প্রতীকী ছবি।
অতিমারির ক্ষত এখনও মেলায়নি। স্কুল, নিয়মিত পড়াশোনা— সবই ধাক্কা খেয়েছে একটা দীর্ঘ সময়। সে সব সামলে আজ জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় বসছে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সারা হয়েছে যাবতীয় প্রস্তুতি।
মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নির্দেশ মেনে ভিড় এড়াতে পরীক্ষাকেন্দ্র যেমন বাড়ছে, তেমনই প্রতিটি কেন্দ্র জীবাণুমুক্ত করা, পড়ুয়াদের মাস্ক পরা, থার্মাল গানে তাপমাত্রা মাপা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। দূরত্ব বিধি মেনে যাতে পরীক্ষার্থীরা বসে, স্কুলগুলি সেই ব্যবস্থাও করেছে। শালবনির জয়পুর হাইস্কুলে এ বারই প্রথম মাধ্যমিকের পরীক্ষা কেন্দ্র হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রশান্ত মণ্ডল বলেন, ‘‘প্রথম দিন পরীক্ষার্থীর সঙ্গে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকতে পারবেন একজন অভিভাবক। তবে পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে তাঁকে বাইরে চলে যেতে হবে।’’ গড়বেতার ব্যানার্জিডাঙা হাইস্কুলে পরীক্ষা দেবে ৩১০ জন। প্রধান শিক্ষক প্রদ্যোত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘প্রতি বেঞ্চে একজন করে বসবে। কোভিড ও পক্সের জন্য পৃথক আইসোলেশন রুম থাকছে।’’
এ বছরের পরীক্ষার্থীরা দীর্ঘ সময় স্কুলে যেতে পারেনি। ফলে, ঘাটতি থাকছেই। গড়বেতার পরীক্ষার্থী সুদেষ্ণা চক্রবর্তী বলে, ‘‘দু’বছর স্কুল বন্ধ ছিল। সিলেবাস কমানো হলেও স্কুল না হওয়ায় পড়ার অভ্যাসটা চলে গিয়েছিল। মাধ্যমিকটা চ্যালেঞ্জ হিসাবেই নিয়েছি।’’ ঘাটাল বিদ্যাসাগর হাইস্কুলের সোহম সরকারও মানছে, ‘‘স্কুল নিয়মিত হলে প্রস্তুতি সহজ হত।’’ তবে এই যে আবার ছন্দে ফিরছে মাধ্য়মিক, তাতে খুশি সকলেই। ঘাটালের অভিভাবক সুবীর বাগ বলছিলেন, ‘‘দিনের শেষে মাধ্যমিকটা হচ্ছে। ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতের পক্ষে এটা খুব ভাল।’’ পরীক্ষার্থী প্রণব মাহাতো, অহনা ভট্টরাও বলছে, ‘‘সবাই চাইছিলাম পরীক্ষাটা হোক।’’
সবং দশগ্রাম সতীশচন্দ্র সর্বার্থসাধক হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক যুগল প্রধান অবশ্য জুড়ছেন, ‘‘ভাল ছাত্রছাত্রীরা প্রস্তুত। কিন্তু সাধারণ পরীক্ষার্থীরা ভালভাবে প্রস্তুত নয়।’’ ঝাড়গ্রামের বাসিন্দা পেশায় শিক্ষক, অভিভাবক অঞ্জনকুমার মিশ্রও বলছিলেন, ‘‘অনলাইনে পড়াশোনাটাই পড়ুয়াদের কাছে নতুন। ফলে একটা সংশয় থাকছেই।’’ নয়াগ্রামের খড়িকা গ্রামের পরীক্ষার্থী রিয়া গিরি বলে, ‘‘স্মার্টফোনের অভাবে অনলাইন ক্লাস করতে পারিনি। জানি না কেমন পরীক্ষা দেব।’’ লালগড়ের অঙ্কের শিক্ষক পঙ্কজকুমার মণ্ডলের মতে, ‘‘এ বারের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের কাছে সত্যিই কঠিন পরীক্ষা।’’ ঝাড়গ্রামের রানি বিনোদমঞ্জরী বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষিকা পুষ্পলতা মুখোপাধ্যায় মানছেন, ‘‘যতটা সম্ভব চেষ্টা করা হয়েছে। তবে করোনার কারণে ঘাটতিও রয়ে গেল।’’ ঝাড়গ্রামে এ বার সাঁওতালি মাধ্যমে পরীক্ষা দিচ্ছে ১০২ জন। তাদের জন্য ৯টি পরীক্ষা কেন্দ্রে সাঁওতালি জানা পরিদর্শক থাকবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy