Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

আত্মীয়াকে ধর্ষণ-খুনে যাবজ্জীবন, সাজা পকসোয়

ঘটনাটি ২০১৫ সালের ১৮ মার্চের। ঘটনাস্থল পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনির এক গ্রাম। নির্যাতনের পরে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ উঠেছিল ওই কিশোরীকে। মেয়েটি আবার সম্পর্কে বাপ্পাদিত্যের বোন।

সাজাপ্রাপ্ত বাপ্পাদিত্য মাহাতো (বাঁ দিকে)। নিজস্ব চিত্র

সাজাপ্রাপ্ত বাপ্পাদিত্য মাহাতো (বাঁ দিকে)। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:২৩
Share: Save:

নাবালিকা আত্মীয়াকে ধর্ষণ করে খুনের দায়ে যাবজ্জীবন সাজা হল এক যুবকের। বাপ্পাদিত্য মাহাতো নামে ওই যুবককে বৃহস্পতিবার দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। শুক্রবার তাকে যাবজ্জীবন সাজা শুনিয়েছেন মেদিনীপুরের পকসো আদালতের বিচারক নবনীতা রায়। মামলার সরকারি আইনজীবী শীর্ষেন্দু মাইতি বলেন, ‘‘ওই যুবককে আজীবন সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আদালত বলেই দিয়েছে, ওই যুবক যতদিন বেঁচে থাকবেন, জেলের ভিতরে থাকবেন।’’

ঘটনাটি ২০১৫ সালের ১৮ মার্চের। ঘটনাস্থল পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনির এক গ্রাম। নির্যাতনের পরে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ উঠেছিল ওই কিশোরীকে। মেয়েটি আবার সম্পর্কে বাপ্পাদিত্যের বোন। ঘটনার সময় তোলপাড় হয়েছিল। অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি উঠেছিল। এ দিন সাজা ঘোষণার সময় আদালতে এসেছিলেন মৃত কিশোরীর বাবা। সাজা শোনার পরে চোখের জল চেপে রাখতে পারেননি তিনি। মেয়েহারা বাবা বলেন, ‘‘এ ভাবে মেয়েটাকে হারাতে হবে ভাবিনি। ফাঁসি হলে আরও খুশি হতাম।’’ ফাঁসি চেয়ে উচ্চ আদালতে যাবেন? তাঁর জবাব, ‘‘দেখি কী করতে পারি। এখনও কিছু ভাবিনি।’’

ঘটনার সময় দশম শ্রেণিতে পড়ত ওই কিশোরী। ধর্ষণের পরে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছিল তাকে। তারপরে মৃতদেহ বস্তাবন্দি করে নিজের ঘরেই রেখে দিয়েছিল বাপ্পাদিত্য। পরে তা উদ্ধার হয়। ঘটনার সময় মেয়েটির বাবা কাজে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। মা আর ভাই গিয়েছিলেন এক আত্মীয়ের বাড়িতে। মেয়েটির পাশেই বাড়ি বাপ্পাদিত্যের। সে বিবাহিত, মেয়েও রয়েছে। ঘটনার দিন মেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়িতে গিয়েছিলেন বাপ্পাদিত্যের স্ত্রী। অভিযোগ ছিল, ওই কিশোরীকে সুযোগ বুঝে বাড়িতে ডেকে নিয়ে আসে বাপ্পাদিত্য। তারপর ধর্ষণ করে। নাবালিকা চিৎকার শুরু করলে সে তাকে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলে। তারপর মৃতদেহ বস্তায়
ভরে ঘরের কোণে রেখে দেয়।
বিকেলে বাড়ি ফিরে ওই কিশোরীর বাবা-মা মেয়ের খোঁজ শুরু করেন। তখন বাপ্পাদিত্য কিশোরীর পরিজনেদের এসে বোঝানোর চেষ্টা করেছিল যে, যে ওই ছাত্রী হয়তো কোথাও চলে গিয়েছে। নিশ্চয়ই ফিরে আসবে।

তবে বাপ্পাদিত্যের কথাবার্তা, গতিবিধি ভাল ঠেকেনি কিশোরীর মায়ের। রাতে তিনি বাপ্পাদিত্যের বাড়িতে যান। ঘরের কোণে বস্তা
দেখে তাঁর সন্দেহ হয় সুভদ্রার। তখনই বস্তা খুলে ভেতরে মেয়ের মৃতদেহ দেখতে পান তিনি। পরিস্থিতি দেখে চম্পট দেয় বাপ্পাদিত্য। পরে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। খুন, ধর্ষণের ধারায় মামলা রুজু হয়। পকসো আইনেও মামলা রুজু হয়। যাবজ্জীবন সাজার পাশাপাশি ওই যুবকের ৫০ হাজার টাকা জরিমানারও আদেশ দিয়েছেন আদালত। পকসো আদালতের বিশেষ সরকারি আইনজীবী গৌতম মল্লিক বলেন, ‘‘নৃশংস ঘটনা। ওই যুবকের উচিত সাজাই হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Punishment Life Term POCSO
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE