Advertisement
০২ মে ২০২৪

জল নামতেই হাঁক, কোথায় পুরসভা

প্লাবিত ঘাটাল শহরে একটু একটু করে জল নামতে শুরু করার পর এমনই অভিযোগ তুললেন শহরবাসী। তাঁদের অভিযোগ, এই সময় জলবাহিত নানা রোগের প্রকোপ বাড়ে।

 বর্জ্য: নেমে গিয়েছে বন্যার জল। কিন্তু নোংরা সাফাই  না হওয়ায় ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। বৃহস্পতিবার ঘাটালের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের রাস্তার ছবি। —কৌশিক সাঁতরা

বর্জ্য: নেমে গিয়েছে বন্যার জল। কিন্তু নোংরা সাফাই না হওয়ায় ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। বৃহস্পতিবার ঘাটালের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের রাস্তার ছবি। —কৌশিক সাঁতরা

অভিজিৎ চক্রবর্তী
ঘাটাল শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৭ ০২:২৯
Share: Save:

যখন পুরবাসীর পাশে থাকার দারকার, ঠিক তখনই দেখা মিলল না ঘাটাল পুরসভার।

প্লাবিত ঘাটাল শহরে একটু একটু করে জল নামতে শুরু করার পর এমনই অভিযোগ তুললেন শহরবাসী। তাঁদের অভিযোগ, এই সময় জলবাহিত নানা রোগের প্রকোপ বাড়ে। যুদ্ধকালীন তৎপতরতায় চুন ছড়ানো সহ নানা জীবাণু নাশক স্প্রে করা জরুরি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত পুরসভার তরফে কোনও তৎপরতা নজরে পড়েনি।

বৃহস্পতিবার ঘাটাল শহরের একাধিক মহল্লার রাস্তা ও বাড়ি থেকে জল সরলেও বেশ কিছু এলাকায় এখনও এক হাঁটু বা তারও বেশি জল রয়েছে। জল কমায় ধীরে ধারে মুখ তুলছে শহরের পানীয় জল সরবরাহের জন্য বসানো ট্যাপ কলগুলি। জল সরার সঙ্গে সঙ্গে জমে থাকা নোংরা আবর্জনার পচা দুর্গন্ধে শহরবাসী অতিষ্ঠ। তা নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন তাঁরা। শহরের কুশপাতা, কোন্নগর প্রভৃতি এলাকা থেকে জল নেমে গেলেও সেখানে রাস্তা থেকে আবর্জনা পরিষ্কার, কীটনাশক ছড়ানোর কাজই শুরু করেনি বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। বাসিন্দাদের বক্তব্য, পুরসভার উচিত ছিল এর মধ্যে বিশেষ নজরদারি টিম তৈরি করে রাখা। যাঁরা জল কমার সঙ্গে সঙ্গে চুন এবং ব্লিচিং পাউডার ছড়ানোর কাজ করবেন।

শুধু শহর পরিষ্কারই নয়, পানীয় জল সরবরাহ, হ্যালোজেন ট্যাবলেট বিলি এবং বাড়ির জন্য চুন, ব্লিচিং পাউডার বিলির ক্ষেত্রেও একই ছবি। এখনও ঘাটালে বহু দোকান বন্ধ। জলের তলায় বহু ওষুধের দোকান। ফলে টাকা থাকলেও চুন এবং ব্লিচিং পাউডার কেনা সম্ভব হচ্ছে না বাসিন্দাদের। অথচ, পুরসভায় বস্তা বস্তা চুন-সহ প্রয়োজনীয় জিনিস মজুত থাকা সত্ত্বেও তা বিলি করা হচ্ছে না বলে তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। পানীয় জল সরবরাহ নিয়েও অভিযোগ তুলেছেন পুরবাসী। অভিযোগ, জল ভর্তি ট্যাঙ্কার পাঠানো হচ্ছে। জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে না পুর এলাকার ট্যাপকল, নলকূপগুলি। ফলে না চাইলেও অনেকে ঘোলা জলই পানীয় হিসাবে ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন। যার ফলে জলবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়তে পারে বলে অনেকের আশঙ্কা। যদিও ঘাটাল পুরসভার চেয়ারম্যান বিভাস ঘোষ বলেন, “জোরকদমে শহরের অলিগলি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কাজ চলছে। পানীয় জলের সমস্যাও দ্রুত মেটানোর চেষ্টা হচ্ছে।”

ইতিমধ্যেই ঘাটাল-চন্দ্রকোনা সড়ক এবং মেদিনীপুর সড়ক থেকে বাস চলাচল শুরু হয়েছে। তবে ঘাটাল-পাঁশকুড়া সড়কে এখনও জল। যদিও আজ, শুক্রবার থেকে ওই সড়কে বাস চলাচল শুরু হবে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।

জল আর না বাড়লেও ঘাটাল হাসপাতাল, বেশ কিছু এটিএমে এখনও জল। টেলিফোন এক্সচেঞ্জেও এখনও হাঁটুজল। ফলে বিএসএলের নেট পরিষেবাও ব্যাহত। বিকল ল্যান্ডলাইনও। ঘাটাল মুখ্য ডাকঘর সহ অন্য ব্যাঙ্কগুলিতে নেট পরিষেবা না থাকায় গ্রাহকেরা দুর্ভোগে পড়েছেন। তবে কুশপাতা এক্সচেঞ্জ থেকে পরিষেবা চালু করেছে টেলিফোন দফতর। তবে ঘাটাল ব্লকের মনোহরপুর-১ ও ২ পঞ্চায়েত এবং দাসপুর-১ ও ২ ব্লকের ১৫টি পঞ্চায়েত এখনও জলের তলায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Flood Heavy Rain Garbage
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE