Advertisement
E-Paper

ফার্মাসিস্টে চলছে মিনি আউটডোর

তমলুক শহরের আবাসবাড়ির বাসিন্দা শশাঙ্কবাবুর কাছে অসুস্থতার বিবরণ শুনে তাঁকে ট্যাবলেট দিলেন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ফার্মাসিস্ট সন্দীপ রাউৎ।

আনন্দ মণ্ডল

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০১৮ ০০:৫৯
ব্যস্ত: রোগী দেখছেন সন্দীপবাবু। নিজস্ব চিত্র

ব্যস্ত: রোগী দেখছেন সন্দীপবাবু। নিজস্ব চিত্র

মাথাব্যাথায় কষ্ট পাওয়া প্রৌঢ় শশাঙ্ক নায়েক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসেছিলেন ওষুধ নিতে। তমলুক শহরের আবাসবাড়ির বাসিন্দা শশাঙ্কবাবুর কাছে অসুস্থতার বিবরণ শুনে তাঁকে ট্যাবলেট দিলেন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ফার্মাসিস্ট সন্দীপ রাউৎ। একইভাবে আবাসবাড়ির অনিতা সামন্ত স্বামীর পেটের অসুখ হয়েছে বলায় তাঁকেও ওযুধ দিলেন ওই ফার্মাসিস্ট।

কোনও প্রত্যন্ত এলাকা নয়, তমলুকে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের অফিস চত্বরে চিকিৎসক ছাড়া এ ভাবে অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসা চলছে। গত কয়েক বছর ধরেই জেলা হাসপাতালের অধীনে থাকা এই মিনি আউটডোরে এমন অবস্থা চলছে বলে জানালেন এখানে আসা রোগীরা। এ ভাবে চিকিৎসক ছাড়া রোগীদের চিকিৎসা চালানোর ঘটনায় রোগীর পরিবারের লোকজন তো বটেই, হাসপাতালের কর্মীদের একাংশ ক্ষুব্ধ। ওই কর্মীদের অভিযোগ, চিকিৎসকের বদলে ফার্মাসিস্টকে দিয়ে রোগীর চিকিৎসা শুধু বিপজ্জনক নয়, বেআইনি। মিনি আউটডোরে চিকিৎসকের ব্যবস্থা করার জন্য দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, তমলুক পুরসভার অফিসের ঠিক উল্টো দিকে তমলুক-পাঁশকুড়া রাজ্য সড়কের পাশেই জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কার্যালয়। আগে এখানেই ছিল তমলুক মহকুমা হাসপাতাল। পরবর্তী সময়ে শহরের ধারিন্দা এলাকায় ওই হাসপাতাল চলে যায়। আর পুরনো ওই হাসপাতাল ভবনে স্বাস্থ্য দফতরের অফিস চালু করা হয়। সেখানেই এখন চলছে জেলা মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিকের কার্যালয়। স্বাস্থ্য দফতরের ওই অফিস চত্বরে রয়েছে জেলা হাসপাতালের মিনি আউটডোর। সেখানে দীর্ঘদিন ধরেই হাসপাতালের একজন চিকিৎসক, একজন ফার্মাসিস্ট, নার্স ও গ্রুপ-ডি কর্মী থাকতেন রোগীদের চিকিৎসার জন্য। শহরের আবাসবাড়ি, পায়রাটুঙি, পদুমবসান ও শহর সংলগ্ন কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা ওই মিনি আউটডোরে এসে চিকিৎসা করাতেন। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরেই ওই মিনি আউটডোরে হাসপাতাল থেকে চিকিৎসক, নার্স আসা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। কেবলমাত্র একজন ফার্মাসিস্ট ও একজন গ্রুপ-ডি কর্মী আসেন জেলা হাসপাতাল থেকে।

প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে বেলা ১২ টা পর্যন্ত মিনি আউটডোর খোলা থাকে রোগীদের চিকিৎসার জন্য। বৃহস্পতিবার সকালে মিনি আউটডোরে গিয়ে দেখা যায় সেখানে রোগীদের অসুস্থতার বিবরণ শুনে ওষুধ দিচ্ছেন ফার্মাসিস্ট সন্দীপ রাউৎ। তাঁকে সাহায্য করার জন্য রয়েছেন এক গ্রুপ-ডি কর্মী।

এভাবে কি রোগীদের চিকিৎসা করা উচিত? সন্দীপবাবু এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এখানে এসেছি। এর বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।’’ কিন্তু রোগীর চিকিৎসায় কোনও বিপদ হলে তার দায় কে নেবে? সন্দীপবাবুর দাবি, এখানে সাধারণত পেট খারাপ, জ্বর, সর্দি-কাশির মতো সাধারণ অসুস্থদের ওষুধ দেওয়া হয়। একটু বেশি অসুস্থ হলে জেলা হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘মিনি আউটডোরটি জেলা হাসপাতালের একটি সম্প্রসারিত বিভাগ। তবে অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসকের অভাব থাকায় এটি আপাতত স্বাস্থ্যকর্মীদের দিয়ে চালু রাখা হয়েছে। এখানে আয়ুর্বেদিক ও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক নিয়োগ করে আয়ুশ চিকিৎসা কেন্দ্র চালু করার জন্য রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। দফতরের সম্মতিও মিলেছে।’’

Pharmacist Mini Outdoor Doctor
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy