Advertisement
১১ মে ২০২৪

নন্দীগ্রাম এখনও স্পর্শকাতর, জানান দিল কেন্দ্রীয় বাহিনী

২০০৭ সালে জমিরক্ষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে তৎকালীন রাজ্যের শাসক দল সিপিএম আর প্রধান বিরোধীদল তৃণমূলের দ্বৈরথে উত্তপ্ত ছিল নন্দীগ্রাম। ২০১১ সালে রাজনৈতিক পালাবদলের পর শাসক দল তৃণমূলের দাবি ছিল, নন্দীগ্রামের পরিস্থিতি একেবারে স্বাভাবিক।

খোশ মেজাজে। নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের কিষান মান্ডিতে আরিফ ইকবাল খানের তোলা ছবি।

খোশ মেজাজে। নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের কিষান মান্ডিতে আরিফ ইকবাল খানের তোলা ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৬ ০০:৫৩
Share: Save:

২০০৭ সালে জমিরক্ষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে তৎকালীন রাজ্যের শাসক দল সিপিএম আর প্রধান বিরোধীদল তৃণমূলের দ্বৈরথে উত্তপ্ত ছিল নন্দীগ্রাম। ২০১১ সালে রাজনৈতিক পালাবদলের পর শাসক দল তৃণমূলের দাবি ছিল, নন্দীগ্রামের পরিস্থিতি একেবারে স্বাভাবিক। কিন্তু নন্দীগ্রামের পরিস্থিতি যে এখনও চিন্তায় রেখেছে তার প্রমাণ মিলল সোমবার রাতেই। কারণ বিধানসভা নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরুর আগে জেলা সদর বাদে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার যে এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী এসে পৌঁছেছে সেটা নন্দীগ্রামই।

সোমবার রাতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর এক কোম্পানীর একটি দল গিয়ে পৌঁছায় নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের হরিপুরে। সেখানে সদ্য উদ্বোধন হওয়া সরকারি কিষাণ মান্ডির চত্বরে আবাসনগুলিতে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর একটি দল এসেছে তমলুকে। তমলুক ব্লকের হাকোলা এলাকায় একটি সমবায় সমিতির একাধিক ঘরে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে ওই বাহিনীকে। জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েকদিনের মধ্যে জেলায় আরও কেন্দ্রীয় বাহিনী আসবে । নির্বাচনের আগে জেলায় সব মিলিয়ে মোট ৭ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আসছে টহলদারির জন্য।

২০০৭ সালে জমিরক্ষা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে একসময় উত্তপ্ত ছিল নন্দীগ্রাম। পালাবদলের পর তৃণমূলের নেতাদের দাবি নন্দীগ্রামের পরিস্থিতি এখন একেবারে স্বাভাবিক। কিন্তু সিপিএম, কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের অভিযোগ ছিল তৃণমূলের সন্ত্রাসের জেরে এলাকায় কোনও সভা বা মিছিল করার মত স্বাভাবিক পরিস্থিতি নেই। নির্বাচনের আগে নন্দীগ্রামে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়ে নির্বাচন কমিশন ও জেলা প্রশাসনের কাছে সম্প্রতি স্মারকলিপিও দিয়েছিল দুই বিরোধী দল। নির্বাচনের আগে নন্দীগ্রামে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন কার্যত বিরোধী দলগুলির অভিযোগকে মান্যতা দেওয়া হল বলেই মনে করছে জেলার রাজনৈতিক মহল। নির্বাচন দফতর ও জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরুর আগেই ভোটারদের নিরাপত্তা নিয়ে আস্থা ফেরানোর জন্য বিভিন্ন এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী টহলদারি চালাবে। মূলত যেসব এলাকা আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির দিক থেকে সংবেদনশীল ও গোলমালের আশঙ্কা রয়েছে সেইসব এলাকায় এই বাহিনী আগে থেকেই মোতায়েন করা হচ্ছে।

সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহির দাবি, ‘‘নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরুর আগেই নন্দীগ্রাম-সহ খেজুরি, সুনিয়া, মুগবেড়িয়া-তৃণমূলের সন্ত্রাস কবলিত এমন বেশ কয়েকটি এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলদারির জন্য আমরা দাবি জানিয়েছিলাম। নির্বাচন কমিশন নন্দীগ্রামে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করেছে। কমিশনের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানাচ্ছি।’’ জেলা কংগ্রেস সভাপতি আনোয়ার আলি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের কাছে নির্দিষ্ট খবর ছিল বলেই নন্দীগ্রামে আগে থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’’

সিপিএম ও কংগ্রেসের তোলা সন্ত্রাসের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন নন্দীগ্রাম-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি মেঘনাদ পাল। তাঁর দাবি, ‘‘নন্দীগ্রামের পরিস্থতি স্বাভাবিক। আর নির্বাচনের জন্য শুধু নন্দীগ্রাম নয় বিভিন্ন এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী আসছে। এটা কেন্দ্রীয় বাহিনীর রুটিন টহল। এর সঙ্গে এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বোঝানোর আলাদা কোনও ব্যাপার নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Central Force Nandigram sensitive
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE