কেশপুরে ২৫ শতাংশের বেশি বুথে ৯০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। প্রশাসনের এক সূত্রের খবর, কয়েকটি বুথে আবার ভোটদানের হার ৯৫ শতাংশেরও বেশি। অনেকের কাছেই যা অস্বাভাবিক ঠেকছে। শাসক দল অবশ্য বলছে, এ সবই স্বাভাবিক। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতির কথায়, ‘‘উত্তরপ্রদেশ থেকে ছেলে এনে কুকুরের মতো মারার কথা বলেছিল বিজেপি। মানুষ ভোটে জবাব দিয়েছে।’’ বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সভানেত্রী অন্তরা ভট্টাচার্যের দাবি, ‘‘এখানে ভোট লুঠ করেছে তৃণমূল।’’
ঘাটাল লোকসভার মধ্যে রয়েছে কেশপুর। প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, ঘাটাল লোকসভায় এ বার ভোটের হার ৮২.০৭ শতাংশ। তবে কেশপুরে ভোটের হার ৮৫.২৭ শতাংশ। এখানে ভোটার ছিলেন ২,৫০,৪৩৫ জন। এরমধ্যে ভোট দিয়েছেন ২,১৩,৫৫৩ জন। একের পর এক এলাকায় তরতর করে বেড়েছে ভোটের হার। প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, কেশপুরে মোট ২৭৭টি বুথ রয়েছে। এরমধ্যে ৭১টি বুথেই ৯০ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। ৪টি বুথে আবার ৯৫ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। যেমন বাহানা প্রাথমিক স্কুলের বুথে ৯৬.১১ শতাংশ ভোট পড়েছে। এখানে ৪৮৯ জন ভোটারের মধ্যে ৪৭০ জনই ভোট দিয়েছেন। মজুরদিমা প্রাথমিক স্কুলের বুথে ৯৫.২৯ শতাংশ ভোট পড়েছে। এখানে ৪৮৮ জন ভোটারের মধ্যে ৪৬৫ জন ভোট দিয়েছেন। ঘোষকিরা জুনিয়র হাইস্কুলের বুথে ৯৫.৯৮ শতাংশ ভোট পড়েছে। এখানে ৮২০ জন ভোটারের মধ্যে ৭৮৭ জন ভোট দিয়েছেন। গোবরদা শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের বুথে ৯৫.৭৮ শতাংশ ভোট পড়েছে। এখানে ৬৮৮ জন ভোটারের মধ্যে ৬৫৯ জন ভোট দিয়েছেন।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা মনে করিয়ে দিচ্ছেন, কেশপুর বরাবর শাসক দলকে বিপুল ভোটের লিড দিয়েছে। সে বাম- আমলে হোক কিংবা এই তৃণমূল- আমলে। ২০০১ সালের বিধানসভা ভোটে এই কেশপুর থেকেই রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি লিড পেয়েছিল সিপিএম। ১ লক্ষ ৮ হাজার! তৎকালীন বিরোধী তৃণমূল প্রশ্ন তুলেছিল, অবাধ ভোটে কি এত লিড সম্ভব? সেই কেশপুরেই গত লোকসভার নিরিখে তৃণমূলের লিড ছিল ১ লক্ষ ১৭ হাজার! গত বিধানসভার নিরিখে ১ লক্ষ ১ হাজার। আর গত পঞ্চায়েতের নিরিখে ১ লক্ষ ৬৯ হাজার!
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
ভোটের দিন দিনভর অশান্ত ছিল কেশপুর। সমানে ইটবৃষ্টির পরে দোগাছিয়ায় গুলি চালনার ঘটনা ঘটেছিল। সেখানে কত ভোট পড়েছে? প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, এই এলাকায় দু’টি বুথ রয়েছে। এরমধ্যে দোগাছিয়া প্রাথমিক স্কুলের বুথে ৮৫.৮০ শতাংশ ভোট পড়েছে। আর দোগাছিয়া হাইমাদ্রাসার বুথে ৮২.৫০ শতাংশ ভোট পড়েছে। ‘অনিয়ম’ দেখে পিপুরদার বুথের মধ্যে ভিডিয়োগ্রাফি করেছিলেন ভারতী। সেই পিপুরদা প্রাথমিক স্কুলের বুথে ভোট পড়েছে ৯১.২৪ শতাংশ।
কয়েকটি বুথে অবশ্য তুলনায় কম ভোট পড়েছে। যেমন সিরাজপুর শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের বুথে ৭৪.০৪ শতাংশ ভোট পড়েছে। হরিহরচক শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের বুথে ৭৩.৪৪ শতাংশ ভোট পড়েছে। বাহানায় ২৪০ জন পুরুষ ভোটারের মধ্যে ২৩৮ জনই ভোট দিয়েছেন। কেশপুরের এক তৃণমূল নেতার মন্তব্য, ‘‘মানুষ এখন খুব সচেতন।’’ এক বিজেপি নেতা বলছেন, ‘‘ভোটের হার বেশি তো হবেই। চড়াম চড়াম ঢাক বাজিয়েছে যে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy