাশে মাটির দাওয়ায় কাঁথা পেতে শুয়েছিল করবাবুর নাতি বছর তেরোর ছাত্র কঙ্কা। নয়াগ্রাম থানার জঙ্গল লাগোয়া পাঁচকাহানিয়া গ্রামে বৃহস্পতিবার ভোররাতে বছর বাষট্টির করবাবুকে পিষে দিয়ে যায় দাঁতাল।

রাত তিনটে নাগাদ আচমকা হাতির আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায় কঙ্কার। কঙ্কা বলে, “ঘুম ভাঙতেই দেখি একটা বড় হাতি খাটিয়ায় শুয়ে থাকা দাদুর কোমর পিষে দিয়েছে। খাটিয়াটা ভেঙে পড়ে যায় আমার পয়ের উপর। আমি কোনও মতে হুড়মুড়িয়ে ঘরের ভিতর ঢুকে প্রাণে বেঁচে গিয়েছি।”

স্থানীয়রা জানান, করবাবুকে ঘায়েল করার পরে হাতিটি উঠোনে ঘুরপাক খেয়ে উচ্চস্বরে আওয়াজ করছিল। গ্রামবাসীরা জড়ো হতেই হাতিটি উপরখাঁকড়ির জঙ্গলের দিকে পালিয়ে যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় করবাবুকে নয়াগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। কঙ্কার ডান হাঁটুতে চোট লেগেছে। তার প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়েছে। বন দফতরের পক্ষ থেকে জঙ্গল লাগোয়া আদিবাসী গ্রামের বাসিন্দাদের উঠোনে না ঘুমোনোরও পরামর্শ দেওয়া হয়। যদিও করবাবুর বড় ছেলে অর্জুন টুডুর দাবি, “গরমের জন্যই আমার ছোট ভাইয়ের ছেলে কঙ্কাকে নিয়ে বাবা উঠোনে ঘুমিয়েছিলেন।”

বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, নয়াগ্রামের জঙ্গলে দু’টি রেসিডেন্সিয়াল হাতি রয়েছে। তারই একটি ভোর রাতে পাঁচকাহানিয়া গ্রামে ঢুকে ওই বৃদ্ধকে পিষে মারে। মাস খানেক ওডিশার নীলগিরি এলাকায় কাটিয়ে দলমার পালের বেশ কিছু হাতি নয়াগ্রামে ফিরে এসেছে। এখন নয়াগ্রাম ব্লকের কেশরেখা, নয়াগ্রাম ও চাঁদাবিলা এই তিনটি রেঞ্জ এলাকায় দলমার পালের প্রায় ২৫টি হাতি রয়েছে। দলমার পালের হাতিরা এলাকার জঙ্গলে চলে আসায় রেসিডেন্সিয়াল হাতিরা লোকালয়ের কাছাকাছি ঘোরাফেরা করছে। সেই কারণেই রেসিডেন্সিয়াল দাঁতালটি খাবারের সন্ধানে পাঁচকাহানিয়া গ্রামে ঢুকেছিল বলে বন দফতরের অনুমান।

এ দিন পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে পাঁচকাহানিয়া গ্রামে যান নয়াগ্রামের ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ অফিসার আশিস মণ্ডল। আশিসবাবু বলেন, “প্রতিদিন হাতির গতিবিধি সম্পর্কে গ্রামবাসীদের সতর্ক করা হয়। রাতের বেলা খোলা জায়গায় ঘুমোতে নিষেধও করা হয়। সেই নিষেধাজ্ঞা না মানলে বিপদ হতে পারে, সেটা এ দিন ফের এলাকাবাসীকে বোঝানো হয়েছে।”

খড়্গপুরের ডিএফও অরূপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “রেসিডেন্সিয়াল হাতির আক্রমণে ওই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের উত্তরাধিকারীদের সরকারি নিয়ম অনুযায়ী আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। হাতিদের গতিবিধির উপর বনকর্মীরা কড়া নজরদারি করছেন।”

Elephant Old man yard
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy