প্রতীকী ছবি।
মশা মারতে অরণ্যশহরে নিবিড় কর্মসূচি নিয়েছে ঝাড়গ্রাম পুরসভা। কিন্তু সেই কর্মসূচিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বর্ষা নামতে না নামতেই মশা-মাছির উৎপাত বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। এমনই অভিযোগ বাসিন্দাদের।
তাঁদের দাবি, প্রতিদিনই প্রায় বৃষ্টি হচ্ছে কম বেশি। অথচ শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে নালা নর্দমাগুলোতে থিকথিক করছে আবর্জনা। নর্দমার নোংরা সাফ হচ্ছে না। তার উপরই মশা নাশক স্প্রে করে চলে যাচ্ছেন পুরকর্মীরা। কোথাও কোথাও আবার সেটুকুও করা হচ্ছে না।
পর্যটন শহরের নিকাশির স্বাস্থ্য ফেরাতে পুরসভা নানা পদক্ষেপ করেছে বলে দাবি। তবে কাজের কাজ কতটা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দাদের একাংশ। গত এপ্রিলে জেলা সদরে উন্নীত হয়েছে ঝাড়গ্রাম শহর। তারপরও ছবিটা বিশেষ বদলায়নি। পুরসভার উদ্যোগে বিভিন্ন রাস্তার ধারে পাকা নালা তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু বেশির ভাগ কাজ হয়েছে পরিকল্পনাবিহীন ভাবে। এর মধ্যে বর্ষার আগে মাটি খুঁড়ে বসানো হচ্ছে জল প্রকল্পের পাইপ লাইন। বৃষ্টি হলেই জলকাদায় ঘিনঘিনে পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।
পুরসভা সূ্ত্রের দাবি, স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে মশা-বাহিত রোগ প্রতিরোধে গত ১ মে থেকে শহরের ১৮টি ওয়ার্ডে বাড়ি-বাড়ি সমীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। চলবে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত। প্রথম দফার সমীক্ষায় ১৮টি ওয়ার্ডের ১৪ হাজার ৩৮১টি বাড়িতে তথ্য সংগ্রহ ও সমীক্ষার কাজ হয়েছে। ২০৭টি জায়গা পরীক্ষা করে মশার লার্ভা পাওয়া গিয়েছে। পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি, ৪১টি স্প্রে মেশিন দিয়ে নর্দমা, জমা জলে রাসায়নিক স্প্রে করা হচ্ছে। কিন্তু অভিযোগ, নিয়মিত মশানাশক স্প্রে করা হচ্ছে না।
১৮টি ওয়ার্ডের অরণ্যশহর জুড়ে রয়েছে ২২০ কিলোমিটার রাস্তা। হিসেব মতো শহরে কমপক্ষে চারশো কিলোমিটার দীর্ঘ নর্দমা থাকার কথা। কিন্তু পাকা নর্দমা রয়েছে মাত্র ৪৫ কিলোমিটার। শহরে ৭৫ কিলোমিটার নর্দমা কাঁচা। বাকি এলাকায় নর্দমাই নেই। ফলে, শহরের অভিজাত এলাকা থেকে বস্তি অঞ্চল— নোংরা জলে ভাসে সবই। ভারী বৃষ্টি হলে শহরের কেন্দ্রস্থল পাঁচ মাথার মোড়, সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল চত্বর-সহ বিভিন্ন এলাকায় জল জমে যায়। রাস্তায় উপচে বইতে থাকে নোংরা জল। নিচু এলাকায় গৃহস্থের বাড়ির ভিতরেও জল ঢুকে যায়।
ঝাড়গ্রামের প্রাক্তন পুরপ্রধান সিপিএমের প্রদীপ সরকারের বক্তব্য, “নিকাশির সমস্যা ও রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির জন্য শহরের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টির জল দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। জমা জলে ও নর্দমার নোংরায় মশা-মাছির বাড়বাড়ন্ত হচ্ছে।” গত বছর ঝাড়গ্রাম শহরে মশা-বাহিত জ্বরে আক্রান্ত হন ২৩ জন। মশা বাহিত জ্বরে গত এক বছরে শহরে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। শহরের বাসিন্দা জ্যোৎস্না ভগত, কলেজ পড়ুয়া পার্বতী বেরা বলেন, দিনের বেলাতেও মশা কামড়ায়। সন্ধ্যা হলে মশার উৎপাতে টেকা দায়।
ঝাড়গ্রাম পুরসভার ভাইস চেয়ারপার্সন শিউলি সিংহ বলেন, “মশা মারতে ও মশাবাহিত রোগ ঠেকাতে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।” তাঁর দাবি, নর্দমা নিয়মিত সাফ করা হয়। একাংশ পুরবাসী নর্দমায় নোংরা ফেলে নিকাশির সমস্যা করছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy