Advertisement
০৩ মে ২০২৪

অসুস্থ চাচা হাসপাতালে

গত এক সপ্তাহ ধরে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন ৯৩ বছরের চাচা। খড়্গপুরে চিকিৎসার সুবন্দোবস্ত না হওয়ায় শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের মাধ্যমে সে কথা জেনে তৎপর হন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিন তাঁর নির্দেশেই চাচাকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে কংগ্রেসের দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।

অসুস্থ: হাসপাতালের পথে চাচা।

অসুস্থ: হাসপাতালের পথে চাচা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৭ ০৮:০০
Share: Save:

অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেন কংগ্রেসের প্রাক্তন বিধায়ক তথা রেলশহরের ‘চাচা’ জ্ঞানসিংহ সোহন পাল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সোমবার দুপুরে তাঁকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। এ দিন শিলিগুড়িতে মমতা বলেন, ‘‘উনি একজন প্রবীণ রাজনীতিক। খবর পাওয়ামাত্র যতটা সম্ভব করেছি।’’

গত এক সপ্তাহ ধরে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন ৯৩ বছরের চাচা। খড়্গপুরে চিকিৎসার সুবন্দোবস্ত না হওয়ায় শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের মাধ্যমে সে কথা জেনে তৎপর হন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিন তাঁর নির্দেশেই চাচাকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে কংগ্রেসের দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। চাচার সঙ্গে কলকাতায় গিয়েছেন তাঁর বড় নাতি হরমিত সিংহ ও খড়্গপুরের পুরপ্রধান তৃণমূলের প্রদীপ সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন কংগ্রেসের খড়্গপুর শহর সভাপতি অমল দাস।

রেলশহরে চাচার জনপ্রিয়তা প্রশ্নাতীত। ইন্দিরা গাঁধীর স্নেহভাজন হিসেবে ১৯৬২ সালে প্রথম তিনি খড়্গপুর কেন্দ্র থেকে জিতে বিধায়ক হয়েছিলেন। তার পরে ১৯৬৭ সালে হারলেও ফের ১৯৭১-এ জয়ী হন। সে বার তিনি কারামন্ত্রী হয়েছিলেন। ১৯৭২ সালে পরিবহণ দফতরের বাড়তি দায়িত্বও বর্তায় তাঁর ঘাড়ে। ১৯৭৭ সালে বাম প্রার্থীর কাছে ফের হেরে যান তিনি। কিন্তু ১৯৮২ থেকে ২০১১ পর্যন্ত চাচা জয় কেউ আটকাতে পারেননি। এই সময়ের মধ্যে ২০০১, ২০০৬ ও ২০১১ সালে প্রোটেম স্পিকারের দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। গত বিধানসভা নির্বাচনে ৯২ বছর বয়সেও দশবারের এই বিধায়ককেই প্রার্থী করেছিল কংগ্রেস। কিন্তু বিজেপির দিলীপ ঘোষের কাছে তাঁকে হার মানতে হয়। তবে জেতার পরে চাচাকে প্রণাম করে গিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপবাবু।

অসুস্থতার জন্য অবশ্য সম্প্রতি চাচার রাজনৈতিক সক্রিয়তা কমে এসেছিল। গোলবাজারে নিজের দলীয় কার্যালয়ে যাওয়াও ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। গত কয়েকদিনে তাঁর অসুস্থতা বেড়েছিল। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রস্টেটের সমস্যায় ভুগছিলেন চাচা। কয়েক বছর আগে অস্ত্রোপচারও হয়েছিল। কিন্তু দিন কয়েক ধরে পেটে ব্যথা, কোমর-পা ফুলে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিয়েছিল। তৃণমূলের পুরপ্রধান প্রদীপবাবু বলেন, “আমি গত শনিবার চাচার সঙ্গে দেখা করি। তারপর মুখ্যমন্ত্রীর আপ্তসহায়ক ও জেলা পুলিশ সুপারকে সব জানাই জানিয়েছিলাম। তার পরেই মুখ্যমন্ত্রী দ্রুত চাচাকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন।” কংগ্রেসের খড়্গপুর শহর সভাপতি অমলববাবুও বলেন, “এখানকার তৃণমূল নেতাদের মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চাচা অসুস্থ বলে খবর গিয়েছিল। তাই মুখ্যমন্ত্রী চাচাকে কলকাতায় পাঠানোর নির্দেশ দেন।”

এ দিন কলকাতায় যাওয়ার আগে চাচাকে দেখতে ভিড় জমিয়েছিলেন সিপিআই নেতা অসিত বসাক, তৃণমূল নেতা নারায়ণ পড়িয়া-সহ বহু মানুষ। চাচাকে অসুস্থ দেখাচ্ছিল। মাথায় ছিল না চিরচেনা বড় পাগড়ি। বরাবরের মিতবাক মানুষটি শুধু বলছিলেন, “পেটে ভীষণ ব্যথা।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE