Advertisement
E-Paper

ফুঁসছে কেলেঘাই, বন্যার আতঙ্কে সবং, পটাশপুর

ঝাড়গ্রাম জেলা থেকে উৎপত্তি হয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়, সবং এবং পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর, ভগবানপুরের বিস্তীর্ন এলাকা দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে কেলেঘাই নদী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০২০ ০১:৩০
কেলেঘাইয়ের জলে ডুবেছে রাস্তা। পটাশপুর-ডেবরা সড়কে কনকপুরের কাছে। বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র।

কেলেঘাইয়ের জলে ডুবেছে রাস্তা। পটাশপুর-ডেবরা সড়কে কনকপুরের কাছে। বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র।

ফুঁসছে কেলেঘাই। নদী সংস্কারের পরেও নিম্নচাপের ভারী বৃষ্টির জেরে বন্যার আতঙ্কে এলাকার মানুষ। নদীর জলে বৃহস্পতিবার ডুবেছে পাকা সড়ক। জলের চাপে বাঁধ ভেঙে ঘরবাড়ি ভাসার আতঙ্কে রাতের ঘুম উড়েছে নদীর তীরবর্তী এলাকার মানুষের।

ঝাড়গ্রাম জেলা থেকে উৎপত্তি হয়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়, সবং এবং পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর, ভগবানপুরের বিস্তীর্ন এলাকা দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে কেলেঘাই নদী। নাব্যতা কমে যাওয়ার কারণে আগে ফি বর্ষায় বন্যা দেখা দিত পটাশপুরে। তাই কেলেঘাই পটাশপুরের মানুষের কাছে দুঃখের নদী হিসেবে পরিচিত। সবং, পটাশপুর ও ভগবানপুরে নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের জীবন জীবিকা নির্ভরশীল কেলেঘাইকে ঘিরেই। নদীপথই যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। অপরদিকে পশ্চিমের বাগুই খাল পটাশপুরের, বিশ্বনাথপুর, তাপিন্দা, গোকুলপুর-টাকাবেড়িয়া সহ একাধিক মৌজায় উপর দিয়ে বয়ে গিয়ে কেলেঘাইতে মিশেছে। ভগবানপুর ও সবং পেরিয়ে কংসাবতী নদীতে মিশেছে কেলেঘাই।

স্থানীয় সূত্রে খবর, বেশ কয়েক বছর আগে বর্ষা হলেই নদী বাঁধ ভেঙে পটাশপুর-১ ব্লকের তাপিন্দা, আড়গোড়া, কনকপুর, অযোধ্যাপুর, গোকুলপুর, অমরপুর, নৈপুর, আয়মাবড়বড়িয়া-সহ গোপালপুর, পাথরঘাটা, কুঞ্জবেড়িয়া, মাধবচক, সেলমাবাদ, তালাডিহা-সহ বিস্তীর্ণ এসাকা প্লাবিত হত। ২০০৮ সালে নদীবাঁধ ভেঙে বন্যায় প্রচুর ঘরবাড়ি ও জীবনহানির ঘটনা ঘটেছিল। পরে কেন্দ্রীয় সরকারের গঙ্গা অ্যকশন প্লানে (কেকেবি) কেলেঘাই-কপালেশ্বরী ও বাগুই খাল সংস্কারের পরিকল্পনা হয়। ২০১১ সালে দেহাটি থেকে লাঙলকাটা পর্যন্ত ২১ কিলোমিটার নদী সংস্কার হয়। যদিও সংস্কারের পদ্ধতি নিয়ে নানা অভিযোগ উঠেছিল। প্রথম পর্যায়ে নদী সংস্কারের কাজ হলেও দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ অসম্পূর্ণই থেকে গিয়েছে। আর তাতেই নিম্নচাপের ফলে টানা বৃষ্টিতে ফের বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বুধবার রাত থেকে বেড়েছে নদীর জলস্তর। ভগবানপুরে একাধিক জায়গায় নদী বাঁধ পরিদর্শন করেছেন ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা। নদী সংলগ্ন গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে দ্রুত বাঁধ মেরামতির জন্য বোল্ডার, পাথর, মাটির বস্তা সহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী মজুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কেলেঘাই নদীর জলে পটাশপুর-ডেবরা সড়কে কনকপুরে কাছে রাস্তা ডুবেছে। ২০০৮ সালে বন্যা ভয়াবহতা দেখেছিলেন স্থানীয় পটাশপুরের বাসিন্দা পরিবেশ প্রেমী সোমনাথ দাস অধিকারী। তাঁর কথায়, ‘‘নদী সংস্কারের কাজ অসম্পূর্ণ থাকায় বাড়তি জল বেরোতে পারছে না। ফলে পটাশপুর এলাকায় কেলেঘাই নদীর জল ব্যারাজের মতো জমা হচ্ছে। ২০০৮ সালের বন্যায় এই সব এলাকায় প্রচুর ক্ষতি হয়েছিল। কেলেঘাই যে ভাবে ফুঁসছে তাতে ফের এখানে বন্যার আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।’’

কাঁথি সেচ দফতরের এক আধিকারিক জানান, কেলেঘাই নদীর সামগ্রিক পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। চব্বিশ ঘণ্টা নদী বাঁধের উপর নজর রেখেছেন সেচ দফতরের কর্মীরা। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

Keleghai Sabang Patashpur Flood
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy