Advertisement
E-Paper

গতি বাড়াতে চাই উড়ালপুল

হকার ও বেআইনি দখলদারদের দাপটে ক্রমশ সঙ্কীর্ণ হচ্ছে রাস্তা। একে সরু রাস্তা, তার উপর রাস্তাতেই দাঁড়িয়ে থাকে গাড়ি, মোটরবাইক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৬ ০৩:২২
রোজই এমন ছবি মেদিনীপুরের স্কুল বাজারে। —নিজস্ব চিত্র

রোজই এমন ছবি মেদিনীপুরের স্কুল বাজারে। —নিজস্ব চিত্র

যান়জটের ফাঁসে থমকে শহর। চিন্তা বাড়ছে পুরসভার।

হকার ও বেআইনি দখলদারদের দাপটে ক্রমশ সঙ্কীর্ণ হচ্ছে রাস্তা। একে সরু রাস্তা, তার flyউপর রাস্তাতেই দাঁড়িয়ে থাকে গাড়ি, মোটরবাইক। সরু রাস্তা দিয়ে গাড়ি চলে ধীর গতিতে। শহরের গতি ফেরাতে রাস্তার ধার থেকে বেআইনি দখলদারদের সরানো প্রয়োজন। বিরোধীদের দাবি, শহরের গতি বাড়াতে উড়ালপুল তৈরির বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করুক পুরসভা।

কংগ্রেস কাউন্সিলর শম্ভুনাথ চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘এখন থেকেই পুর-কর্তৃপক্ষের উড়ালপুল নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করা উচিত। না হলে ভবিষ্যতে ভয়ঙ্কর বিপদে পড়তে হবে শহরকে।” তাঁর যুক্তি, বটতলাচক থেকে স্কুলবাজার হয়ে নতুনবাজার পর্যন্ত ও গোলকুয়াচক থেকে ধর্মা পর্যন্ত উড়ালপুল তৈরির পরিকল্পনা না নিলে কয়েক বছরের মধ্যেই যানজটে নাভিশ্বাস উঠবে শহরবাসীর।

যদিও এ বিষয়ে মেদিনীপুরের পুরপ্রধান প্রণব বসুর বক্তব্য, “উড়ালপুল তৈরির পরিস্থিতি তৈরি হলে নিশ্চয়ই ভাবনাচিন্তা করতে হবে। এখনও সেই পরিস্থিতি হয়নি। হকারদের নিয়েও পরিকল্পনা নেই।”

পশ্চিম মেদিনীপুরের সদর শহর মেদিনীপুর। নানা কাজে প্রতিদিন বহু লোক শহরে আসেন। বছর কয়েক আগেও শহরে হকারদের দাপট কম ছিল। শিশু উদ্যান থেকে এলআইসি চক হয়ে বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত রাস্তা, পঞ্চুরচক ও নান্নুরচক এলাকায় আগে হকার কম ছিল। হাসপাতাল রোডের ধারেও আগে স্থায়ী দোকান ছিল না। শীতের মরসুমে রাস্তার ধারে শীতবস্ত্রের পসরা। মাস দুয়েকের ব্যবসা শেষে ফের রাস্তা খালি হয়ে যেত। আর বড়জোর এদিক সেদিকে কোথাও একটা পানের গুমটি, চায়ের দোকান। তখন বটতলাচক হয়ে স্কুলবাজারের উপর দিয়ে বাস যেত।

আর এখন? এই সব রাস্তায় ছোট গাড়ি ঢুকলেই যানজট। জট মুক্ত হতে ন্যূনতম আধ ঘণ্টা লেগে যায়। ফুটপাথ বেদখলের জন্য শুধু হকাররাই দায়ী, তা নয়। রাস্তার ধারের অনেক বড় দোকানও তাদের সামগ্রী রাস্তার উপর রাখছে। ক্রেতারা রাস্তার উপরেই মোটরবাইক, সাইকেল রেখে দোকানে ঢুকছেন। কিছুদিন আগেও মেদিনীপুর কলেজ ও কলেজিয়েট স্কুলের সামনের দু’দিকের রাস্তা ফাঁকাই থাকত। এখন বিকেলের পর থেকে রাস্তার দু’দিকে ফাস্টফুডের দোকানে পথ চলা দায়। আর এলআইসি মোড়ে তো নিত্য যানজট। রয়েছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা।

শহরের বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, ভোট রাজনীতির কারণেই শহরের হকার সমস্যা নিয়ে কোনও দলের নেতাই কিছু বলতে চান না। রাজনৈতিক দলগুলিও ফুটপাথ দখল করে পার্টি অফিস, ক্লাব গড়ে তুলছে। পুনর্বাসন দিলে হকাররাও শহরের গতি বাড়াতে ফুটপাথ ছাড়তে রাজি। হকার ইউনিয়নের সম্পাদক শঙ্কর দাসের কথায়, “উপযুক্ত জায়গা দেখে আমাদের পুনর্বাসন দিলেই আমরা ফুটপাথ ছেড়ে দিতে রাজি। পুরসভা এ ব্যাপারে আশ্বাসও দিয়েছিল। কিন্তু বাস্তবে তা কার্যকরী করেনি।’’ তিনি বলেন, ‘‘আমরাও চাই শহর সুন্দর হোক, শহরের গতি বাড়ুক। কিন্তু গরিব মানুষদেরও তো বেঁচে থাকারও অধিকার রয়েছে। পুনর্বাসন ছাড়া হকার উচ্ছেদ করলে মেনে নেব না।”

হকারদের পুনর্বাসনের জন্য পুরসভা দু’টি জায়গা দেখিয়ে গিয়েছে। একটি পোলট্রি পুকুর পাড়, অন্যটি ডেভিস ট্যাঙ্ক। পোলট্রি পুকুর সংস্কার করার কাজ করেছে পুরসভা। সেখানে স্থানীয় বাসিন্দাদের বিনোদনের ব্যবস্থা করা হবে। ফলে সেখানে হকারদের পুনর্বাসন হচ্ছে না। যদিও শহরের একপ্রান্তে পোলট্রি পুকুর এলাকায় হকারেরাও যেতে রাজি ছিলেন না। বাকি রইল ডেভিস ট্যাঙ্ক। যেখানে অবশ্য হকারদের যেতে আপত্তি নেই। কিন্তু ওই জমিতে ইতিমধ্যেই ইন্ডোর স্টেডিয়াম তৈরি করতে চেয়ে প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছে জেলা ক্রীড়া সংস্থা। ফলে হকার সমস্যা আদৌ মিটবে কিনা বা কবে মিটবে তা নিয়ে সংশয় থেকেই যায়।

Municipality Flyover school bazar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy