হাতির তাণ্ডবে প্রচুর শস্যহানি হয়েছে। ক্ষিপ্ত গ্রামবাসী তাই পথ অবরোধ করলেন। শনিবার সকালে শালবনি থানা এলাকার পাথরকুমকুমিতে প্রায় তিন ঘন্টা অবরোধের জেরে মেদিনীপুর-লালগড় রুটে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ, বন দফতরের আধিকারিক, পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যরা স্থানীয়দের বুঝিয়ে অবরোধ তোলেন। শনিবার থেকেই হাতি তাড়ানোর ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেওয়া হয়। শালবনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নেপাল সিংহ বলেন, “এখন মাঠ জুড়ে ধান। টাকা খরচ করে চাষিরা অনেক কষ্টে চাষ করেছেন। তা নষ্ট হওয়ায় চাষিরা ক্ষিপ্ত হন।’’ হাতির দলটিকে দ্রুত লালগড়ের দিকে নিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দিয়েছে বন দফতর। মেদিনীপুর বন বিভাগের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহার বক্তব্য, “স্থানীয়রাই হাতি তাড়ানোর চেষ্টা করবেন। আমরা সাহায্য করব। তাতে লাভ না হলে পেশাদার হুলাপার্টি এনে অভিযান চালানো হবে।’’
বেশ কয়েকদিন ধরেই ৩০-৩৫টি হাতির একটি দল শালবনি ব্লকের কালীবাসা জঙ্গলে রয়েছে। সন্ধে হলেই ধান খেতে নেমে পড়ছে তারা। হাতির পায়ের চাপে নষ্ট হচ্ছে ধান। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, হাতির দলটি বৃহস্পতিবার গোদাপিয়াশালের দিকে চলে গিয়েছিল। তখন বিঘের পর বিঘে জমির ফসল নষ্ট করে তারা। পরদিন ফের কালীবাসায় ফিরেছে হাতিগুলি। এক বিঘা জমির ফসল নষ্ট হয়েছে স্থানীয় চাষি মৃণাল কোটালের। তাঁর কথায়, “একবার ধানের ক্ষতি তা-ও মানা যায়। কিন্তু দ্বিতীয় দফাতেও ক্ষতি হওয়ায় দিশেহারা লাগছে। এ ভাবে চলতে থাকলে তো মাঠে ধানই থাকবে না।’’
বৃহস্পতিবার থেকেই কেন্দ্রীয়ভাবে হাতি তাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বন দফতর। অভিযান শুরুও হয়। কিন্তু গ্রামবাসীর বাধায় চাঁদড়া থেকে ৭০টি হাতির দলকে একটুও সরানো যায়নি। বন দফতর সূত্রে খবর, অভিযান চালানোর সময় হাতির দল মাঠে নামবেই। আর তাতে কিছু ফসলের ক্ষতিও হবে। সকলেই চাইছেন, তাঁর জমির ফসল যেন নষ্ট না হয়। তাই বাধা দিচ্ছেন গ্রামবাসী। ডিএফও বলেন, ‘‘বাধার ফলেই হাতির দলকে সরানো যায়নি। বনকর্মী, হুলাপার্টির পরিশ্রম, অর্থ ব্যয় সব বিফলে যাচ্ছে। আলোচনার সময় সকলে জানাচ্ছেন বাধা দেবেন না। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তা হচ্ছে না।’’
কোন কোন এলাকার মানুষ অভিযানে বাধা দিচ্ছেন, তার বিস্তারিত খোঁজ নিচ্ছে বন দফতর। তাঁদের বুঝিয়ে হাতি তাড়ানোর বন্দোবস্ত করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy