Advertisement
E-Paper

উচ্চ মাধ্যমিকেও পাশের হারে এগিয়ে মেয়েরা

মাধ্যমিকের মতো উচ্চ-মাধ্যমিকেও পাশের হারে এ বার রাজ্যে শীর্ষস্থান দখল করেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ছাত্র-ছাত্রীরা। তবে জেলায় মাধ্যমিকের চেয়ে উচ্চ-মাধ্যমিকের ফলাফলের পার্থক্য হল মাধ্যমিকে পাশের হারে ছেলেরা কিছুটা এগিয়ে থাকলেও এ বার উচ্চ-মাধ্যমিকে পাশের হারে ছেলেদের টেক্কা দিয়েছে মেয়েরা। এমন ফলে জেলার শিক্ষক মহল তো বটেই অভিভাবক মহল বেশ উচ্ছ্বসিত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৫ ০২:০১

মাধ্যমিকের মতো উচ্চ-মাধ্যমিকেও পাশের হারে এ বার রাজ্যে শীর্ষস্থান দখল করেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ছাত্র-ছাত্রীরা। তবে জেলায় মাধ্যমিকের চেয়ে উচ্চ-মাধ্যমিকের ফলাফলের পার্থক্য হল মাধ্যমিকে পাশের হারে ছেলেরা কিছুটা এগিয়ে থাকলেও এ বার উচ্চ-মাধ্যমিকে পাশের হারে ছেলেদের টেক্কা দিয়েছে মেয়েরা। এমন ফলে জেলার শিক্ষক মহল তো বটেই অভিভাবক মহল বেশ উচ্ছ্বসিত।

পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় এ বছর উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী ছিল ৫০ হাজার ৮১৩। এদের মধ্যে পাশ করেছে ৪৫ হাজার ৮৩৯ জন। পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্র ছিল ২৪ হাজার ৮৩৩ জন। পাশ করেছে ২২ হাজার ৩৮ জন অর্থাৎ ছাত্রদের পাশের হার ৮৮.৭৪ শতাংশ। অন্য দিকে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রী ছিল ২৫ হাজার ৯৮০ জন পাশ করেছে ২৩ হাজার ৮০১ জন অর্থাৎ ছাত্রীদের পাশের হার ৯১.৬১ শতাংশ। অর্থাৎ জেলায় এবার পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রীদের সংখ্যা বেশীর পাশাপাশি পরীক্ষায় পাশের গড় হার ছাত্রদের চেয়ে প্রায় তিন শতাংশ বেশী। শুধু গড় পাশেরই নয় জেলার অনেক স্কুলেই উচ্চ-মাধ্যমিকের ফলাফলে ছাত্রদের সাথে পাল্লা দিয়ে নিজেদের স্কুলে শীর্ষস্থান দখল করেছে ছাত্রীরা।

ছাত্রীদের মধ্যে পাঁশকুড়ার ঘোষপুর হাইস্কুলের ছাত্রী মেঘনা মাইতি এ বার ৪৭৬ নম্বর পেয়ে উচ্চ-মাধ্যমিকে স্কুলের সেরার স্থান তো বটেই জেলায় প্রথম সারিতে রয়েছেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুপ্রতিম মান্নার কথায়, ‘‘পড়াশোনার ক্ষেত্রে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের চেষ্টা রয়েছে। এছাড়া অভিভাবকদের সচেতনতা আগের চেয়ে অনেকটাই বেড়েছে। সেটা পড়ুয়াদের ভাল ফলের একটা কারণ।’’ সুপ্রতিমবাবুর মতে, ‘‘ছেলেদের মতোই মেয়েরাও এখন স্বাবলম্বী হচ্ছে। ফলে পরীক্ষায় এগিয়ে থাকার লড়াইয়ে তারাও টেক্কা দিচ্ছে ছেলেদের।’’ নন্দকুমারের বেতকল্লা মিলনী বিদ্যানিকতন থেকে এবার ৪০ জন ছাত্র-ছাত্রী উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল এদের মধ্যে ৪২০ নম্বর পেয়ে এই স্কুলে সেরার স্থান দখল করেছেন কলা বিভাগের ছাত্রী রিম্পা মাইতি। ওই স্কুলের শিক্ষক রাজর্ষি মহাপাত্রর মতে, ‘‘গ্রামের ছাত্র-ছাত্রীদের বেশীরভাগই দুঃস্থ পরিবারের। সংসারের অভাব দূর করতে এইসব পরিবারের মেয়েদের নিজেদের পায়ে দাঁড়ানোর প্রবল ইচ্ছা থাকে। সেই তাগিদেই তারা অনেক সময় ভাল ফল করে।’’

নন্দীগ্রামের আমদাবাদ হাইস্কুলে ৪২২ নম্বর পেয়ে ওই স্কুলের সেরা হয়েছে সতু সামন্ত। আর ওই হাইস্কুলেরই মৌমিতা মাইতি ৪২০ নম্বর পেয়েছে। উচ্চ-মাধ্যমিকে ছাত্রীদের সাফল্যের কারণ জানিয়ে স্কুলের প্রবীণ রসায়ন বিষয়ের শিক্ষক স্বপনকুমার কুইল্যা বলেন, ‘‘ছাত্ররা অনেকেই পড়াশোনার চেয়ে ক্রিকেট খেলা, সিনেমা মেনা নিয়ে অতিরিক্ত মনোযোগী হয়ে পড়েছে। তুলনায় ছাত্রীদের প্রতি পরিবারের নজরদারি অনেক বেশী থাকে। স্কুলে ছাত্রীদের উপস্থিতির হারও ছাত্রদের চেয়ে বেশী। মনোযোগও ছাত্রীদের বেশি। তার ফল পড়ছে পরীক্ষার ফলে।’’ জেলায় ছাত্রীদের সাফল্যের কারণ প্রসঙ্গে তমলুকের খারুই ইউনিয়ন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক তপন বেরা বলেন, ‘‘জেলার সার্বিক আর্থ-সামাজিক অবস্থা মেয়েদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও বাড়তি সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। আর এখন ছেলেদের মত মেয়েদের পড়াশোনার প্রতি তাঁদের পরিবারের আগ্রহ ও ভাল ফল করার জন্য ছাত্রীদের প্রবল প্রচেষ্টা ছাত্রীদের এই সাফল্য এনে দিয়েছে।’’

পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ মামুদ হোসেনের মতে, ‘‘জেলার ছাত্র-ছাত্রীদের বেশীরভাগই একই স্কুলে ও একই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছে পড়াশোনা করে ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীরা যেভাবে সাফল্য লাভ করেছে তা বেশ উৎসাহব্যঞ্জক। এই ফল প্রমাণ করছে ছাত্রীদের শিক্ষার সার্বিক অগ্রগতি ঘটছে। জেলার এই সাফল্য যাতে বজায় থাকে তাতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’’

Higher Secondary Girl Boys HS result Nandigram
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy