Advertisement
০৪ মে ২০২৪

রাজনীতির হাওয়াবদলে জিলিপির প্যাঁচে বদল লক্ষ্মী-মেলায়

লক্ষ্মীপুজোর জিলিপিতেও রাজনীতির প্যাঁচ।

সিন্টু সাহা এবং রাজেশ মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র

সিন্টু সাহা এবং রাজেশ মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র

কিংশুক গুপ্ত
হাড়দা শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:৩৬
Share: Save:

লক্ষ্মীপুজোর জিলিপিতেও রাজনীতির প্যাঁচ।

বিনপুরের হাড়দায় লক্ষ্মীপুজো উপলক্ষে মেলার আয়োজন করা হয়। মেলার প্রধান আকর্ষণ জিলিপি। মেলার পাঁচদিন একমাত্র একটি দোকানেই জিলিপি বিক্রি হয়। প্রতি বছর নিলামের মাধ্যমে ঠিক হয় কে দোকান দেবেন। এতদিন নিলামে সর্বোচ্চ দর দিয়ে বরাত পেতেন হাড়দা অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি সিন্টু সাহার পরিজন কিংবা অনুগামীরা। এ বার অবশ্য রাজনৈতিক পট-বদলের প্রভাব পড়েছে লক্ষ্মীপুজোতেও। মেলায় জিলিপি দেওয়ার বরাত পেয়েছেন বিজেপি নেতা রাজেশ মণ্ডল।

হাড়দা গ্রামের বাসিন্দা রাজেশের সঙ্গে সিন্টুর অহি-নকুল সম্পর্ক। আগে রাজেশ ছিলেন তৃণমূলের সদস্য। তাঁর স্ত্রী ঝুমা ছিলেন বিগত হাড়দা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য। সিন্টুর উপর একাধিকবার হামলা চালানোর অভিযোগে গ্রেফতার হন রাজেশ। পরে জামিনে ছাড়া পেয়ে যান। রাজশ ও ঝুমা দু’জনেই পঞ্চায়েত ভোটের আগেই বিজেপিতে যোগ দেন। এবার পঞ্চায়েত ভোটে হাড়দা গ্রাম পঞ্চায়েতটির সব ক’টি আসন ক্ষমতা দখল করে নিয়েছে বিজেপি। রাজেশের স্ত্রী ঝুমা বিজেপি-র পঞ্চায়েত প্রধান হয়েছেন। রাজেশ নিজে বেলপাহাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। পাশাপাশি বিজেপির ঝাড়গ্রাম জেলা সম্পাদক পদেও রয়েছেন রাজেশ। ফলে পুজো ও মেলার নিয়ন্ত্রণের রাশ এবার রাজেশের হাতে। জিলিপির দোকান দেওয়ার জন্য নিলামে সর্বোচ্চ ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা দর দিয়েছিলেন রাজেশ। সিন্টু ঘনিষ্ঠেরা নিলামে অংশ নিলেও দরে রাজেশের সঙ্গে এঁটে উঠতে পারেননি। অথচ গতবারই নিলাম ১ লক্ষ ১২ হাজার টাকার দরে জিলিপি দোকান দেওয়ার বরাত পেয়েছিলেন সিন্টু।

সিন্টু বনাম রাজেশের লড়াই থেকে বাদ থাকল না লক্ষ্মীপুজোও। রাজেশ বলছেন, “এলাকায় তৃণমূলের অস্তিত্ব নেই। মানুষ ওদের প্রত্যাখ্যান করেছে। তবে পুজোতে সকলেই স্বাগত। সিন্টু ঝামেলার চেষ্টা করতে পারে। আমরাও তৈরি আছি।”

আর সিন্টুর কথায়, ‘‘পুজো কমিটির সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই। আমি অসুস্থতার জন্য চেন্নাইয়ে ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিলাম। আমার অনুপস্থিতির সুযোগে রাজেশ দোকানের বরাত পেয়েছে।”

লক্ষ্মীর সঙ্গে সরস্বতীও পূজিত হন হাড়দায়। লক্ষ্মীর নৈবেদ্যে জিলিপি দেওয়া হয় না। তবু স্থানীয় বিশ্বাসের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এই জিলিপি। যাতে নতুন মাত্রা জুড়েছে রাজনীতি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fair Politics Festival
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE