দুয়ারে সরকার কর্মসূচী। —ফাইল চিত্র।
'দুয়ারে সরকার' শিবিরে পরিযায়ী শ্রমিকদের নাম নথিভুক্ত করায় জোর দিয়েছে রাজ্য সরকার। শিবিরে গিয়ে নির্দিষ্ট ফর্ম সংগ্রহ করে তা পূরণ করতে হচ্ছে পরিযায়ী শ্রমিকদের। জমা দিতে হচ্ছে প্রয়োজনীয় নথি। কিন্তু রাজ্য সরকারের ওই ফর্ম বিলি না কি চলছে তৃণমূলের কার্যালয়ে! এমনই অভিযোগ কোলাঘাটে। স্থানীয়দের একাংশের দাবি, শাসক দলের নেতাদের একাংশে বাড়ি বাড়ি গিয়েও ফর্ম বিলি করছেন। এ বিষয়ে কোলাঘাটের বিডিওকে নালিশ করেছে পরিযায়ী শ্রমিক সমিতি।
২০২০ সালে লকডাউনের সময় ভিন্ রাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকেরা বাড়ি ফেরেন। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর শ্রমিকদের ভিন্ রাজ্যে যাওয়া আটকাতে পারেনি রাজ্য সরকার। সম্প্রতি বিশ্ব বাংলা মেলা প্রাঙ্গন থেকে মুখ্যমন্ত্রী পরিযায়ী শ্রমিকদের বিমার পাশাপাশি, একাধিক সরকারি সুবিধা প্রদানের কথা ঘোষণা করেন। সেই সমস্ত সুবিধা পেতে পরিযায়ী শ্রমিকদের সরকারের কাছে নাম নথিভুক্ত করার আহ্বান জানান তিনি। তাই এবার 'দুয়ারে সরকার' শিবিরে চলছে নাম নথিভুক্ত করার কাজ। শিবির থেকে ফর্ম সংগ্রহ করে সেটি পূরণ করে প্রয়োজনীয় নথিপত্র যুক্ত করে আবার সেটি ওই শিবিরেই জমা করতে হচ্ছে।
কিন্তু পরিযায়ী শ্রমিকদের অভিযোগ, কোলাঘাট ব্লকের সর্বত্র তৃণমূলের বুথ কার্যালয় থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের ফর্ম বিলি করা হচ্ছে। এমনকী, শাসক দলের নেতার ওই ফর্ম নিয়ে বাড়ি বাড়ি জনসংযোগ কর্মসূচি শুরু করে দিয়েছেন। সরকারি ফর্ম রাজনৈতিক দলের নেতাদের হাতে কেন থাকবে, সেই প্রশ্ন উঠেছে। শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবিদাওয়া আদায়ের জন্য পরিযায়ী শ্রমিক সমিতি নামে একটি সংগঠন রয়েছে। ওই সংগঠনের তরফে কোলাঘাটের বিডিওকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সংগঠনের উপদেষ্টা নারায়ণচন্দ্র নায়ক বলেন, ‘‘সরকার বিজ্ঞাপন দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে দুয়ারে সরকার শিবিরে গিয়ে ফর্ম সংগ্রহ করার জন্য। অথচ কোলাঘাটে শাসক দলের নেতারা বাড়ি বাড়ি ফর্ম বিলি করছেন। তৃণমলের বুথ কার্যালয়গুলি থেকেও ওই ফর্ম পাওয়া যাচ্ছে। এতে পরিযায়ী শ্রমিকরা বিভ্রান্ত হচ্ছেন।’’
বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করছে বিজেপিও। বিজেপির জেলা সম্পাদক (তমলুক) দেবব্রত পট্টনায়েক বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার যদি উপযুক্ত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করত, তাহলে শাসক দলের নেতাদের বাড়ি বাড়ি ফর্ম বিলি করতে হত না। তৃণমূল সরকার শিল্পের দিকে মন দিক। যাতে পরিযায়ীরা এ রাজ্যে ফিরে কাজ পেতে পারেন। না হলে সারা জীবন ওদের ফর্ম হাতে নিয়ে রাজনীতি করতে হবে।’’
ব্লক প্রশাসন অবশ্য এ বিষয়ে কোনও ভুল দেখছে না। তাদের বক্তব্য, ফর্ম যেখান থেকে খুশি সংগ্রহ করতে পারেন পরিযায়ী শ্রমিকেরা। কোলাঘাটের বিডিও অর্ঘ্য ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা পরিযায়ী শ্রমিকের নাম নথিভুক্তকরণের ফর্মের পিডিএফ সমস্ত হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে শেয়ার করেছিলাম। বলেছিলাম ওই পিডিএফ থেকে ফর্ম প্রিন্ট করে নিয়ে এলেও হবে। এমনকী, শ্রম দফতরকে বলা হয়েছিল যে বা যাঁরাই ফর্ম চাইবেন তাঁদের তা দিতে। আমাদের লক্ষ্য যাতে একজনও পরিযায়ী শ্রমিক বাদ না পড়েন। ফর্ম কার কাছ থেকে তিনি নিচ্ছেন, সেটা বড় কথা নয়।’’ একই দাবি কোলাঘাট তৃণমূল নেতৃত্বরও। তৃণমূলের কোলাঘাট ব্লক সভাপতি অসীম মাজি বলেন, ‘‘আমরা দলীয় ভাবে কোনও ফর্ম বিলি করিনি। বিডিও বলেছেন জেরক্স ফর্মেও আবেদন করা যাবে, তাই কেউ কেউ ফর্ম জেরক্স করে নিয়ে বিলি
করতে পারেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy