Advertisement
E-Paper

ভোট সামলে দিয়ে মহিলা ভোটকর্মীরা আত্মবিশ্বাসী

গড়বেতার একটি মহিলা পরিচালিত বুথের সেকেন্ড পোলিং অফিসার ছিলেন স্কুল-শিক্ষাকর্মী সোনালি সিংহ। কেমন ছিল ভোটের অভিজ্ঞতা?

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৯ ০০:০৪

এবারের লোকসভা নির্বাচনে প্রশাসন ভরসা রেখেছিল ‘মহিলা বিগ্রেডে’র উপর। পশ্চিম মেদিনীপুরে মহিলা পরিচালিত মোট বুথের সংখ্যা ছিল ১৭৫। প্রশাসনের সিদ্ধান্ত যে কোনও অংশে ভুল ছিল না, তা কাজ দিয়ে প্রমাণ করেছেন এই সব বুথের মহিলা ভোট কর্মীরা। হোক না প্রথমবার ভোটের কাজ, আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ভোট সামলে, তাঁরাই এখনও আসল ‘তারকা’! কারও পা ফুলে ঢোল, কারও বা হাত ভর্তি কালি। সুস্থভাবে নির্বাচন সেরে মহিলা ভোট কর্মীদের কেউ বাড়ি ফিরেছেন রবিবার গভীর রাতে, কেউ আবার সোমবার সকালে।

গড়বেতার একটি মহিলা পরিচালিত বুথের সেকেন্ড পোলিং অফিসার ছিলেন স্কুল-শিক্ষাকর্মী সোনালি সিংহ। কেমন ছিল ভোটের অভিজ্ঞতা? তিনি বলেন, ‘‘সকাল থেকে দীর্ঘক্ষণ বেঞ্চে বসে থাকার ফলে পা ফুলে গিয়েছিল। ব্যথাও হচ্ছিল। কী আর করা যাবে? ওই অবস্থাতেই ভোট করিয়েছি। সব কাজ মিটিয়ে রাত ২টোয় বাড়ি ফিরে পায়ে ঘণ্টাখানেক বরফ ঘসে ফোলাটা কমিয়েছি।’’ চন্দ্রকোনা রোডের মহিলা পরিচালিত একটি মডেল বুথের প্রিসাইডিং অফিসার ছিলেন শিক্ষিকা শোভনা পট্টনায়েক। তাঁর কথায়, ‘‘প্রথমদিকে একটু ভয়ই করছিল। পরে আর অসুবিধা হয়নি।’’ এখানকারই একটি বুথের মহিলা ভোট কর্মীরা কিছুতেই ইভিএম গালা দিয়ে সিল করতে পারছিলেন না। পরে সেক্টর অফিসার এসে ইভিএম সিল করে দিয়ে যান।

আবার চন্দ্রকোনা রোডেরই একটি বুথে মক-পোল হওয়ার পর ব্যালট ইউনিটে কালি পড়ে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েন মহিলা ভোট কর্মীরা। শেষমেশ সকলের চেষ্টায় সেই কালি তোলা হয়। মহিলা পরিচালিত গোয়ালতোড়ের দু’টি বুথের প্রিসাইডিং অফিসার চুমকি দত্ত ও রিনা ঘটক বলেন, ‘‘ভোটের অভিজ্ঞতা চিরকাল মনে থাকবে। প্রথমদিকে একটু থতমত খেলেও, পরে আত্মবিশ্বাস চলে আসায় আর অসুবিধা কিছু হয়নি।’’ গড়বেতার একজন মহিলা ভোট কর্মীর অভিজ্ঞতা আবার বিচিত্র! ভোটারদের আঙুলে কালি দেওয়ার কাজ করছিলেন তিনি। ‘‘হাতের তালুতেও কালি লেগে গিয়েছিল। তারপর অজান্তে সেই হাত দিয়েই মুখ মুছেছি। সারা মুখে কালি লেগে থাকতে দেখে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরাও হাসতে থাকেন। সেই কালি তিনদিন পরেও রয়ে গিয়েছে।’’,ভো বলছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, লাইনে দাঁড়ানো ভোটারদের থেকেও টিপন্নি শুনতে হয়েছে তাঁকে। গড়বেতার শান্তা চট্টোপাধ্যায়, চন্দ্রকোনা রোডের দীপিকা মাঝি, হৈমন্তী উপাধ্যায়রা এবারই প্রথম ভোটের দায়িত্ব পালন করলেন। তাঁদের কথায়, ‘‘প্রথম প্রথম ভয় করলেও এ এক অন্য অভিজ্ঞতা! কাজটা না করলে কীভাবে ভোট হয় হয়তো জানতেই পারতাম না। সুযোগ পেলে ফের ভোটের কাজ করতে চাই।’’ গড়বেতা ৩ ব্লকের সেক্টর অফিসার ছিলেন দেবারতি মাইতি। তাঁর কথায়, ‘‘প্রথমদিকে মহিলারা বেশ ভয়ই পাচ্ছিলেন। তাঁদের বারবার মনোবল বাড়ানোর চেষ্টা করি, পরে তাঁরাই বুথে বসে দক্ষতার সঙ্গে ভোট পরিচালনা করেন।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

সকলের অভিজ্ঞতা ভিন্ন হলেও, মহিলা ভোটকর্মীরা সকলে একটি বিষয়ে একমত! তাঁদের মতে, মহিলা পরিচালিত পৃথক বুথ যখন করাই হচ্ছে, তখন ইভিএম, ভিভিপ্যাট বা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তোলা এবং তা জমা করার জন্য জেলার ডিসিআরসি কেন্দ্রে মহিলাদের জন্য পৃথক কাউন্টার করা দরকার। নয়তো ভোটের পর পুরুষ ভোটকর্মীদের সঙ্গে এক লাইনে দাঁড়িয়ে হুড়োহুড়ি করে জমা করতে বড্ড অসুবিধা হয়— বলছিলেন তাঁরা। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘মহিলা ভোটকর্মীদের এই দাবি যুক্তিপূর্ণ। বিষয়টির উপর আমাদের নজর থাকবে।’’

Lok Sabha Election 2019 Women Workers Polling Officer Midnapore
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy