Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
সঙ্কটে শহর: ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া

জঞ্জাল খালে, পাঁশকুড়ায় দাপট মশার

প্রতিটি পুরসভাকেই জানুয়ারি মাস থেকে ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া রোধে অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছিল নবান্ন। কিন্তু পাঁশকুড়া পুরসভার সে উদ্যোগ কোথায়? শহরের প্রায় মাঝখান দিয়ে যাওয়া সুরার খাল ভরেছে আবর্জনায়।

আতুঁড়ঘর: খাল না জঙ্গল বোঝা মুশকিল। পাঁশকুড়ার আবর্জনা পড়ে এই সুরার খালে। ফলে বাড়ছে মশা-মাছির উপদ্রব। নিজস্ব চিত্র

আতুঁড়ঘর: খাল না জঙ্গল বোঝা মুশকিল। পাঁশকুড়ার আবর্জনা পড়ে এই সুরার খালে। ফলে বাড়ছে মশা-মাছির উপদ্রব। নিজস্ব চিত্র

আনন্দ মণ্ডল
পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৭ ০০:২৮
Share: Save:

প্রতিটি পুরসভাকেই জানুয়ারি মাস থেকে ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া রোধে অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছিল নবান্ন। কিন্তু পাঁশকুড়া পুরসভার সে উদ্যোগ কোথায়? শহরের প্রায় মাঝখান দিয়ে যাওয়া সুরার খাল ভরেছে আবর্জনায়। কচুরিপানায় ঢাকা ওই নিকাশি নালার মশা-মাছির উপদ্রবে নাজেহাল বাসিন্দারা। একই দশা শহরের আরেক খাল— মেদিনীপুর ক্যানেলেরও।

গত বছর বর্ষার মরসুমে এ শহরের বেশ কিছু মানুষ জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন। ডেঙ্গিতেও আক্রান্ত হন একজন। তার পর এ বার মশা-মাছি রুখতে আগে-ভাগে পুরসভার উদ্যোগ চোখে পড়ছে না বলে অভিযোগ তুলেছেন অনেকে। দাবি, পুরসভার পক্ষ থেকে মাসে একবার মশা মারার তেল স্প্রে করা হয়। ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো হয় মাঝেমধ্যে। মশা-মাছির উপদ্রব ঠেকাতে তাই ঘরের জানলায় তারের জাল টাঙাতে হয়।

পুরপ্রধান জাকিউর রহমান খান ওই অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, ‘‘নিয়মিত নিকাশি নালা পরিষ্কার করা হয়। মশা মারার তেল স্প্রে করা হয়। ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গি, এনসেফ্যালাইটিস রুখতেও আগাম প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। পুরসভার ৬টি স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই জ্বরে আক্রান্তদের রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে।’’

কোথায় কোথায় কী ধরনের মশা বংশবিস্তার করছে তা না জানতে পারলে মশা দমন সম্ভব নয়, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক বহুদিন থেকেই এ কথা পুরসভাগুলিকে বলে আসছে। কিন্তু কলকাতা পুরসভা বাদে রাজ্যের আর কোনও পুরসভাতেই পতঙ্গবিদ নেই। পুরপ্রধান জাকিউর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক। তিনি দাবি করেন, ‘‘আমি নিজে কিছুটা জানি। এ ছাড়া একটি নামী সংস্থার বিশেষজ্ঞদের থেকে পরামর্শ নেওয়া হয়। এ শহরে অ্যানোফিলিস, কিউলেক্স মশা দেখা যায়। তবে, মশা দমনে নিয়মিত ব্যবস্থা নেওয়ার ফলে মশার দাপট নেই।’’

কিন্তু শহরের বহু মানুষই এ নিয়ে ভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন। তাঁদের মতে, নিকাশি ব্যবস্থার উন্নয়নে সে ভাবে নজর দেওয়া হয়নি। সুরা খালের বেশিরভাগ অংশ এখন কচুরিপানা, আগাছা, আবর্জনায় চাপা পড়েছে। মেদিনীপুর ক্যানেলের মাধ্যমে পুরসভার ১, ২, ৪, ৫ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার বর্ষার জল নিকাশি হয়। কিন্তু এই ক্যানেলের দু’পাশেই প্রচুর ঘরবাড়ি গজিয়ে ওঠার পাশাপাশি জঙ্গলে ঢেকে যাওয়ায় নিকাশির সমস্যা হয়। পাঁশকুড়া পুর নাগরিক কমিটির যুগ্ম সম্পাদক সুনীল জানা বলেন, ‘‘খাল দু’টির পূর্ণাঙ্গ ভাবে সংস্কার হলে জল নিকাশির সুরাহা হতো।’’

পুরপ্রধান জানান, দু’টি ক্যানেলই সেচ দফতরের। সুরার ক্যানেলটি সংস্কার করতে সম্প্রতি হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ অর্থ বরাদ্দ করেছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। মেদিনীপুর ক্যানেল সংস্কারের জন্য সেচ দফতরকে বলা হয়েছে।

কিন্তু বর্ষার আগে সেই সংস্কার শেষ হবে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে অনেকেরই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Environment Garbage Canal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE