Advertisement
E-Paper

অনাদরে মুকুন্দরামের স্মৃতি

ধুলো জমছে সৌধে। হারাতে বসেছে কবিকঙ্কন মুকুন্দরামের স্মৃতি বিজড়িত আনন্দপুরের সোলিডিহার জয়পুরের ঐতিহ্য।মধ্যযুগে বর্ধমানের ডিহিদার কর্তৃক অত্যাচারিত হয়ে কবিকঙ্কন মুকুন্দরাম চক্রবর্তী ব্রাহ্মণভূম পরগনার আড়রাবাগে আসেন।

বরুণ দে

শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৪৯
অরক্ষিত: ধুলো জমেছে হোর্ডিংয়ে। নিজস্ব চিত্র

অরক্ষিত: ধুলো জমেছে হোর্ডিংয়ে। নিজস্ব চিত্র

ধুলো জমছে সৌধে। হারাতে বসেছে কবিকঙ্কন মুকুন্দরামের স্মৃতি বিজড়িত আনন্দপুরের সোলিডিহার জয়পুরের ঐতিহ্য।

মধ্যযুগে বর্ধমানের ডিহিদার কর্তৃক অত্যাচারিত হয়ে কবিকঙ্কন মুকুন্দরাম চক্রবর্তী ব্রাহ্মণভূম পরগনার আড়রাবাগে আসেন। এই পরগনার তৎকালীন জমিদার বাঁকুড়া রায়ের পুত্র রঘুনাথ রায়ের গৃহশিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন তিনি। স্থানীয় আদিবাসী জনগোষ্ঠীর দৈনন্দিন জীবনধারার উপর ভিত্তি করেই তিনি রচনা করেন অন্যতম কাব্য ‘চণ্ডীমঙ্গল’। এখানে জয়চণ্ডীর মন্দির রয়েছে। পাশেই রয়েছে বটবৃক্ষ। জনশ্রুতি রয়েছে, এই বটবৃক্ষ তলে বিশ্রামকালেই চণ্ডীমঙ্গল কাব্য রচনার জন্য মায়ের স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন মুকুন্দরাম। এই জনশ্রুতি লেখা একটি বোর্ডও রয়েছে। দেখভালের অভাবে সেই বোর্ডও এখন ধুলোয় মাখা। ফিকে হতে শুরু করেছে বোর্ডের লেখা।

মন্দির দেখভালের জন্য রয়েছে একটি কমিটি। কয়েক বছর আগে এই কমিটির উদ্যোগে এখানে শিশু উদ্যান তৈরি হয়েছে। যদিও শিশু উদ্যানে পরিচর্যার অভাব রয়েছে। এই চত্বরে থাকা পুকুরও সংস্কারের অভাবে ধুঁকছে। চারপাশে সীমানা প্রাচীর না থাকায় পুরো এলাকাই অরক্ষিত। মন্দির কমিটির অন্যতম কিষনকুমার দাস বলছিলেন, “সরকারি সাহায্য না পেলে সব কিছুর দেখভাল করা কঠিন। সীমানা প্রাচীর না থাকাটা একটা বড় সমস্যা। গত বছরই তো হাতি এসে কলাবাগান নষ্ট করে দিল।” তাঁর কথায়, “এই এলাকায় ইতিহাসের নিদর্শন রয়েছে। প্রাচীন মন্দির, স্থাপত্য রয়েছে। এ গুলো সঠিক ভাবে সংস্কার ও সংরক্ষণ করা জরুরি। না হলে নতুন প্রজন্মের কাছে অনেক কিছুই অজানা থেকে যাবে।” তিনি মনে করিয়ে দিচ্ছেন, “দিন বদলালেও বিস্মৃতির অতল গহ্বরে যাতে সব কিছু হারিয়ে না যায়, সে জন্য উদ্যোগী হওয়া প্রয়োজন।”

কেশপুরের বিধায়ক শিউলি সাহা বলছেন, “কেশপুরের এই এলাকার ইতিহাসকে ধরে রাখার জন্য পদক্ষেপ করা দরকার। এখানে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য আমি রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাবও পাঠিয়েছি।”

যদিও আনন্দপুরে গেলেই সর্বত্র চোখে পড়বে অনাদরের চিহ্ন। প্রাচীন বটবৃক্ষের এ দিকে-সে দিকেও অবহেলার ছাপ স্পষ্ট। স্থানীয়দের মতে, নিয়মিত দেখভাল না হওয়ায় সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেশ কিছু ইতিহাস লোপাট হয়ে গিয়েছে। বেশ কিছু নিদর্শন ধুলোয় মিশে গিয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, যা রয়েছে তাও হারিয়ে যাবে না তো? ব্লক প্রশাসনের আশ্বাস, এই এলাকাকে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলতে পদক্ষেপ করা হবে। এখানে অবশ্য ফি্‌ বছর রাবণ পোড়া-সহ বেশ কিছু কর্মসূচি হয়। সেই সময়ে বেশ কিছু মানুষ উঁকিঝুঁকি দেন ধুলোমাখা ওই বোর্ডে!

Mukundaram Chakrabarti Memories Negligence
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy