খড়্গপুরের রাবণ ময়দানে। ছবি: কিংশুক আইচ
করোনার জন্য গত বছর ২০০ কেজির লাড্ডু নেমে এসেছিল ২ কেজিতে। ১৫ ফুটের জায়গায় মূর্তি হয়েছিল ৩ ফুটের। এবার করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কার মধ্যেই রেলশহর খড়্গপুরে ফিরে এল গণেশ আরাধনা। করোনা বিধি রয়ে গেল খাতায়-কলমেই।
মিশ্র সংস্কৃতির শহর খড়্গপুরে গণেশ পুজো ঘিরে প্রতিবারই আলাদা উদ্দীপনা থাকে। করোনা পরিস্থিতির জন্য গত বছর সেই উচ্ছ্বাসে ভাটা পড়েছিল। অনুমতির অভাবে অধিকাংশ ক্লাব পুজোই করেনি। মূর্তি থেকে মণ্ডপ— কোথাও দেখা যায়নি বিশেষত্ব। হয়নি অনুষ্ঠান। এবার সংক্রমণ তুলনায় কমলেও রয়েছে তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা। তবে মিলেছে পুজোর অনুমতি। তাতেই ফিরে এল জাঁক, থিম। করোনা বিধি শিকেয় তুলে দেখা গেল ভিড়। অনেকের মুখে মাস্কও ছিল না। তবে বাস্তবে না হলেও কর্মকর্তাদের মুখে অবশ্য করোনা বিধিকে পালনের কথা শোনা গিয়েছে।
এদিন শহরে সবচেয়ে নজর কেড়েছে গুরুদ্বার সংলগ্ন সাইন স্টার বয়েজ ক্লাবের পুজো। ২০১৯ সালে ২০১ কেজির লাড্ডু ছিল এই পুজোর মূল আকর্ষণ। ২০২০ সালে ২ কেজির লাড্ডু উৎসর্গ করে পুজো হয়েছিল। এবার লাড্ডুর ওজন ছিল ২১১ কেজি। উদ্বোধন করেন পুরপ্রশাসক প্রদীপ সরকার ও আইসি বিশ্বরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে ভিড়ে ঠাসা মণ্ডপে কমিটির অধিকাংশ কর্মকর্তা, এমনকি পুরপ্রশাসকের মুখেও দেখা যায়নি মাস্ক। পুজোটির অন্যতম কর্মকর্তা বিকাশ গুপ্তের দাবি, “উদ্বোধন বলে একটু ভিড় হয়ে যাওয়ায় কিছু ভুল হয়ে গিয়েছে।” পুরপ্রশাসক প্রদীপের কথায়, ‘‘খড়্গপুরে করোনা অনেক নিয়ন্ত্রণে। প্রতিটি পুজো কমিটিকেই করোনা বিধি পালনের জন্য বলেছি। আমাদের আরও সচেতন হতে হবে।”
শহরের খরিদা, কুমোরপাড়া, ভগবানপুর, ইন্দা, ঝাপেটাপুর, সুভাষপল্লি-সহ প্রায় সব জায়গাতেই এদিন ধরা পড়েছে করোনা বিধি ভাঙার ছবি। ভগবানপুরের নভজাভান সেবা সঙ্ঘের পুজো কমিটির সভাপতি ভরতকুমার চৌধুরী-সহ অনেকের মুখেই মাস্ক ছিল না। কেন? ভরতের জবাব, “বাড়ির কাছে পুজো বলে এই সবেই মাস্ক খুলেছি। অন্য সময়ে বিধি মেনেই সব কিছু হচ্ছে।” ছত্তিসপাড়ার বাঙ্গাল বয়েজ সেবা সঙ্ঘে ৯ দিন ধরে চলবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ওই কমিটির কর্মকর্তা সঞ্জয় শর্মার মুখেও মাস্ক ছিল না। তাঁর দাবি, “বিধি মানছি। স্যানিটাইজ়ার আছে। এখন শুধুমাত্র কমিটির লোক আছে বলে মাস্ক খুলেছি। তবে এটা ভুল।” খরিদার বাল গণেশ বয়েজ ক্লাবের পুজোর কর্তা সন্তোষ জৈন তো বলেই দিলেন, ‘‘বিধি পালনের চেষ্টা করছি। কিন্তু করোনা তো এখন নেই!”
খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রানা মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, ‘‘প্রতিটি পুজোর ক্ষেত্রেই কমিটিকে করোনা বিধি পালনের নির্দেশ দিয়েছি। সেই নির্দেশিকা পালন হচ্ছে কি না সেটা অবশ্যই খতিয়ে দেখব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy