Advertisement
২৯ মে ২০২৪
ক্ষুদিরাম স্মরণে সরকারি প্রকল্পের ফর্ম বিলি

আয়োজনে হাতবদল 

রাজ্যের ক্ষমতায় যখন যে থাকে ‘শহিদ ক্ষুদিরাম বসু স্মৃতিরক্ষা সমিতি’তে তাদের প্রভাব দেখা যায়। বাম আমলে সমিতিতে থাকতেন সিপিএম ঘনিষ্ঠরা। তৃণমূল আমলে সমিতিতে আছেন তৃণমূল ঘনিষ্ঠেরা। এখন ওই সমিতিতে রয়েছেন প্রবীণ তৃণমূল নেতা চিত্ত গড়াই। 

স্মরণ অনুষ্ঠানে চেক বিলি। —নিজস্ব চিত্র

স্মরণ অনুষ্ঠানে চেক বিলি। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কেশপুর শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৯ ০১:৩৮
Share: Save:

মনীষী স্মরণে পরিবর্তন।

‘শহিদ ক্ষুদিরাম বসু স্মৃতিরক্ষা সমিতি’। রাজনৈতিক দল প্রভাবিত এই সংগঠনই এতদিন ক্ষুদিরামের জন্মভিটে কেশপুরের মোহবনিতে তাঁর আত্মবলিদান দিবস পালন করত। রবিবারই প্রথম তা আয়োজন করল ব্লক প্রশাসন। সেখানে উপস্থিত হয়ে মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী আক্ষেপ করলেন, ‘‘আমার খুব খারাপ লাগে, যেখানে ক্ষুদিরাম বসু জন্মগ্রহণ করেছেন, পাশে বিদ্যাসাগরের জন্মস্থান ঘাটালের বীরসিংহ, সেখানে কেন দখলের রাজনীতি হবে?’’

এবার আরও জিনিস প্রথমবার হয়েছে। তা হল, অনুষ্ঠান উপলক্ষে এখানে কৃষকবন্ধু, কন্যাশ্রী সহ বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে নাম নথিভুক্তির শিবির হল। স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন এই মঞ্চ থেকে যে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করা যাবে জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে কয়েকদিন ধরে তা এলাকায় প্রচারও হয়েছিল।

রাজ্যের ক্ষমতায় যখন যে থাকে ‘শহিদ ক্ষুদিরাম বসু স্মৃতিরক্ষা সমিতি’তে তাদের প্রভাব দেখা যায়। বাম আমলে সমিতিতে থাকতেন সিপিএম ঘনিষ্ঠরা। তৃণমূল আমলে সমিতিতে আছেন তৃণমূল ঘনিষ্ঠেরা। এখন ওই সমিতিতে রয়েছেন প্রবীণ তৃণমূল নেতা চিত্ত গড়াই।

সমিতির দায়িত্ব কেন কাঁধে তুলে নিল প্রশাসন? কেশপুরের বিডিও দীপক ঘোষ বলেন, ‘‘এ বার সরকারি অনুষ্ঠান হয়েছে। সমিতি সহযোগিতা করেছে।’’ চিত্তও বলেছেন, ‘‘প্রশাসনের উদ্যোগে অনুষ্ঠানটি হয়েছে। তবে আমরা প্রশাসনকে সব রকম সহযোগিতাই করেছি। আগাগোড়া আমরা ছিলামই।’’ মনীষী স্মরণে পরিবর্তনের সূত্র রয়েছে খোদ মন্ত্রীর আক্ষেপে। মোহবনি শীর্ষা অঞ্চলের অন্তর্গত। কেশপুরের এই এলাকায় এখন প্রভাব বেড়েছে বিজেপির। লোকসভা ভোটের পরে তৃণমূলের একের পর এক কার্যালয় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল এখানে। মন্ত্রী আসার আগে শনিবারই সেগুলি খোলা হয়েছে। এ দিন শুভেন্দুকেও বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘আমি মেদিনীপুরের সন্তান হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে জনপ্রতিনিধি। কাউন্সিলর, এমপি, এমএলএ। কেন শুনতে হবে, ‘আমি বাড়ি ছাড়া’, ‘আমি হাসপাতালে’, কেন পুলিশকে গিয়ে এলাকায় শান্তি রক্ষা করতে হবে?’’

গত ৯ অগস্ট ভারত ছাড়ো আন্দোলনের স্মৃতিতে মেদিনীপুর শহরে সভা করেছিলেন শুভেন্দু। সে দিন সামান্য মালাও জোটেনি শহরের ক্ষুদিরাম মূর্তির। কাটা হয়নি চারপাশের আগাছা। এদিন অবশ্য শুভেন্দু বলেছেন, ‘‘আমি মনে করি, ক্ষুদিরামের জন্মভিটেটি হেরিটেজ। এটি আমাদের গর্বের, এটি আমাদের ভবিষ্যৎ।’’ এই হেরিটেজের জন্য তিনি এতদিন কী কী করেছেন তা সবিস্তারে উল্লেখ করেছেন মন্ত্রী। শুনিয়েছেন ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা। বলেছেন, ‘‘স্মৃতিরক্ষা সমিতিকে জেলাশাসকের মাধ্যমে আমাকে অডিটোরিয়ামের স্কিম পাঠাতে বলব। আমি এইচআরবিসি থেকে ২৫ লক্ষ টাকা এখুনি দিয়ে দেব। পরে পরে আরও টাকা সংগ্রহ আমরা সকলে মিলে করে দিতে পারব।’’ কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সভানেত্রী অন্তরা ভট্টাচার্য। তাঁর মন্তব্য, ‘‘ক্ষুদিরাম স্মরণের মঞ্চকে কারা রাজনীতির মঞ্চে পরিণত করল তা এলাকার মানুষ দেখলেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Suvendu Adhikari Khudiram
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE