Advertisement
E-Paper

রেলের জমিতে যাত্রী প্রতীক্ষালয় ভাঙার নির্দেশ

উন্নয়নের কাজে বাধা দিচ্ছে রেল- এই অভিযোগে আদালতের দ্বারস্থ হল খড়্গপুর পুরসভা। খড়্গপুর শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের মথুরাকাটিতে রেলের জমিতে স্থানীয় কাউন্সিলরের উদ্যোগে একটি যাত্রী প্রতীক্ষালয় গড়ে তোলা হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৫ ০১:২৫
মথুরাকাটিতে এই প্রতীক্ষালয় ভাঙার নির্দেশ দিয়েছে রেল। —নিজস্ব চিত্র।

মথুরাকাটিতে এই প্রতীক্ষালয় ভাঙার নির্দেশ দিয়েছে রেল। —নিজস্ব চিত্র।

উন্নয়নের কাজে বাধা দিচ্ছে রেল- এই অভিযোগে আদালতের দ্বারস্থ হল খড়্গপুর পুরসভা।

খড়্গপুর শহরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের মথুরাকাটিতে রেলের জমিতে স্থানীয় কাউন্সিলরের উদ্যোগে একটি যাত্রী প্রতীক্ষালয় গড়ে তোলা হয়। যদিও রেলের জমিতে গড়ে ওঠায় নবনির্মিত ওই প্রতীক্ষালয় ভেঙে ফেলার নির্দেশে দিল রেল কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার রাতেই রেলের ওয়ার্কস বিভাগের নির্দেশ মেনে রেল সুরক্ষা বাহিনী (আরপিএফ) এসে ওই যাত্রী প্রতিক্ষালয় ভেঙে ফেলার কথা জানায়। এরপরেই বুধবার প্রতীক্ষালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, দুর্ঘটনাপ্রবণ ওই এাকায় কোনও যাত্রী প্রতীক্ষালয় নেই। রাস্তায় গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে হয়। গরমে ও বর্ষায় এ জন্য সমস্যা হলেও রেল কর্তৃপক্ষ উদাসীন।

খড়্গপুর পুরসভার অন্তর্গত রেল এলাকায় কাজ করা নিয়ে পুরসভা-রেলের চাপানউতর নতুন নয়। ২০১০ সালের পুর-নির্বাচনের আগে এলাকা পুনর্বিন্যাসের দরুন রেল এলাকাও পুরসভার অধীনে আসে। আগেও রেল উন্নয়নের কাজে বাধা দিচ্ছে- এই অভিযোগে সরব হয় পুরসভা। এর আগে শহরে রেলের ১৩টি বস্তি এলাকায় বিদ্যু সংযোগের চাহিদা মেটাতে বিদ্যু দফতরকে অনুমতিপত্র দিয়েছিল পুরসভা। কিন্তু কাজ শুরু হলে রেল তাতে বাধা দেয়। রেলের যুক্তি, রাজ্যের ক্ষমতাবলে রেল এলাকা পুরসভার অধীনে গিয়েছে। কিন্তু রেলের জমিতে কাজের বিষয়ে রেল বোর্ডের সঙ্গে রাজ্য সরকারের কোনও চুক্তি হয়নি। তাই রেলের আইন অনুযায়ী রেল এলাকায় কোনও কাজ করতে গেলে রেলের অনুমতি প্রয়োজন। তাই আইনি জটিলতাতেই রেল ওই সমস্ত এলাকায় কাজ করতে দিতে পারে না।

যদিও পুর-কর্তৃপক্ষের পাল্টা দাবি, রেল রাজ্যের জমিতে লিজে রয়েছে। সেখানে রাজ্যের বসবাসকারীকে নাগরিক পরিষেবা না দেওয়ার কথা স্বাধীন ভারতের সংবিধানে কোথাও লেখা নেই। তাই ওই এলাকায় ইতিমধ্যেই অনুমতি ছাড়াই পানীয় জলের সংযোগ দিয়েছে পুরসভা। কিন্তু নির্মাণের ক্ষেত্রে রেল বাধা দেওয়ায় আইনি লড়াইয়ে নেমে রেলের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে কংগ্রেস পরিচালিত পুরবোর্ড।

সম্প্রতি স্থানীয় কাউন্সিলরের উদ্যোগে রেল এলাকার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে যাত্রী প্রতীক্ষালয় গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে মাটি ভরাট করে একটি টিনের ছাউনি দেওয়া যাত্রী প্রতীক্ষালয় গড়ে পুরসভা। কিন্তু মঙ্গলবার রেল ওই যাত্রী প্রতিক্ষালয় ভেঙে ফেলার কথা ঘোষণা করায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। বুধবার স্থানীয় সিএইচ রামকৃষ্ণ বলেন, “বাস ও অটোর জন্য যাত্রীদের রাস্তায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে হয় বলে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। একটা যাত্রী প্রতীক্ষালয় থাকলে দুর্ঘটনা কিছুটা রোধ করা যায়। কিন্তু রেল কখনও এই বিষয়টি নিয়ে ভাবেনি। এখন স্থানীয় কাউন্সিলরের উদ্যোগে সদ্য হওয়া এই যাত্রী প্রতিক্ষালয়টি ভেঙে দিলে আমরা চুপ করে থাকব না।”

স্থানীয় কাউন্সিলর বি মুরলিধর রাও বলেন, “রেলকে জানিয়েই পুরসভার সহযোগিতায় ওই যাত্রী প্রতীক্ষালয় তৈরি করা হয়েছে। রেল আমাদের কোনও কাজ করতে দিচ্ছেন না। এর ফল ভুগতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। এটা রেলের বোঝা উচিত।” যদিও খড়্গপুর রেলের ওয়ার্কস বিভাগের ইন্সপেক্টর (পশ্চিম) মঙ্গল খুজুর বলেন, “রেলের আইনের ঊর্ধ্বে গিয়ে আমরা কাজ করতে পারব না। রেলের আইন অনুযায়ী রেলের জমিতে কোনও নির্মাণ কাজ অনুমতি ছাড়া করা যায় না।” তিনি বলেন, “ওরা আমাদের জানিয়েছিলেন ঠিকই। কিন্তু অনুমতি দেওয়া হয়নি। তাই ওই যাত্রী প্রতীক্ষালয় ভেঙে ফেলতে বলা হয়েছে। এরপরে ওরা নিজেরা প্রতীক্ষালয় না ভাঙলে আমরা পদক্ষেপ করব।”

kharagpur rail land
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy