সাজ: শহরের পথে আলপনা। মেদিনীপুরে। নিজস্ব চিত্র
কলকাতার হাওয়া এ বার শহর মেদিনীপুরে। বাহারি আলপনায় রঙিন হল শহরের পথ। রাস্তায় ফুটে উঠল একের পর এক নকশা।
শুক্রবার সন্ধ্যায় শহরের কিশোর সঙ্ঘের জগদ্ধাত্রী পুজোর বিসর্জনের শোভাযাত্রা উপলক্ষেই রঙিন হয়ে ওঠে রাজপথ। যে রাস্তা দিয়ে শোভাযাত্রা গিয়েছে, সেই রাস্তায় একের পর এক নকশা আঁকা হয়েছে। এঁকেছেন মুম্বই থেকে আসা শিল্পীরা। এ বছর কলকাতার একটি দুর্গাপুজোয় এমনই আলপনায় সাজানো হয়েছিল রাজপথ। তবে মেদিনীপুরের পথ জুড়ে এমন আলপনার সাজ এই প্রথম। কিশোর সঙ্ঘের পুজোর উদ্যোক্তা হিমাদ্রি খান বলছিলেন, “নতুন কিছু করতে চেয়েছিলাম। সেই ভাবনা থেকেই এই উদ্যোগ। রাস্তা ঝলমল করেছে। শহরবাসী দেখে খুশি হয়েছেন। এটাই বড় প্রাপ্তি।’’
কিশোর সঙ্ঘের জগদ্ধাত্রী পুজো হয় মেদিনীপুরের সঙ্গতবাজার-বড়বাজার রোডের পাহাড়িপুরে। এ বারও বেশ ধুমধাম করে পুজো হয়েছে। এই পুজোর অন্যতম আকর্ষণ বিসর্জনের শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রায় ভিন্ রাজ্যের নানা ধরনের বাজনা, বাহারি আলোকসজ্জা থাকে। শোভাযাত্রা দেখতে রাস্তার দু’ধারে মানুষের ঢল নামে। এ বারও সেই একই ছবি। সন্ধ্যায় শোভাযাত্রা শুরু হয়। এরপর রাত যত বেড়েছে, ততই মানুষের ভিড় বেড়েছে। স্কুলবাজার, নিমতলাচক, বটতলাচক, গোলকুয়াচক, কর্নেলগোলা, মিরবাজার, বড়বাজার প্রভৃতি এলাকা পরিক্রমা করে এই শোভাযাত্রা। পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা হিমাদ্রি বলছিলেন, “মুম্বই, রাজস্থান থেকে ব্যান্ড এসেছিল। ছিল চন্দননগরের আলোকসজ্জা।’’ আলোর সাজে ফুটে ওঠে কন্যাশ্রী, সেফ ড্রাইফ-সেভ লাইফের বার্তা। বিসর্জনের শোভাযাত্রায় ছিল তুবড়ি, ফুলঝুরি, রংমশালের মতো আতসবাজি।
তবে সব ছাপিয়ে আকর্ষণের কেন্দ্রে ছিল, রাস্তা জুড়ে রঙিন আলপনা। কথিত আছে, দক্ষিণ ভারতীয় লোকচিত্রই রঙ্গোলির উত্স। কর্নাটকের বাড়ির মেঝেতে হলুদ, সিঁদুর দিয়ে রঙিন আলপনা মতো ‘রঙ্গভালি’ চালু হয়েছিল। মনে করা হয়, সেই থেকেই রঙ্গোলির উত্পত্তি। অন্ধ্রপ্রদেশে মুগ্গু, তামিলনাড়ুতে কোল্লাম ও কেরালায় কোলাম নামে এই লোকচিত্র চালু রয়েছে। ছত্তীসগঢ়, রাজস্থান, গুজরাতেও এই শিল্পকলা দেখতে পাওয়া যায়। এ দিন তারই টুকরো ছবি ফুটে ওঠে মেদিনীপুরের পথে। জগদ্ধাত্রী বিসর্জনের শোভাযাত্রায় পথের এই সাজ দেখে আপ্লুত মেদিনীপুরবাসী। শোভাযাত্রা দেখতে দেখতে অনন্যা পাল, দেবস্মিতা সাহারা বলছিলেন, “বাহারি আলোর জাদু, রঙিন আলপনা, এত ব্যান্ড— সব দেখে সত্যিই চোখ সার্থক হল। এ বার থেকে প্রতিবারই আসব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy