Advertisement
E-Paper

মিলিত লড়াইয়ে কলতান ফিরেছে পাখি গ্রামে

জঙ্গলমহলে অশান্তিপর্বে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি গ্রাম ছেড়েছিল পাখিরাও। দিনরাত গুলি, ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণের শব্দে ঘুম উড়েছিল সকলের। দূষণ ছিল পাখি নিধনের আর এক অসুর। বহুদিনের সাধের ‘পাখি গ্রাম’ নামটাই হারাতে বসেছিল শালবনির কুলডিহা। গ্রামের শ্রী রক্ষায় রুখে দাঁড়ান স্থানীয় বাসিন্দারা।

সুমন ঘোষ

শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:২১
এই পুকুর পাড়ের গাছেই পাখপাখালির বাস। নিজস্ব চিত্র।

এই পুকুর পাড়ের গাছেই পাখপাখালির বাস। নিজস্ব চিত্র।

জঙ্গলমহলে অশান্তিপর্বে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি গ্রাম ছেড়েছিল পাখিরাও। দিনরাত গুলি, ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণের শব্দে ঘুম উড়েছিল সকলের। দূষণ ছিল পাখি নিধনের আর এক অসুর। বহুদিনের সাধের ‘পাখি গ্রাম’ নামটাই হারাতে বসেছিল শালবনির কুলডিহা। গ্রামের শ্রী রক্ষায় রুখে দাঁড়ান স্থানীয় বাসিন্দারা। সকলের মিলিত প্রচেষ্টায় ফের পাখির কলকাকলিতে মুখরিত কুলডিহা।

শহরাঞ্চল তো দুর অস্ত, এখন প্রত্যন্ত এলাকাতেও পাখির দেখা মেলা ভার। হারিয়ে যেতে বসেছে চড়াই, বকের মতো নানা প্রজাতির পাখি। তবু কুলডিহা এখনও পাখির ডাকে ঘুমোয়, পাখির ডাকেই জাগে! সারাদিন পাখির কিচিরমিচির যেন এ গ্রামের আবহসঙ্গীত। স্থানীয় বাসিন্দা জ্যোতিপ্রসাদ মাহাতো জানালেন, দীর্ঘ লড়াইয়েই পাখিদের বাঁচিয়ে রাখতে পেরেছেন। না হলে সব হারিয়ে যেত।

কেমন সেই লড়াই? এক সময় রাসায়নিক সার, কীটনাশক ছাড়া চাষের কথা ভাবাই যেত না। সেই দূষণে কমছিল পাখি। তাই গ্রামবাসী একজোট হয়ে ঠিক করেন, চাষজমিতে আর কীটনাশক নয়। ফল একে একে গ্রামে পাখি ফিরতে লাগল।

পাখিরা যাতে বিরক্ত না হয় সে জন্য গ্রামের কোনও অনুষ্ঠানে তারস্বরে মাইক বাজানো, শব্দবাজি ফাটানো নিষিদ্ধ। গ্রামের বাসিন্দা প্রৌঢ় বুদ্ধেশ্বর মাহাতো জানালেন, “অন্যান্য চাষের সঙ্গে সামান্য গম চাষও করি। পাখি যে গমের দানা খেতে পছন্দ করে। পায়রার জন্য বাড়ির সামনে ধান, চালও ছড়িয়ে রাখি।” একবার গ্রামে এসে একজন টিয়াপাখি শিকার করায় গ্রামের সকলে ঘিরে ধরেন। তারপর থেকে চলে কড়া নজরদারি।

গ্রামের বাসিন্দা ছাত্র দীনবন্ধু মাহাতোর কথায়, “এখন সবাই জেনে গিয়েছেন আমাদের গ্রাম থেকে লোভনীয় টিয়া ধরে নিয়ে যাওয়াও সম্ভব নয়। সারস, শামুকখোল শিকারও অসম্ভব। তাই কেউ পাখি শিকারে এ পথে আসেন না।” যে পুকুর পাড়ের গাছে পাখপাখালির বাসা তার পাড় বাঁধনো ও আরও গাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। শালবনির বিডিও পুস্পল সরকারও মানছেন, “পাখিদের আশ্রয় দিয়ে গ্রামটি একটি স্বতন্ত্র পরিচয় লাভ করেছে।”

Kuldiha Pakhi Gram Migratory Birds
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy