Advertisement
০৫ মে ২০২৪
‘এ ওয়ান’ স্টেশন খড়্গপুরে পরিষেবা তিমিরেই

বন্ধ চলমান সিঁড়ি, অনুসন্ধান কেন্দ্রও নেই

মাঝে মধ্যেই বন্ধ হয়ে যায় লিফ্‌ট পরিষেবা। স্টেশনের দক্ষিণে বোগদা ও উত্তরে মালগুদাম চত্বরে নেই গাড়ি ও সাইকেল পার্কিংয়ের ব্যবস্থা। প্রতিটি প্ল্যাটফর্মের মধ্যে যাতায়াতের জন্য নেই সাবওয়ে-ও।

বিকল চলমান সিঁড়ি। হেঁটেই ওঠা-নামা করতে হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র

বিকল চলমান সিঁড়ি। হেঁটেই ওঠা-নামা করতে হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৭ ০৮:৩০
Share: Save:

কখনও বন্ধ থাকে লিফ্‌ট, তো কখনও বিকল চলমান সিঁড়ি! প্ল্যাটফর্মে যত্রতত্র বস্তা পড়ে থাকায় চলাই দায়। অভাব রয়েছে বিশ্রামাগারেরও। সর্বত্র গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থাও নেই। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের ‘এ’-ওয়ান স্টেশন খড়্গপুরে যাত্রী পরিষেবার এমনই হাল।

মাস দু’য়েক আগে খড়্গপুরে এসে এই স্টেশনকে বিশ্বমানের করে গড়ে তোলার কথা ঘোষণা করেছিলেন কেন্দ্রের রেল প্রতিমন্ত্রী রাজেন গোহেন। যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যে স্টেশনে তিনটি লিফ্‌ট, দু’টি এসক্যালেটর বসানো হয়েছে। বোগদায় স্টেশন চত্বরে লাগানো হয়েছে ছাউনি। যদিও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে স্টেশনে যাত্রী পরিষেবার হাল খারাপ।

মাঝে মধ্যেই বন্ধ হয়ে যায় লিফ্‌ট পরিষেবা। স্টেশনের দক্ষিণে বোগদা ও উত্তরে মালগুদাম চত্বরে নেই গাড়ি ও সাইকেল পার্কিংয়ের ব্যবস্থা। প্রতিটি প্ল্যাটফর্মের মধ্যে যাতায়াতের জন্য নেই সাবওয়ে-ও। টিকিট কাউন্টারের বাইরে যাত্রীদের কোনও বিশ্রামাগার নেই। প্ল্যাটফর্মে যাওয়ার রাস্তার দু’ধারে বস্তা, ঝুড়ির স্তুপ। হাঁটাই দায়। টিকিট কাউন্টারেও কুকুরের উৎপাতে দাঁড়়িয়ে থাকা দুষ্কর।

গত ১৭ জুন রেলের যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য কমিটির সদস্য অশোক ত্রিপাঠী ও মনীষা চট্টোপাধ্যায় খড়্গপুর স্টেশন পরিদর্শন করেন। পার্সেল অফিসের অপরিচ্ছন্ন অবস্থা, কারও মৃত্যু হলে মৃতদেহ রাখার আলাদা ঘর না থাকা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন তাঁরা। রেল অনুমোদিত রেস্তোরাঁয় বাতানুকূল যন্ত্র বন্ধ রয়েছে দেখেও তাঁরা ক্ষুব্ধ হন। যাত্রী পরিষেবার মানোন্নয়নে রেল কর্তাদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যান তাঁরা। অভিযোগ, সেই পরামর্শগুলি আর বাস্তবায়িত হয়নি। স্টেশনের পরিষেবা তিমিরেই।

রেলের নিত্যযাত্রী স্কুল শিক্ষক জ্যোতিন্দ্রনাথ দাস বলেন, “স্টেশনে অপরিকল্পিতভাবে অনেক কিছু গড়া হচ্ছে। কিন্তু সেগুলি রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় না।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘মিনিট দু’য়েকের জন্যও স্টেশন চত্বরের কোথাও মোটরসাইকেল পার্কিংয়ের ব্যবস্থা নেই। স্টেশনের মালগুদামের দিকে অবস্থা তো আরও তথৈবচ। রেল আধিকারিকদের উদাসীনতায় খড়্গপুরের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনের এমন হাল।”

স্টেশনের টিকিট কাউন্টারে তথ্য অনুসন্ধানের ব্যবস্থা না থাকায় বিপাকে পড়েন যাত্রীরা। কোন ট্রেন কত দেরিতে চলছে, কোন ট্রেন কোথায় রয়েছে, বাধ্য হয়ে যাত্রীরা টিকিট কাউন্টারে গিয়েই এই সব তথ্য জানতে চান। তথ্য দেওয়ার পরিবর্তে টিকিট কাউন্টারের লোকেরা যাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ।

মালগুদামের দিকে থাকা টিকিট কাউন্টারে গিয়ে কিছুদিন আগেই নাজেহাল হন খড়্গপুরের বাসিন্দা শান্তুনু দাস। তিনি বলেন, “স্টিল এক্সপ্রেস কোথায় রয়েছে, তা জানতে কয়েকদিন আগে মালগুদামের দিকে টিকিট কাউন্টারে যাই। কাউন্টারে থাকা ব্যক্তি বলেন, তাঁর জানা নেই। বাধ্য হয়ে এক্সপ্রেসের টিকিট কেটে প্ল্যাটফর্মে গিয়ে দেখি ট্রেন বেরিয়ে গিয়েছে।”

স্টেশনে যাত্রী পরিষেবার এমন হাল কেন?

রেলের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার কুলদীপ তিওয়ারি বলেন, “আমি ছুটিতে রয়েছি। কোথাও সমস্যা থাকলে আধিকারিকদের পদক্ষেপ করার কথা জানিয়ে দিচ্ছি। আমিও সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE