Advertisement
১৭ মে ২০২৪

জামশেদ ভবনের অদূরেই চা পান 

খড়্গপুর থেকে চন্দ্রকোনা যাওয়ার পথে মেদিনীপুরের জামতলার কাছে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন বিধায়ক তথা তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা চেয়ারম্যান দীনেন রায়। তাঁকে দেখে গাড়িতে তুলে নেন মুখ্যমন্ত্রী।

চায়ের বিরতি কেশপুরে। নিজস্ব চিত্র

চায়ের বিরতি কেশপুরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কেশপুর শেষ আপডেট: ০৫ মে ২০১৯ ০৩:৫৯
Share: Save:

একদা কেশপুর ‘নিয়ন্ত্রিত’ হতো যেখান থেকে, সিপিএমের সেই কেশপুর জোনাল কার্যালয়, জামশেদ আলি ভবনের অদূরে চা খেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

খড়্গপুর থেকে চন্দ্রকোনা যাওয়ার পথে মেদিনীপুরের জামতলার কাছে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন বিধায়ক তথা তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা চেয়ারম্যান দীনেন রায়। তাঁকে দেখে গাড়িতে তুলে নেন মুখ্যমন্ত্রী। তখনও গন্তব্য ছিল সোজা চন্দ্রকোনা। দুপুর সওয়া দু’টো নাগাদ গাড়ি যখন মেদিনীপুর ছেড়ে কেশপুর ঢুকছে তখন চা খাওয়ার ইচ্ছের কথা জানান মমতা। বলেন, ‘‘একটু ফাঁকা দেখে গাড়ি দাঁড় করাবে। চা খাবো।’’ কেশপুর বাজার পেরিয়ে সিপিএমের জোনাল কার্যালয় জামশেদ আলি ভবনের অদূরে গাড়ি দাঁড়ায়। রাস্তার পাশের এক চায়ের দোকানে চলে যান মমতা। টিনের ছাউনি দেওয়া দোকানের সামনে বসে এক কাপ দুধ চা খান। এরই ফাঁকে মুখ্যমন্ত্রীকে ফোনে কয়েকবার কথা বলতেও দেখা গিয়েছে। সবমিলিয়ে মিনিট পনেরো ছিলেন এখানে। ‘দিদি এসেছেন শুনে চা দোকানে ছুটে আসেন কেশপুরের বিধায়ক শিউলি সাহা, তৃণমূলের কেশপুর ব্লক সভাপতি সঞ্জয় পান, কেশপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শুভ্রা দে সেনগুপ্তরা। মুখ্যমন্ত্রীকে দেখতে মুহূর্তে রাস্তার ধারে ভিড়ও জমে যায়। অনেকে মোবাইল হাতে ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।

‘দিদি’র গাড়িতে কী ভাবে? দীনেনের কথায়, ‘‘জামতলার কাছে দাঁড়িয়েছিলাম। দেখে দিদি গাড়িতে উঠতে বলেন। দিদি বলেন, চন্দ্রকোনা যাচ্ছি। তুমিও চলো।’’ মেদিনীপুর থেকে কেশপুর রাস্তাটি নতুন হয়েছে। প্রায় ৬০ কোটি টাকা খরচ করে রাস্তাটি তৈরি হয়েছে। দীনেন মমতাকে বলেন, "বিধানসভায় তোমাকে বলেছিলাম। তুমি টাকাটা দিয়েছিলে বলেই এই রাস্তাটা হয়েছে।’’ দেখে মমতা জানান, রাস্তাটা ভালই হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আর কী কথা হল? দীনেনের মন্তব্য, ‘‘দলের বিষয়ে কিছু কথা হয়েছে। দিদি যা জানতে চেয়েছেন, সবই জানিয়েছি।’’ মেদিনীপুরে মানস ভুঁইয়া কেমন প্রচার করছেন, তাও না কি জানতে চেয়েছেন মমতা। দীনেন তাঁকে জানান, প্রচার ভালই হয়েছে। এই প্রসঙ্গে দীনেন মমতাকে জানান, আজ, রবিবার সাংসদ শান্তা ছেত্রী সালুয়ায় প্রচারে আসবেন। সালুয়ায় অনেক নেপালি ভোটার রয়েছেন। শুনে মুখ্যমন্ত্রী দীনেনকে প্রচারের সব দিক ভাল ভাবে দেখে নিতে বলেছেন। তাঁকে কেশিয়াড়ি, নারায়ণগড়ে যাওয়ার কথাও বলেছেন তৃণমূলনেত্রী।

২০০১ সালে এই কেশপুরকেই ‘সিপিএমের শেষপুরবলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর তৃণমূল- সিপিএমের বহু লড়াইয়ের সাক্ষী থেকেছে এই এলাকা। ২০১১ সালে গোটা রাজ্যে পরিবর্তনের হাওয়া থাকলেও কেশপুর ছিল সিপিএমের দখলে। তবে গত বিধানসভা ভোটে কেশপুর থেকে জিতেছে তৃণমূল। অবশ্য ২০১১ সালের পর থেকেই কেশপুরে বামেদের তেমন কর্মসূচি নেই। মমতার এখানে আসা নতুন নয়। ফের একবার এলেন তিনি।

জামশেদ আলি ভবনও দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। লোকসভা ভোটের মুখে মাস খানেক আগে খুলেছে। কেশপুরের অন্য কোথাও সেই ভাবে খুঁজে না- পাওয়া গেলেও জামশেদ আলি ভবনে লাল পতাকার সারি রয়েছে। শনিবারও তা পতপত করে উড়েছে। জেলার প্রবীণ বাম নেতা সন্তোষ রাণার দাবি, ‘‘মানুষের ভয় ভাঙছে। আমাদের সামনের পথও সহজ নয়। আঁকা- বাঁকা, কঠিন রাস্তা দিয়েই আমাদের এগোতে হবে। কেশপুরের মানুষও তাঁর অধিকার বুঝে নেবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE