এনসিসি-র ৪৫ নম্বর ব্যাটালিয়নের উদ্যোগে আয়োজিত যোগ শিবিরে পড়ুয়ারা। মেদিনীপুরে জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ের মাঠে ।
যোগ দিবসে প্রতীকি যোগ সাধনা নয়, নিয়মিত যোগচর্চা নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে এ বার আন্দোলন শুরুর কথা বললেন কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী হর্ষবর্ধন। বিশ্ব যোগ দিবস উপলক্ষে রবিবার খড়্গপুর আইআইটি-তে এক প্রশিক্ষণ শিবিরে যোগ দেন তিনি। এ দিন হর্ষবর্ধন দাবি করেন, ‘‘বাংলারই সন্তান ঋষি অরবিন্দ যোগকে তুলে ধরেছিলেন। তবে ভারতের ঘরে ঘরে বাবা রামদেবই যোগকে পৌঁছে দেন। আর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সেই যোগকে বিশ্বের মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিলেন।’’ আইআইটি-র ‘যোগ কর্মাসু কৌশলম’ লেখা প্রতীককে সামনে রেখে ক্যাম্পাসে নিয়মিত যোগচর্চা নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রচার শুরু করছে প্রতিষ্ঠানের পড়ুয়ারা। আইআইটির পডুয়াদের কথায়, যোগকে ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানানো হবে।
খড়্গপুরের বেনাপুরে এক শিবিরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হর্ষবর্ধন ।
এ দিন সকালে আইআইটি-র জিমখানায় যোগ শিবির দিয়ে শুরু হয় বিশ্ব যোগ দিবসের অনুষ্ঠান। সকাল ৬টা থেকে শুরু হয় শিবির। চলে ৭টা পর্যন্ত। শিক্ষক ও পড়ুয়া মিলিয়ে প্রায় চারশো জন শিবিরে যোগ দেন। যোগাসনের পদ্ধতি ও উপকারিতা নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে কালীদাস প্রেক্ষাগৃহেও সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ এক প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হয়। ওই শিবিরে কপালভাতি, অনুলোম-বিলোমের মতো প্রাণায়ম থেকে শীর্ষাসন, বজ্রাসন, গোমুখাসনের মতো যোগের নানা পদ্ধতি শেখানো হয়। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হর্ষবর্ধন। তিনি বলেন, ‘‘যোগ আমাদের শরীর নয়, মনকে ভাল করে তুলতে সাহায্য করে। যোগের মাধ্যমেই মানুষের সামাজিক, শারীরিক, আধ্যাত্মিক ও মানসিক চেতনার বিকাশ সম্ভব।’’ এ দিন হর্ষবর্ধন দাবি করেন, “২০০০ সালের শেষ দিকে জাপানের কোবে-তে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ‘হু’ আয়োজিত এক সম্মেলনে গিয়েছিলাম। সেখানে পতঞ্জলী যোগকে আসল যোগ বলে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল।” তাঁর দাবি, ‘‘ভারতে উদ্ভূত যোগের পদ্ধতিই উৎকৃষ্ট পন্থা।’’
আইআইটি-র প্রশিক্ষণ শিবিরের উদ্বোধন করছেন মন্ত্রী হর্ষবর্ধন।
কেন্দ্রীয় যুব মন্ত্রকের অধীনস্থ নেহরু যুব কেন্দ্রের উদ্যোগে খড়্গপুরের বেনাপুরের গোশালায় আয়োজিত এক শিবিরেও যোগ দেন মন্ত্রী। শিবিরে অন্যদের সঙ্গে একসঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ যোগাসন করেন তিনি। ওই অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দাবি করেন, “বিশ্বের ১৯২টি দেশ একযোগে যোগ দিবস পালন করছে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নাম ইতিহাসে লেখা থাকবে।” এ দিন সেরসা স্টেডিয়ামেও একটি যোগ শিবিরে উপস্থিত ছিলেন হর্ষবর্ধন।
আইআইটি-র পড়ুয়াদের উদ্যোগে ‘যোগ কর্মাসু কৌশলম’ শীর্ষক এক বিতর্ক সভারও আয়োজন করা হয়। এ দিনের অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক ভি সতভিক দেব বলেন, “যোগ দিবসের জন্য গত এক সপ্তাহ ধরে জিমখানায় যোগাসন অনুশীলন করেছি। এ বার ধারাবাহিক ভাবে প্রতিদিন ১ ঘণ্টা করে যোগ চর্চা করব বলে ঠিক করেছি। আইআইটি-তে যোগকে ঐচ্ছিক করার জন্যও সেনেটে দাবি জানাব।” এ দিন প্রতিষ্ঠানের যোগ শিবিরে যোগদানকারী গবেষক প্রণব মাইতি, আর মঞ্জুলারা বলেন, “গত কয়েকদিন ধরে যোগ শিবিরে যোগ দিয়ে ফল বুঝতে পারছি। যোগাসন মানসিক চাপ কমাতেও সাহায্য করছে। তাই যোগ চর্চা চালিয়ে যাব।” মন্ত্রী বলেন, ‘‘জার্মানিতে যোগ গুরুত্বপূর্ণ জায়গা করে নিয়েছে। আমাদের দেশেও সচেতনতা বাড়লে যোগকে মানুষ স্বেচ্ছায় আপন করে নেবে।’’ এ দিন খড়্গপুরের ট্রাফিকের কল্যাণ মণ্ডপে এক যোগ শিবিরের আয়োজন হয়। ইন্দার বিদ্যাসাগরপুরেও যোগ দিবস পালিত হয়।
ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল ও রামপ্রসাদ সাউ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy