Advertisement
E-Paper

নজরদারির অভাব, জঞ্জালে ভরছে অরণ্যশহর

দিনে দিনে অপরিচ্ছন্ন হয়ে উঠছে ঝাড়গ্রাম শহর। পুরসভার নজরদারির অভাবে শহরের যেখানে সেখানে আবর্জনার পাহাড়। জঞ্জাল-আবর্জনাময় পর্যটন শহরে পরিবেশ ও দৃশ্যদূষণের বহর দিন দিন বেড়েই চলেছে।

কিংশুক গুপ্ত

শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৬ ০১:৪৬
রাস্তায় ধারে এভাবেই জমছে ময়লা। নিজস্ব চিত্র।

রাস্তায় ধারে এভাবেই জমছে ময়লা। নিজস্ব চিত্র।

দিনে দিনে অপরিচ্ছন্ন হয়ে উঠছে ঝাড়গ্রাম শহর। পুরসভার নজরদারির অভাবে শহরের যেখানে সেখানে আবর্জনার পাহাড়। জঞ্জাল-আবর্জনাময় পর্যটন শহরে পরিবেশ ও দৃশ্যদূষণের বহর দিন দিন বেড়েই চলেছে।

অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী ঝাড়গ্রাম সফরে এলে তখন অরণ্যশহরে বিভিন্ন রাস্তায় নিয়মিত ঝাঁট পড়ে। জঞ্জাল পরিষ্কার করা হয়। কিন্তু বছরের বাকি দিনগুলিতে ছবিটা একেবারেই অন্যরকম। পুরসভা কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ‘ডি’ ক্যাটাগরির পুরসভায় মাত্র ৯ জন স্থায়ী সাফাই কর্মী রয়েছেন। ১৮ ওয়ার্ডের পুর এলাকার আয়তন ২১ বর্গ কিলোমিটার। দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে ৪০ জন ঠিকা সাফাই কর্মী দিয়ে শহর পরিষ্কার করানো হয়। বাম পুরবোর্ডের আমলে শহরের বাণিজ্যিক এলাকাগুলিতে জঞ্জাল কর আরোপ করা হয়েছিল। পরে অবশ্য বাম আমলেই জঞ্জাল কর প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। ২০১৩ সালে তৃণমূলের পুরবোর্ড ক্ষমতায় আসার পরে জঞ্জাল কর আরোপের বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

জেলা শহর হওয়ার পথে অরণ্যশহর। অথচ জঞ্জাল নিয়ে জেরবার পুরসভার তরফে সুষ্ঠু কোনও পরিকল্পনা নেওয়া হয়নি। পুরসভা সূত্রের খবর, ঝাড়গ্রাম পুর-শহরে প্রায় ৬৩ হাজার মানুষের বাস। পরিবারের সংখ্যা ১৭ হাজার। শহরে দোকানপাট ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৭ হাজার। প্রতিদিন শহরে ৩৪ মেট্রিক টন আবর্জনা জমা হয়। উপযুক্ত পরিকাঠামোর অভাবে সবদিন এই বিপুল সংখ্যক আবর্জনার পুরোটা সরিয়ে ফেলা সম্ভব হয় না। শহরের কিছু রাস্তা নিয়মিত ঝাঁট দেওয়ার জন্য ঠিকা ঝাড়ুদার আছে। কিছু এলাকায় রয়েছে জঞ্জাল ফেলার ভ্যাট আছে। এ ছাড়া শহরের ১২ টি জায়গায় রয়েছে প্রাইমারি পয়েন্ট। ঠিকা সাফাই কর্মীরা ভ্যাট ও রাস্তার ধার থেকে আবর্জনা তুলে ঠেলাগাড়িতে নিয়ে গিয়ে জমা করেন প্রাইমারি পয়েন্টে। বিভিন্ন ওয়ার্ডের আবর্জনা জমা হয় ওই প্রাইমারি পয়েন্টগুলিতে। তারপরে প্রাইমারি পয়েন্টগুলি থেকে ট্র্যাক্টরে জঞ্জাল বহন করে নিয়ে যাওয়া হয় মূল ডাম্পিং গ্রাউন্ডে। জঞ্জালের আয়তন কমানোর জন্য পুরসভার একটি কমপ্যাক্টর যন্ত্রও আছে।

এলাকাবাসীর অবশ্য অভিযোগ, প্রাইমারি পয়েন্টগুলি দৃশ্যদূষণ ঘটায় ও দুর্গন্ধ ছড়ায়। ভনভন করে মশা-মাছি। ভ্যাটগুলিরও একই অবস্থা। পুর কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, পুরবাসীর একাংশ, ভ্যাটের ভিতরের পরিবর্তে বাইরেটা জঞ্জালে ভরিয়ে দেন। অনেকে রাস্তার ধারে কিংবা একেবারে নর্দমার মধ্যে জঞ্জাল ফেলেন। অনেক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানও ভ্যাট ও প্রাইমারি পয়েন্টগুলি প্রচুর আবর্জনায় ভরিয়ে দেয়।

বাছুরডোবা এলাকার প্রবীণ বাসিন্দা ভক্তিরঞ্জন দত্ত বলেন, “নিয়মিত সাফাই কর্মী আসেন না। রাস্তার ধারে জঞ্জাল ডাই হয়ে পড়ে থাকে।” রঘুনাথপুরের বাসিন্দা পেশায় গৃহশিক্ষক বিশ্বজিত কর্মকার বলেন, “আমার বাড়ির পাশে একটি বহুতলের উপর থেকে বাসিন্দারা নিচে নোংরা-আবর্জনা ফেলেন। এলাকাবাসী সচেতন না-হলে পুরসভার একার পক্ষে শহর পরিষ্কার রাখা সম্ভব নয়।” পুরপ্রধান দুর্গেশ মল্লদেব বলেন, “আগামী দিনে ঝাড়গ্রাম জেলা শহর হবে। ফলে, শহরবাসীকে সচেতন হতে হবে। জঞ্জাল সমস্যার সমাধানের জন্য সুষ্ঠ পদক্ষেপ করা হবে।”

Garbage road
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy