Advertisement
E-Paper

উদ্যোগী আইআইটি, পাঠ কৃষি প্রযুক্তির

সার দিয়ে রাখা রয়েছে ধান রোওয়ার সিডার মেশিন থেকে মাটির আর্দ্রতা মাপার যন্ত্র। কোন যন্ত্রের কী কাজ, দামই বা কত— তা বুঝিয়ে দিচ্ছেন আইআইটি-র অধ্যাপক থেকে পড়ুয়ারা। সাধারণ পড়ুয়া থেকে কৃষিজীবীদের এ ভাবেই বিভিন্ন কৃষি পদ্ধতির প্রশিক্ষণও দেওয়া হল খড়্গপুর আইআইটি-র ‘এগ্রি এক্সপো’তে ।

দেবমাল্য বাগচী

শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:১৯
 ধান বোনার যন্ত্র। দাম: ৫ হাজার কাজ: ১৫ সেন্টিমিটার অন্তর চারটি সারিতে একই সঙ্গে ধান বোনা। কোথায় মিলবে: মূল ডিলার তামিলনাডুতে। রাজ্যেও রয়েছে ডিলার।

ধান বোনার যন্ত্র। দাম: ৫ হাজার কাজ: ১৫ সেন্টিমিটার অন্তর চারটি সারিতে একই সঙ্গে ধান বোনা। কোথায় মিলবে: মূল ডিলার তামিলনাডুতে। রাজ্যেও রয়েছে ডিলার।

সার দিয়ে রাখা রয়েছে ধান রোওয়ার সিডার মেশিন থেকে মাটির আর্দ্রতা মাপার যন্ত্র। কোন যন্ত্রের কী কাজ, দামই বা কত— তা বুঝিয়ে দিচ্ছেন আইআইটি-র অধ্যাপক থেকে পড়ুয়ারা। সাধারণ পড়ুয়া থেকে কৃষিজীবীদের এ ভাবেই বিভিন্ন কৃষি পদ্ধতির প্রশিক্ষণও দেওয়া হল খড়্গপুর আইআইটি-র ‘এগ্রি এক্সপো’তে ।

আইআইটি-র কৃষি প্রযুক্তি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত ‘এগ্রি এক্সপো-এর সূচনা হয় গত শুক্রবার। তিনদিনের কৃষি মেলার শেষ দিন ছিল রবিবার। শুধু কৃষি যন্ত্রপাতি নয়, মেলায় ছিল বুটিক শাড়ি, গয়না, কার্পেটের স্টলও।

আইআইটি-র দাবি, অভিজ্ঞতার লেনদেন ঘটানোই এই মেলার আসল উদ্দেশ্য। আধুনিক চাষের পদ্ধতি সম্পর্কে অনেক কৃষকই অবগত নন। মান্ধাতার আমলের পদ্ধতিতে চাষ করে বাড়ছে ক্ষতির বহর। নিত্যনতুন বিভিন্ন পদ্ধতি সম্পর্কে চাষিদের হাতেকলমে প্রশিক্ষণ দিলে কৃষিরও মানোন্নয়ন হবে। শুধু চাষি নয়, প্রশিক্ষণ পেলে প্রথাগত শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে যুবক-যুবতীরাও স্বনির্ভর হয়ে উঠতে পারবেন।

ধান রোওয়ার যন্ত্র। দাম: ২-২.২৫ লক্ষ কাজ: ৮টি সারিতে ১৫ সেন্টিমিটার অন্তর একটি করে চারা রোওয়া যাবে কোথায় মিলবে: ডিলার ওড়িশায়। যোগাযোগ করলে বাড়িতে পৌঁছবে যন্ত্র।

কৃষি মেলায় কৃষি যন্ত্রপাতির রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবহার, জৈব প্রযুক্তি, মাটির গুণমান পরীক্ষা, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের মতো ৯টি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। মেলার উপদেষ্টা অধ্যাপক অরুণাভ মিত্রর কথায়, “এগ্রি এক্সপো-র স্লোগানই ছিল ‘স্কিল ডেভেলপমেন্ট ও আন্ত্রেপ্রেনিওরশিপ’। প্রশিক্ষণের পরে যুবকেরা চাষের পাশাপাশি স্বনিযুক্তির জন্য নানা প্রকল্পও গড়তে পারবেন। কৃষির মানোন্নয়ন ঘটলে তবেই আমাদের উদ্দেশ্য সফল হবে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এই কৃষি মেলায় অনেকেই আসতে চেয়েছিলেন। যদিও ১২০জনের বেশি লোককে আমরা জায়গা দিতে পারিনি।’’

শুধু পশ্চিম মেদিনীপুর নয়, ভিন্‌ জেলার অনেক লোকও যোগ দেন ‘এগ্রি এক্সপো-তে। মাশরুম চাষের পদ্ধতি জানতে মেলায় এসেছিলেন বেলদার কৃষক পরিবারের ছেলে পেশায় বিজ্ঞানের শিক্ষক কানাইলাল শিট। মাশরুম চাষের ইচ্ছা থাকলেও এতদিন পদ্ধতি জানতেন না তিনি। মেলায় প্রযুক্তিনির্ভর চাষের নানা পদ্ধতি সম্পর্কে জেনে আপ্লুত কানাইলালবাবু বলছিলেন, ‘‘ছোট থেকে বাড়িতে বাবা-কাকাদের কষ্ট করে চাষ করতে দেখেছি। তাই এখন শিক্ষকতার পাশাপাশি প্রযুক্তিনির্ভর চাষে সম্পর্কে গ্রামের বাসিন্দাদের শেখাই। মাশরুম চাষের পদ্ধতি শিখে ভাল লাগল।’’

নয়াগ্রামের বাসিন্দা গৃবহধূ ইন্দ্রানী মাহাতো স্থানীয় কয়েকজন চাষির মুখে শুনেছিলেন, আইআইটি-তে কেঁচো সার তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তড়িঘড়ি আইআইটি-র কৃষি প্রযুক্তি বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করেন উচ্চ মাধ্যমিক পাশ ইন্দ্রানীদেবী। এগ্রি এক্সপো-য় সার তৈরির প্রশিক্ষণ নিয়ে নয়াগ্রামের গৃহবধূ বলছেন, ‘‘এলাকার বেশিরভাগ মানুষ শালপাতা বিক্রি করেই জীবনধারণ করেন। এ বার গ্রামের লোকেদের শেখাব, কম খরচে কেঁচো সার তৈরি করে কী ভাবে স্বনির্ভর হওয়া যায়। আশা করি, সকলকে খুশি করতে পারব।’’ জৈব সার তৈরির প্রশিক্ষণ নিয়েছেন দাঁতনের পানচাষি সুনীলকুমার প্রধানও। তাঁর কথায়, ‘‘আমি বিজ্ঞানে স্নাতক হলেও চাষেও আগ্রহ রয়েছে।”

Agriculture IIT Technology
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy