বেহাল: খন্দপথে চলা দায় জামনা-পিংলা রাস্তায়। ফাইল চিত্র
প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় প্রচুর রাস্তা তৈরির অনুমোদন পেল জঙ্গলমহলের দুই জেলা। প্রশাসন সূত্রে খবর, দুই জেলায় সব মিলিয়ে প্রায় ১,১০০ কিলোমিটার রাস্তা তৈরির অনুমোদন মিলেছে। সেই মতো পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামের প্রায় সব ব্লকেই রাস্তা তৈরি হবে। রাস্তা তৈরির তোড়জোড়ও শুরু হয়েছে। বেশ কয়েকটি রাস্তার ক্ষেত্রে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শৈবাল গিরি বলেন, “গ্রাম সড়ক যোজনায় রাস্তা তৈরির নির্দিষ্ট প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল। দুই জেলায় প্রায় ১,১০০ কিলোমিটার রাস্তা তৈরির অনুমোদন মিলেছে। কাজ শুরু হবে।’’
জঙ্গলমহলের জেলা পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামের বহু রাস্তার অবস্থাই জীর্ণ। বেহাল রাস্তায় ভোগান্তিতে পড়েন পথচলতি সাধারণ মানুষ। ২০০০ সালে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা চালু করে কেন্দ্রীয় সরকার। অন্তত পাঁচশো বা তার বেশি জনসংখ্যার সব জনপদের জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলাই এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। প্রাথমিক ভাবে কেন্দ্রের ১০০ শতাংশ আর্থিক সহায়তায় প্রকল্পটি চালু হয়েছিল। শর্ত ছিল, রাস্তা তৈরি হলে তার রক্ষণাবেক্ষণ করবে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের সরকার। প্রশাসনের এক কর্তা জানান, শুরুতে পুরো টাকা দিলেও ধাপে ধাপে আর্থিক সহায়তার পরিমাণ কমিয়ে দেয় কেন্দ্র। শেষ পর্যন্ত নরেন্দ্র মোদীর সরকার জানিয়ে দেয়, গ্রামের রাস্তা তৈরির এই প্রকল্পে কেন্দ্র দেবে ৬০ শতাংশ অর্থ। বাকি ৪০ শতাংশ দিতে হবে সংশ্লিষ্ট রাজ্যকে।
এক সময়ে এই প্রকল্পে বরাদ্দের জন্য লড়াই করতে হত জেলাকে। বছর কয়েক হল বরাদ্দের পর বরাদ্দ জুটেছে। আর তা বাস্তবায়িত করতে হিমশিম খেতে হয়েছে প্রশাসনকে। কেমন? ২০০০ থেকে ২০১১ পর্যন্ত অর্থাৎ ১১ বছরে এই প্রকল্পে জেলা রাস্তা তৈরির বরাত পেয়েছিল মাত্র ১৭৬৪ কিলোমিটার। সড়ক যোজনায় রাস্তা পাওয়ার ক্ষেত্রে বঞ্চনার অভিযোগে সোচ্চার হত জেলার বিভিন্ন ব্লক। বরাদ্দ কম আসায় সব ব্লকে চাহিদা অনুযায়ী রাস্তার বরাত দেওয়া সম্ভব হত না। পরে পরে পরিস্থিতি বদলায়। ২০১২-২০১৩ আর্থিক বছরে এই প্রকল্পে একলাফে জেলাকে ১৫১০ কিলোমিটার রাস্তা তৈরির অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। ২০১৩- ২০১৪ আর্থিক বছরে ফের ৯৩০ কিলোমিটার রাস্তার বরাত এসে হাজির হয়। কী ভাবে এত রাস্তার কাজ শেষ করা যাবে তা নিয়ে মাথায় হাত পড়ে প্রশাসনিক কর্তাদের। পরে জেলায় বৈঠক করে পরিকল্পনা মতো কাজ এগোনো হয়।
প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনায় এ বার ১,৮০০ কিলোমিটার রাস্তা করতে চেয়ে দুই জেলা প্রস্তাব পাঠিয়েছিল। রাজ্যের মাধ্যমে কেন্দ্রের কাছে এই প্রস্তাব পাঠানো হয়। এ জন্য ডিপিআর (ডিটেলস প্রোজেক্ট রিপোর্ট) তৈরি হয়। জেলার এক পূর্ত কর্তা মানছেন, “গ্রাম সড়ক যোজনায় পশ্চিম মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামে এ বার ১,৮০০ কিলোমিটার রাস্তা তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছিল। সেই মতো নির্দিষ্ট প্রস্তাবও পাঠানো হয়।’’ শেষমেশ প্রায় ১,১০০ কিলোমিটার রাস্তা তৈরির অনুমোদন মিলেছে। অবশ্য গত আর্থিক বছরে যে সব রাস্তার জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়েছিল, তার একাংশের কাজই এখনও শেষ হয়নি। কয়েকটির গতি শ্লথ। পশ্চিম মেদিনীপুরের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শৈবাল গিরির আশ্বাস, “কিছু রাস্তার কাজ চলছে। নজরদারি রাখা হয়েছে। মার্চের মধ্যেই কাজ শেষ হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy