Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Loot

ভাড়া নিয়ে বচসার জেরে দোকান ‘লুটের’ অভিযোগ

ওষুধ দোকানের সাইনবোর্ড খুলে সেরাজুল নিজের দোকানের ব্যানার লাগিয়ে দেয় বলেও দাবি করেছেন সঞ্জীব। সঞ্জীব গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বহু লক্ষ টাকার ওষুধ এবং সামগ্রী লুট করেছে দুষ্কৃতীরা। আমি এই বিষয়ে ব্যবসায়ী সমিতি এবং পুলিশকে জানিয়েছে।’’

রাস্তা আটকে বিক্ষোভ ব্যবসায়ী সমিতির। নিজস্ব চিত্র

রাস্তা আটকে বিক্ষোভ ব্যবসায়ী সমিতির। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০২:২৪
Share: Save:

ঘরের ভাড়া নিয়ে বচসার জেরে পাঁশকুড়ায় একটি দোকানের সামগ্রী ‘লুট’ করার অভিযোগ উঠল ঘর মালিকের বিরুদ্ধে।

স্থানীয় সূত্রের খবর, পাঁশকুড়া স্টেশন বাজার এলাকায় একটি ঘর ভাড়া নিয়ে প্রায় পাঁচ দশক ধরে হোমিওপ্যাথি ওষুধের দোকান চালাতেন পাঁশকুড়ার খণ্ডখোলা গ্রামের বাসিন্দা গঙ্গানারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়। ২০০৪ সাল থেকে দোকানের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন গঙ্গানারায়ণের ছেলে সঞ্জীব। তাঁর দাবি, বাড়িটির মালিক শেখ সেরাজুল ইসলাম খানের সাথে তাঁর প্রতি তিন বছর অন্তর তিন শতাংশ হারে ভাড়া বৃদ্ধির চুক্তি হয়েছিল। ২০১২ সালে শেষ বার দোকানের ভাড়া সংক্রান্ত চুক্তিপত্র সই হয় বলে জানিয়েছেন সঞ্জীব।

সঞ্জীবের অভিযোগ, ২০১৫ সালের অগস্ট থেকে সেরাজুল তাঁর কাছ থেকে চুক্তির বাইরেও বেশি ভাড়া দাবি করে নানা শর্ত আরোপ করেন। ঘর মালিকের এই নতুন ভাড়া এবং শর্তে রাজি না হওয়ায় সেরাজুল তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে সঞ্জীবের কাছ থেকে দোকানের ভাড়া নেননি বলে দাবি। সঞ্জীবের দাবি, এই পরিস্থিতিতে গত বছর অক্টোবর থেকে পুরনো ভাড়ার তিন শতাংশ বেশি হারে ভাড়া তিনি ঘর মালিকের নামে তিন বার মানি অর্ডার করে পাঠিয়েছিলেন।

দোকানটির অন্য একটি ঘরে সেরাজুল নিজের ব্যবসার পাশাপাশি পরিবার নিয়ে বাস করেন। মঙ্গলবার রাত্রি সাড়ে ১১টা নাগাদ সেরাজুল ৪০-৫০ জন দুষ্কৃতীদের নিয়ে সঞ্জীবদের হোমিওপ্যাথি ওষুধ দোকানে ‘লুটপাট’ চালায় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে সঞ্জীব ও তাঁর পরিবারের লোকজন ওই রাতেই ঘটনাস্থলে আসেন। সঞ্জীবদের অভিযোগ, দুষ্কৃতীদের হাতে লাঠি ও লোহার রড থাকায় তাঁরা ভয়ে এলাকা ছেড়ে চলে যান। এর পরেই সেরাজুলের নেতৃত্বে দোকানটির ওষুধপত্র এবং অন্য সরঞ্জাম ‘লুট’ করে গাড়িতে করে পাচার করা হয় বলে অভিযোগ। পাশাপশি, ওষুধ দোকানের সাইনবোর্ড খুলে সেরাজুল নিজের দোকানের ব্যানার লাগিয়ে দেয় বলেও দাবি করেছেন সঞ্জীব। সঞ্জীব গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বহু লক্ষ টাকার ওষুধ এবং সামগ্রী লুট করেছে দুষ্কৃতীরা। আমি এই বিষয়ে ব্যবসায়ী সমিতি এবং পুলিশকে জানিয়েছে।’’

জিনিসপত্র দোকানের বাইরে বের করে দেওয়ার কথা মেনেছেন সেরাজুল। কিন্তু জিনিস ‘লুটে’র অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘সঞ্জীব নিয়মিত ভাড়া দিতেন না, তাই পুলিশের উপস্থিতিতে আমি ওঁর দোকানের মালপত্র বাইরে বার করে দিয়েছি।’’ ঘটনায় পাঁশকুড়া থানার এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, ঘটনায় বুধবার রাত পর্যন্ত থানায় অভিযোগ দায়ের হয়নি। তবে তারা জানিয়েছে, রাতে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল।

দোকানে ‘লুটে’র প্রতিবাদে বুধবার এলাকার রাস্তা অবরোধ করে স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতি। ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। পরে সঞ্জীবদের বন্ধ করে দেওয়া দোকান ফের খোলা হয়। ‘লুট’ হওয়া জিনিস ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছে ব্যবসায়ী সমতি। এ নিয়ে তাঁরা পাঁশকুড়ার পুরপ্রধান নন্দকুমার মিশ্রের দ্বারস্থ হবে বলে জানিয়েছেন পাঁশকুড়া স্টেশন ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সম্পাদক সফিউল ইসলাম। নন্দবাবু জানিয়েছেন, পুলিশকে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Loot Shop Owner Rent Problem
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE