Advertisement
১৯ মে ২০২৪

ক্ষুদ্রশিল্পকে বাজার দিতে শালবনিতে কর্মতীর্থ

স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা কাজ করছেন। কিন্তু সে কাজের বাজার কই? তৈরি জিনিস বিক্রি করতে না পেরে ধুঁকছে অনেক গোষ্ঠীই। সেই সঙ্কট কাটাতে শালবনিতে বাজার তৈরি করে দিতে উদ্যোগী হচ্ছে জেলা প্রশাসন।

প্রস্তুতি: কাজ চলছে বাজার তৈরির। নিজস্ব চিত্র

প্রস্তুতি: কাজ চলছে বাজার তৈরির। নিজস্ব চিত্র

বরুণ দে
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৭ ০০:০০
Share: Save:

স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা কাজ করছেন। কিন্তু সে কাজের বাজার কই? তৈরি জিনিস বিক্রি করতে না পেরে ধুঁকছে অনেক গোষ্ঠীই। সেই সঙ্কট কাটাতে শালবনিতে বাজার তৈরি করে দিতে উদ্যোগী হচ্ছে জেলা প্রশাসন। জুলাইয়ের মধ্যেই ‘কর্মতীর্থ’ নামে ওই বাজার তৈরি হয়ে যাবে বলে আশ্বাস দিয়েছে শালবনির বিডিও পুষ্পল সরকার।

শালবনির উপর দিয়েই চলে গিয়েছে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক। রাস্তার ধারেই শালবনি বাজার। সেখানেই ‘কর্মতীর্থ’ গড়ে উঠছে। এলাকায় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সংখ্যা কম নয়। প্রস্তাবিত ‘কর্মতীর্থ’-এ সব মিলিয়ে ২৮টি স্টল থাকবে এখানে। থাকবে একাধিক সভাঘরও। যেখানে স্বনির্ভর দলের সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। এই প্রকল্প গড়ে উঠলে এলাকার স্বনির্ভর দলগুলোর আরও উন্নতি হবে বলেই মনে করছে প্রশাসন।

শালবনির বিডিও পুষ্পল সরকার বলেন, “কর্মতীর্থ তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। স্বনির্ভর দলের সদস্যরা বাজার পাবেন। বিপণনের সুযোগ তৈরি হবে।” শালবনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নেপাল সিংহেরও দাবি, “এই প্রকল্প গড়ে উঠলে এলাকার স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলো অনেক উপকৃত হবে। আরও বহু সদস্যকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা যাবে।”

প্রশাসন সূত্রে খবর, আগামী জুলাই মাসের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়ে যাবে। ব্যয় হবে প্রায় ১ কোটি ২৭ লক্ষ টাকা। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের আশ্বাস, “স্বনির্ভর দলগুলোকে আরও সাবলম্বী ও শক্তিশালী করার সব রকম চেষ্টা চলছে। এটা তারই একটা পদক্ষেপ।”

প্রশাসন সূত্রে খবর, জেলায় সব স্বনির্ভর দল সমান সক্রিয় নয়। অধিকাংশ দল শুধু সঞ্চয়কারী গোষ্ঠীতেই অবস্থান করছে। প্রকৃত স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে পৌঁছতে পারেনি। শালবনির ছবিটাও আলাদা নয়। এক শ্রেণির গোষ্ঠী আবার নিতান্তই নিষ্ক্রিয়। কিন্তু দলগুলির এখন ঠিক কেমন অ বস্থা, কতটা কাজ করে তারা, দলগুলির রোজগারই বা কত— তা জানেন না অনেকেই।

মূলত, গরিব মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতির জন্যই স্বনির্ভর দল গড়া শুরু হয়। দলগুলোর সক্ষমতা বাড়ানো এবং তাদের কাছে ঋণ এবং অনুদানের সুযোগ পৌঁছে দেওয়াই ছিল লক্ষ্য। বিভিন্ন মহলে প্রায়ই অভিযোগ ওঠে, মূলত বিপণনের অভাবেই বহু দল উৎপাদন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়। অনেক সময় ব্যাঙ্কের ঋণ শোধ করাটাও সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।

বিপণনের অভাব যে একটা বড় সমস্যা তা মানছেন জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকও। তাঁর কথায়, “এই সমস্যার সমাধানের জন্যই কর্মতীর্থ। ক্ষুদ্রশিল্পে মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ বেশি রয়েছে। তাই এই শিল্পের প্রসারে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।” তাঁর দাবি, কর্মতীর্থে সারা বছরই কেনাবেচা হবে। ফলে স্বনির্ভর দলের সদস্যরা বাজার পাবেন। পাশাপাশি তাঁর সংযোজন, “এই সময়ের মধ্যে ক্ষুদ্রশিল্প কর্মেও নতুন নতুন বৈচিত্র্য এসেছে। মানুষের রুচির পরিবর্তন হচ্ছে। তাই স্বনির্ভর দলের সদস্যদের উন্নতমানের প্রশিক্ষণ দেওয়া জরুরি। কাজটা শুরুও হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Small Scale Market
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE