Advertisement
E-Paper

জলের দাবি আন্ত্রিকের গ্রামে

আন্ত্রিকের প্রকোপ ছড়াল ডেবরার সারপুর-লোয়াদা গ্রাম পঞ্চায়েতের অনন্তবাড় গ্রামে। গ্রামের প্রায় ২১ জন বাসিন্দা আন্ত্রিকে আক্রান্ত হয়েছেন বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। রবিবার রাত থেকেই গ্রামের একে একে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের কয়েকজনকে ডেবরা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতেই এলাকায় যায় মেডিক্যাল টিম। পানীয় জল থেকেই আন্ত্রিক ছড়িয়েছে বলে অনুমান।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০১৬ ০১:৫৭

আন্ত্রিকের প্রকোপ ছড়াল ডেবরার সারপুর-লোয়াদা গ্রাম পঞ্চায়েতের অনন্তবাড় গ্রামে। গ্রামের প্রায় ২১ জন বাসিন্দা আন্ত্রিকে আক্রান্ত হয়েছেন বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। রবিবার রাত থেকেই গ্রামের একে একে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের কয়েকজনকে ডেবরা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতেই এলাকায় যায় মেডিক্যাল টিম। পানীয় জল থেকেই আন্ত্রিক ছড়িয়েছে বলে অনুমান।

পেটে ব্যথা ও বমির উপসর্গ নিয়ে রবিবার সন্ধেয় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন ওই গ্রামের বাসিন্দা প্রৌঢ়া হিরামনি হেমব্রম। ওই দিন রাতেই বছর পঁয়ষট্টির হিরামণিদেবীর মৃত্যু হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। ডেথ সার্টিফিকেটেও সেই কথাই উল্লেখ রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সকাল থেকেই হিরামণিদেবীর পেটে ব্যথা শুরু হয়। স্থানীয় এক কোয়াক ডাক্তার এসে তাঁকে স্যালাইন দেওয়া শুরু করেন। এরপর ওই দিন বিকেল থেকে বছর চব্বিশের ফুলমণি হাঁসদা, বছর পাঁচেকের সুপর্ণা হেমব্রম, বছর দশেকের পুতুল কিস্কুরও একই উপসর্গ দেখা দেয়। ডেবরা গ্রামীণ হাসপাতাল ও জেলা স্বাস্থ্য দফতরে খবর দেওয়া হয়।

মেডিক্যাল টিমের প্রতিনিধিরা গিয়ে হিরামণিদেবীকে নিয়ে এসে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি করে। তার কিছুক্ষণ পরেই হাসপাতালে হিরামণিদেবীর মৃত্যু হয়। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “ওই বৃদ্ধা আন্ত্রিকে আক্রান্ত হয়েছিলেন এ কথা ঠিক। অবশ্য হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে।” স্থানীয় সূত্রে খবর, আদিবাসী অধ্যুষিত অনন্তবাড় গ্রামের বাসিন্দাদের পানীয় জলের জন্য ভরসা একটি পুকুর ও একটি নলকূপ। প্রচণ্ড গরমে জলস্তর নীচে নেমে যাওয়ায় কয়েকদিন ধরেই নলকূপ দিয়ে নোংরা জল পড়ছিল বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দারা ওই জল পান করতে বাধ্য হচ্ছিলেন। স্বাস্থ্যকর্তারা জানিয়েছেন, একটি পুকুরের জল সকলে স্নান, বাসন ধোয়া ও শৌচকর্মের জন্য ব্যবহার করলেও সংক্রমণ ছড়াতে পারে। যদিও নলকূপের জল থেকে আন্ত্রিকের জীবাণু ছড়িয়েছে বলে প্রাথমিক ভাবে অনুমান করা হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মদন হাঁসদা বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে ওই নলকূপের জলই আমরা ব্যবহার করি। কয়েকদিন ধরেই নলকূপ দিয়ে নোংরা জল উঠছিল। গ্রামে পরিশ্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা করা হোক।”

রবিবার রাতেই আন্ত্রিকে আক্রান্ত ছ’জনকে ডেবরা গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার সকালে আরও একজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৭ জনের মধ্যে ৪ জন শিশু বলে জানা গিয়েছে। সোমবার সকালে এলাকায় পৌঁছয় দু’জন চিকিৎসক-সহ দু’টি স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধি দল। গ্রামে হ্যালোজেন ট্যাবলেট ও ফিনাইল বিলি করা হয়। এলাকায় পৌঁছন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্রবাবু, জেলা উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তথা সংক্রমিত রোগের নোডাল অফিসার রবীন্দ্রনাথ প্রধান-সহ জেলার স্বাস্থ্য কর্তারা।

রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “গ্রামে ঘুরে ও মানুষের সঙ্গে কথা বলে আমাদের মনে হয়েছে, নলকূপের জল থেকে এই আন্ত্রিকের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এলাকায় ৫ হাজার পরিশ্রুত পানীয় জলের প্যাকেট বিলি করা হয়েছে। মানুষকে সচেতন করতে শিবিরের আয়োজনও করেছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে।” সোমবার এলাকায় যান বিডিও জয়ন্ত দাস ও পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিরা। তাঁদের কাছেও পরিশ্রুত পানীয় জলের দাবি জানান স্থানীয়রাও। বিডিও বলেন, “পানীয় জল থেকেই আন্ত্রিক ছড়িয়েছ বলে মনে করা হচ্ছে। আমরা ওই এলাকায় দ্রুত একটি গভীর নলকূপ তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যে নলকূপটি রয়েছে সেটি আপাতত মেরামত করা হবে।” এ দিন বিডিও হিরামণিদেবীর পরিজনেদের সঙ্গেও দেখা করেন।

crisis drinking water Diarrhea Kharagpur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy