মঞ্চে অভিনয়ে শম্পা (বাঁদিকে)। নিজস্ব চিত্র
তিনি রামনগর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী। যাবতীয় কাজকর্ম নির্দিষ্ট আইনি পরিধিতে বাঁধা। দিনের বেশিরভাগ সময়টাই কেটে যায় সরকারি নানা কাজ, নানা জনের সমস্য়া মেটানোর কাজ করতে করতে। কাজের চাপে যখন হাঁপিয়ে ওঠেন তখন মুক্তির স্বাদ খুঁজে নেন ‘পুরনো প্রেম’ মঞ্চাভিনয়ে। শম্পা মহাপাত্রর এমন দ্বৈত ভূমিকা তাঁকে আর পাঁচজনের থেকে আলাদা করে চিনিয়ে দিয়েছে।
রাজনীতিতে নামার অনেক আগে স্কুলে পড়ার সময় থেকে শম্পা অভিনয় করছেন। তখন থেকেই অভিনয়ের প্রতি প্রেম। একাধিক পুরস্কারও রয়েছে ঝুলিতে। রাজনীতিতে আসার পর সেই প্রেমে প্রায় ২৫ বছরের বিচ্ছেদ। তবে আবার ফিরছেন সতীর্থদের নিয়ে। অভিনয় শুরু করছেন তাঁদের পুরনো পালা, অগ্রদূত অপেরার ‘এক পয়সার মা’ যাত্রাপালায়। রামনগর-১ পঞ্চায়েত সমিতি ও ব্লক প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত নন্দিনী মেলার শেষ দিনে ৩১ ডিসেম্বর রামনগর স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের মাঠে মণ্ডপে যাত্রামঞ্চ মাতালেন শম্পা।
প্রথমবার ভোটে জিতে আসার পর পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী নির্বাচিত হন তিনি। বেশ কয়েক বার তৃণমূলের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের রাজ্য, জেলা এবং মহকুমা স্তরের সংগঠনে নানা দায়িত্ব সামলেছেন। এমনকী শাসক দলের মহিলা সংগঠনেরও দায়িত্বেও তিনি। ‘এক পয়সার মা ’ পালায় দুঃখিনী মায়ের ভূমিকায় শম্পা। পালায় দেখা যায় মদ্যপ স্বামীকে নিয়ে দিনের পর দিন সংসার সামলেছেন তিনি। সংসারে নিত্য কলহ। একমাত্র মেয়ের জন্মের পরে তার ভাগ্যে কিছুই জুট ছিল না। অথচ যাত্রাপালায় যিনি শম্পার দিদি হয়েছেন তিনি নিঃসন্তান। তার জন্য তাঁকে শ্বশুরবাড়িতে কথা শুনতে হত। তাই দিদিকে এক পয়সার বিনিময়ে নিজের সদ্যোজাত কন্যাকে বিক্রি করেন।
শম্পার কথায়, ‘‘মেয়েরা যে গার্হস্থ্য হিংসার বলি হচ্ছেন তেমন বহু ঘটনা দেখেছি। কোনও মহিলা নিঃসন্তান হলে তাঁকে শ্বশুরবাড়িতে মানসিক অত্যাচার করা হয়। আবার উল্টোদিকে স্বামী যদি মদ্যপ হয় তাহলে সেই সংসারে কন্যা সন্তান লালন পালন করা একজন মায়ের পক্ষে অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়। তাই তাঁরা সন্তান বিক্রি করতে বাধ্য হন। কন্যা সন্তান এবং নারী জাতিকে যাতে সকলে স্বাভাবিক নজরে দেখেন মূলত সেই প্রেক্ষাপটেই মঞ্চস্থ হয়েছে ‘এক পয়সার মা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy