Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

সুশ্রী পুরস্কারের দৌড়ে জেলার সাত

চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতাল এবং কেশপুর গ্রামীণ হাসপাতাল— গতবার এই দু’টি হাসপাতাল সুশ্রী পুরস্কারের দৌড়ে ছিল। তবে সেরার তালিকায় শিকে ছেঁড়েনি।

সাতটি হাসপাতালের একটি খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতাল।

সাতটি হাসপাতালের একটি খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতাল।

বরুণ দে
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৭ ০৯:১০
Share: Save:

পরিষেবা আর পরিচ্ছন্নতা, এই দুইয়ের মাপকাঠিতে বিচার করেই হাসপাতালগুলিকে দেওয়া হয় ‘সুশ্রী পুরস্কার’। এ বার এই পুরস্কারের দৌড়ে সামিল পশ্চিম মেদিনীপুরের সাতটি হাসপাতাল। গতবার সংখ্যাটা ছিল দুই। জেলা থেকেই ওই সাতটি হাসপাতালের নাম সুশ্রী পুরস্কারের জন্য রাজ্যে প্রস্তাব করা হচ্ছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরার কথায়, “এই পুরস্কার পেতে গেলে কয়েকটি শর্তপূরণ করতে হয়। এই সাত হাসপাতাল এই সব শর্তপূরণ করেছে। নির্ধারিত মানে পৌঁছেছে। আশা করি, এ বার রাজ্যে সেরা সুশ্রী হাসপাতালের তালিকায় জেলার হাসপাতালও থাকবে।’’

চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতাল এবং কেশপুর গ্রামীণ হাসপাতাল— গতবার এই দু’টি হাসপাতাল সুশ্রী পুরস্কারের দৌড়ে ছিল। তবে সেরার তালিকায় শিকে ছেঁড়েনি। চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতাল রাজ্যে শুধু শংসাপত্র পেয়েছিল। পুরস্কার পায়নি। কেশপুর গ্রামীণ হাসপাতাল শংসাপত্রটুকুও পায়নি। এ বার সেখানে জেলার সাতটি হাসপাতাল নির্ধারিত মানে পৌঁছেছে। দাঁতন গ্রামীণ হাসপাতাল, হিজলি গ্রামীণ হাসপাতাল, ঘাটালের বিদ্যাসাগর গ্রামীণ হাসপাতাল, চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতাল, শালবনি গ্রামীণ হাসপাতাল, ঘাটাল মহকুমা হাসপাতাল এবং খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতাল। এর মধ্যে জেলার মূল্যায়নে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে বিদ্যাসাগর গ্রামীণ হাসপাতাল, ৯৪ শতাংশ। দাঁতন গ্রামীণ হাসপাতাল ৮৮ শতাংশ এবং হিজলি গ্রামীণ হাসপাতাল ৮৫ শতাংশ নম্বর পেয়েছে। এ বার রাজ্যস্তরের দল জেলায় এসে সাতটি হাসপাতালের মূল্যায়ন করবে। প্রকল্পের নোডাল অফিসার তথা জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারঙ্গীর কথায়, “ওই সাতটি হাসপাতালে পরিকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে। পরিবেশেরও সৌন্দর্যায়ন হয়েছে।’’

পরিষেবা, পরিবেশ, রোগী স্বাচ্ছন্দ্য— বিভিন্ন হাসপাতালে এই দিকগুলোই অবহেলিত থাকে। সমস্যায় পড়েন রোগী এবং তাঁদের পরিজনেরা। অনেক হাসপাতালে ন্যূনতম পরিষেবাও মেলে না। দেখা যায়, বিভিন্ন ওয়ার্ডের শৌচাগারগুলোর অবস্থা খুব খারাপ, সব শয্যায় বেড-কভার, মশারি নেই। ওয়ার্ডের আশেপাশেই দাহ্যবস্তু পড়ে রয়েছে, অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র অকেজো। পরিবেশের সৌন্দর্যায়নেও ঘাটতি রয়েছে। অনেক হাসপাতাল চত্বরে, পানীয় জলের সুষ্ঠু ব্যবস্থাটুকু থাকে না।

ছবিটা পাল্টাতেই চালু হয়েছে ‘সুশ্রী’ পুরস্কার। এ ক্ষেত্রে ৬টি মানদণ্ড রয়েছে। ১) পরিকাঠামোগত মান ভাল হতে হবে, ২) উন্নত হতে হবে নিকাশি, ৩) বর্জ্য ব্যবস্থাপন ব্যবস্থা ভাল হতে হবে, ৪) রোগজীবাণুর মোকাবিলায় থাকতে হবে উন্নত পরিকাঠামো, ৫) হাসপাতাল চত্বর হতে হবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, ৬) সচেতনতা প্রসারে উদ্যোগী হতে হবে। মূল্যায়নে অন্তত ৭০ শতাংশ নম্বর পেলে তবেই পুরস্কারের দৌড়ে সামিল হওয়া যায়। মূল্যায়ন হয় ৫০০ নম্বরে। ন্যূনতম ৩৫০ নম্বর পেতে হয়। একাধিকস্তরে মূল্যায়ন হয়। প্রথমে আশেপাশের সমপর্যায়ের কোনও হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের মূল্যায়ন করে। পরে ওই মূল্যায়ন রিপোর্ট জেলায় পৌঁছয়। ৭০ শতাংশ নম্বর থাকলে পরে জেলাস্তরের দল সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে মূল্যায়নে যায়। জেলাস্তরের দলের মূল্যায়নেও যদি ৭০ শতাংশ নম্বর মেলে তবেই সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের নাম সুশ্রী পুরস্কারের জন্য রাজ্যে প্রস্তাব করা হয়। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তার কথায়, “জেলার মূল্যায়ন রাজ্যে স্বীকৃতি পেলে সেটাই হবে বড় প্রাপ্তি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

hospitals Award
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE