হাঁসের সঙ্গে নিজস্বী
সমুদ্রে নামতে ভয় পায় বেহালার একাদশ শ্রেণির ছাত্রী মধুশ্রী। তবে বছর শেষের আনন্দ উপভোগ করতে বাবা-মা’র সঙ্গে চলে এসেছে সৈকতশহর দিঘায়। বাবার সমুদ্রস্নান শেষ হতে না হতেই তার বায়না— “অমরাবতী পার্কে যাব।” শুধু মধুশ্রী নয়, দিঘায় আসা বহু পর্যটকদের কাছেই এখন বড় আকর্ষণ এই পার্ক। শীতে তাই ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, কসমস, অ্যাস্টারে সাজানো পার্কটিতে উপচে পড়ছে ভিড়।
সকাল সাড়ে ৭টা থেকে সন্ধে সাড়ে ৭টা পর্যন্ত খোলা থাকে এই পার্ক। টিকিটের দাম ৫ টাকা। পার্কের অন্যতম আকর্ষণ রোপওয়ে। বড়দের জন্য ৫১ টাকা এবং ছোটদের জন্য ৩২ টাকা লাগে। লম্বা লাইন পড়ছে সেখানে। ভিড় হচ্ছে বোটিংয়েও। গাছপালা ও ফুলে ঘেরা এই ঝিলের জলে খেলে বেড়ায় গোটাকুড়ি সাদা হাঁস। রয়েছে শিশুদের জন্য দোলনা আর পক্ষীকেন্দ্রও। তা ছাড়া ঝিলের উপর সাঁকোয় ও ফুলের বাগানের পাশে পর্যটকদের নিজস্বী তোলার ধুম পড়ে গিয়েছে। পার্কের মধ্যে রয়েছে মৎস্য দফতরের ক্যান্টিন। যদিও সবুজ ঘাসের উপরেই সপরিবারে খাওয়াদাওয়া করেন অনেকে। টিকিট কাউন্টারের কর্মী প্রণব জানার কথায়, “সাধারণত প্রতি দিন হাজারখানেক পর্যটক আসেন। তবে বছর শেষের সপ্তাহে প্রবল ভিড় হচ্ছে দিঘায়। ফলে ভিড় বেড়েছে পার্কেও। এখন প্রায় দ্বিগুণ মানুষ আসছেন প্রতি দিন।”
যদিও পার্কের গেম সেন্টারটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় একটু মন খারাপ অনেকেরই। উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগরের আকাইপুর থেকে ছেলে রুদ্রজ্যোতিকে নিয়ে পার্কে এসেছিলেন ধীমান সাধুখাঁ। তাঁর আক্ষেপ, “বছরপাঁচেক আগে এখানে বেড়াতে এসে ছোটদের ভিডিও গেম সেন্টার দেখেছিলাম। ভেবেছিলাম ছেলে সেখানে মজা পাবে। কিন্তু তা তো বন্ধ!” কর্তৃপক্ষের দাবি, মেশিনগুলি বারবার খারাপ হয়ে যাওয়ায় লোকসান হচ্ছিল। সে কারণেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সেন্টারটি। বর্ধমানের সোনু চক্রবর্তীর কথায়, “গত বারও এসেছিলাম। তখন পার্ক জুড়ে অডিও সিস্টেমে গান বাজছিল। পরিবেশটা আরও মানোগ্রাহী ছিল। এ বার তা মিস করছি।” পার্কের দায়িত্বে রয়েছে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ। তাদের এক আধিকারিক বলেন, “প্রযুক্তিগত অসুবিধের কারণে পার্কের অডিও সিস্টেম বন্ধ রয়েছে। শীঘ্রই তা চালু করা হবে।”
আবার কোচবিহারের তিতাস পানিগ্রাহী ও তনুজা লোহার, রাজারহাটের রজত মুখোপাধ্যায়ের খুব পছন্দ হয়েছে পার্কের এই নতুন চেহারা। একই কথা শোনা গিয়েছে অধিকাংশ পর্যটকদের কাছেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy