Advertisement
০৫ মে ২০২৪
জোড়া সাফল্য

উজ্জ্বল ঐতিহ্যের হ্যামিল্টন

তমলুক হ্যামিল্টন হাইস্কুলের এমন সাফল্য শুধু পূর্ব মেদিনীপুর জেলাতেই নয় সারা রাজ্যে নজর কেড়েছে। স্কুলের সাফল্যের নিরিখে এবার সবচেয়ে ভাল ফল হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের।

উচ্ছ্বাস: হাতে এল পরিশ্রমের পুরস্কার। তমলুকের একটি স্কুলে। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

উচ্ছ্বাস: হাতে এল পরিশ্রমের পুরস্কার। তমলুকের একটি স্কুলে। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

আনন্দ মণ্ডল
তমলুক শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৮ ০০:২১
Share: Save:

২০১৬ সালের উচ্চ-মাধ্যমিকে রাজ্যের মেধা তালিকায় স্কুলের দুই ছাত্র বৈদূর্য নায়ক ও অর্চিস্মান ভট্টাচার্য অষ্টম স্থান দখল করেছিল। এ বার কয়েক ধাপ এগিয়ে একবারে দ্বিতীয় স্থান পেয়েছে স্কুলের ছাত্র ঋত্বিক সাহু। স্কুলেরই আরেক ছাত্র রোহিত বেরা দশম স্থানে। শুধু তাই নয়, মাধ্যমিকেও এই স্কুল থেকে মেধা তালিকায় দশম স্থান পেয়েছে অগ্নিভ সিনহা।

তমলুক হ্যামিল্টন হাইস্কুলের এমন সাফল্য শুধু পূর্ব মেদিনীপুর জেলাতেই নয় সারা রাজ্যে নজর কেড়েছে। স্কুলের সাফল্যের নিরিখে এবার সবচেয়ে ভাল ফল হয়েছে বলে দাবি শিক্ষকদের। টানা কয়েক বছর মাধ্যমিক এবং উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষায় ছাত্রদের সাফল্য জেলার অন্যতম সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে দেড়শো বছরের বেশি প্রাচীন হ্যামিল্টন হাইস্কুলকে। বিদ্যালয়ের ছাত্রদের ধারাবাহিক সাফল্যকে স্কুলের শিক্ষক থেকে অভিভাবক এবং শহরবাসীর সামগ্রিক প্রয়াস হিসেবেই দেখছেন শিক্ষানুরাগীরা।

বিদ্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৮৫২ সালে শুরু হ্যামিল্টন স্কুলের ইতিহাসে সফল ছাত্র হিসেবে প্রথম দিকে স্থান করে নিয়েছিলেন বেশ কয়েকজন কৃতী ছাত্র। ১৯১৮ সালের স্কুল ফাইনাল পরীক্ষায় রাজ্যে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেছিলেন পিনাকীরঞ্জন সিংহ। ১৯৩৬ সালে স্কুল ফাইনাল পরীক্ষায় রাজ্যে প্রথম হন অমলেশ ত্রিপাঠী। পরবর্তীকালে ঐতিহাসিক হিসেবে বিখ্যাত হয়েছিলেন তিনি। ১৯৩৭ সালে স্কুল ফাইনালে রাজ্যে দ্বিতীয় হয়েছিলেন সুকুমার দত্ত। ১৯৫৫ সালে স্কুল ফাইনালে রাজ্যে পঞ্চম স্থান দখল করেন অজয়কুমার ভৌমিক। ১৯৯৫ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যে তৃতীয় স্থান পান অনির্বাণ অধিকারী। ২০০৮ সালে উচ্চ-মাধ্যমিকে রাজ্যে সপ্তম ও অষ্টম স্থান লাভ করেন যথাক্রমে শৌর্যকান্তি দাস ও অভ্রদীপ্ত দাস। ২০০৯ সালে মাধ্যমিকে নবম হন রঞ্জিবুল ইসলাম। ২০১৪ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যে যুগ্মভাবে ষষ্ঠ স্থান লাভ করেন প্রত্যয় চন্দ্র ও গোপাল সাঁতরা। প্রত্যয় ২০১৬ সালে উচ্চ-মাধ্যমিকেও অষ্টম স্থান পান। ২০১৭ সালে উচ্চ-মাধ্যমিক পরীক্ষায় বৈদূর্য নায়ক ও অর্চিস্মান ভট্টাচার্য যুগ্মভাবে অষ্টম হন। আর এবার উচ্চমাধ্যমিকে ঋত্বিক সাহু দ্বিতীয় ও রোহিত বেরা দশম স্থান লাভ করে সাফল্যের নতুন রেকর্ড গড়ল বলে দাবিশিক্ষকদের।

স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গোবিন্দপ্রসাদ শাসমল বলেন, ‘‘স্কুলের ইতিহাসে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় এবারই সেরা ফল করল ছাত্ররা। স্কুলের ১৪ জন ছাত্র ৯০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছে।’’ তিনি জানান, এই সাফল্যের শরিক শিক্ষক থেকে অভিভাবক, এলাকার মানুষ সকলেই। স্কুলের এমন সাফল্যে খুশি প্রাক্তন শিক্ষক থেকে ছাত্ররাও। স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সোমনাথ মিশ্র বলেন, ‘‘পড়াশোনার প্রতি একাগ্রতা এবং স্কুলের শিক্ষক ও অভিভাবকদের প্রচেষ্টাতেই এমন সাফল্য এসেছে।’’ খুশি তমলুকের মানুষও। শহরের বাসিন্দা ও শিক্ষক বিধান সামন্ত বলেন, ‘‘স্কুলে জেলার বিভিন্ন এলাকার মেধাবী ছাত্ররা ভর্তি হয়। শিক্ষকদের ভূমিকার পাশাপাশি মেধাবী ছাত্রদের মধ্যে প্রতিযোগিতা এবং ভাল গৃহশিক্ষকের সাহায্যই সাফল্য এনে দিচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE