Advertisement
০৪ মে ২০২৪
দুই শহরে যানজট ঠেকাতে নিদান প্রশাসনের

আর নয় নতুন অটো

রোজ যানজটে হাঁসফাঁস করে দুই শহর। গাড়ির ঠোকাঠুকি লাগে। দিনে দিনে রাস্তা সঙ্কুচিত হওয়ায় সমস্যা আরও বাড়ছে। পরিস্থিতি দেখে মেদিনীপুর এবং খড়্গপুরে আর নতুন করে অটো নামানোর অনুমতি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন।

যানজট: মেদিনীপুরের রাস্তায় অটোর বাড়বাড়ন্ত আর তার জেরে যানজটের ছবি বড্ড চেনা। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

যানজট: মেদিনীপুরের রাস্তায় অটোর বাড়বাড়ন্ত আর তার জেরে যানজটের ছবি বড্ড চেনা। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৪৫
Share: Save:

রোজ যানজটে হাঁসফাঁস করে দুই শহর। গাড়ির ঠোকাঠুকি লাগে। দিনে দিনে রাস্তা সঙ্কুচিত হওয়ায় সমস্যা আরও বাড়ছে। পরিস্থিতি দেখে মেদিনীপুর এবং খড়্গপুরে আর নতুন করে অটো নামানোর অনুমতি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। সম্প্রতি আরটিএ (রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি) বোর্ডের এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে।

মেদিনীপুর এবং খড়্গপুর শহরে যে নতুন করে অটো নামানোর অনুমতি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে তা মানছে জেলা প্রশাসন। জেলার অতিরিক্ত পরিবহণ আধিকারিক অমিত দত্ত বলেন, “এই দুই শহরে আর নতুন করে অটোর অনুমতি দেওয়া হবে না। গ্রামাঞ্চলে অটো নামাতে চাইলে আবেদন করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে আপত্তির কিছু নেই।”

পরিবহণ দফতরের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছে শহরের অটো ইউনিয়নও। আইএনটিটিইইসি প্রভাবিত অটো মালিক সংগঠনের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা নেতা শশধর পলমল বলেন, ‘‘এই সিদ্ধান্ত আগেই নেওয়া উচিত ছিল। আমরাও এই দাবি জানিয়েছিলাম।’’ পাশাপাশি গ্রামীণ এলাকার পারমিট নিয়ে অটো যাতে শহরে ঢুকতে না পারে, সেই ক্ষেত্রেও নজরদারির দাবি জানিয়েছেন শশধর। এই বিষয়টি নজরে রয়েছে পরিবহণ দফতরেরও। জানা গিয়েছে, গ্রামাঞ্চলে অটো নামানোর অনুমতি চাওয়া যেতে পারে। তবে আবেদনকারীকে ‘মুচলেকা’ দিয়ে জানাতে হবে, তিনি ওই অটো গ্রামাঞ্চলেই চালাবেন, শহরে ঢোকাবেন না। ওই ‘মুচলেকা’-তে কোনও না কোনও জনপ্রতিনিধির সইও থাকতে হবে। অর্থাৎ ওই অটো যে শহরাঞ্চলে চলাচল করলে তার পরোক্ষ দায় সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধির উপরও বর্তাবে।

মেদিনীপুর-খড়্গপুর, দুই শহরে প্রায় ৮০০ অটো চলাচল করে। বছর দুয়েক আগে টোটো চলাচল শুরু করে। যানজট সমস্যা শুরু তখনই। দুই শহরে অটো দৌরাত্ম্যের অভিযোগও নতুন নয়। প্রায় সব অটোই বাড়তি যাত্রী তোলে। ৪ জনের জায়গায় ৮-১০ জন যাত্রী না হলে স্ট্যান্ড থেকে অটো ছাড়ে না। চালকরা বেপরোয়া ভাবে অটো চালান। সব মিলিয়ে প্রাণ হাতে পথ চলতে হয় অটো যাত্রীদের। এই দুই শহরে যানজট সমস্যা নতুন নয়। সব রাস্তায় আলাদা ভাবে ফুটপাথ নেই। বাধ্য হয়ে পথচারীদের রাস্তা দিয়েই হাঁটতে হয়। যত দিন যাচ্ছে, ততই সঙ্কীর্ণ হচ্ছে শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলো। দু’পাশে মাথা তুলছে একের পর এক ছোট ছোট দোকান। এই পরিস্থিতিতে নতুন করে আরও অটো পথে নামলে পরিস্থিতি আরও জটিল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেই আশঙ্কাতেই রাশ টানতে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন।

মেদিনীপুর-খড়্গপুরে আগে এত সংখ্যক অটো চলত না। বছর দুয়েক আগে একলপ্তে বেশ কিছু অটো নামানোর অনুমতি দেওয়া হয়। এরপরই যানজট সমস্যা চরম আকার নেয়। অটো-দৌরাত্ম্য বন্ধে অবশ্য নজরদারি বাড়ানোর আশ্বাস দিয়েছে পরিবহণ দফতর। দফতরের এক জেলা আধিকারিকের কথায়, “নজরদারি চলেই। যে সব চালক নিয়ম ভাঙেন, তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। প্রয়োজনে নজরদারি আরও বাড়ানো হবে।” তিনি বলেন, “নিয়ম না মেনে অটো চালালে কড়া পদক্ষেপই করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Traffic jam New Auto
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE