Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

হিসেব-বইতে ইংরেজি, ক্ষোভ

বৃহস্পতিবার ছিল পঞ্চায়েতের গ্রামসভার বার্ষিক অধিবেশন। সভায় ২০১৬-’১৭ অর্থবর্ষের হিসেব জন্য বিতরণ করা হয়েছে এই প্রতিবেদন বই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৩৮
Share: Save:

আয়-ব্যয় ও উন্নয়নের বিশেষ প্রতিবেদন বই আকারে প্রকাশ করেছে কাঁথি-৩ ব্লকের দূরমুঠ গ্রাম পঞ্চায়েত। কিন্তু ৫৪ পাতার এই বইকে ঘিরেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। বাংলা ভাষায় মুদ্রিত হিসেব বইটির শেষের দিকের কয়েকটি পাতায় একাধিক প্রকল্পের নাম এবং খরচের বিবরণ ছাপা হয়েছে ইংরেজিতে। তা নিয়েই বেধেছে গোলমাল।

বৃহস্পতিবার ছিল পঞ্চায়েতের গ্রামসভার বার্ষিক অধিবেশন। সভায় ২০১৬-’১৭ অর্থবর্ষের হিসেব জন্য বিতরণ করা হয়েছে এই প্রতিবেদন বই। অভিযোগ, বইয়ের বেশ কিছু অংশ ইংরেজিতে ছাপার জন্য তা ভাল করে বুঝতে পারছেন না একাংশ গ্রামবাসী। এ নিয়ে শুক্রবার কাঁথি ৩-এর বিডিও মহম্মদ নুর আলমের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন মোট ৩৮ জন বাসিন্দা। তাঁদের দাবি, প্রতিটি প্রকল্পের বার্ষিক খরচের স্পষ্ট বিবরণ বাংলায় ছেপে ফের দেওয়া হোক সব গ্রামবাসীকে। স্থানীয়দের আরও অভিযোগ, একশো দিনের কাজের বার্ষিক মোট খরচ (প্রায় ৩ কোটি)-এর মধ্যে প্রায় ২৫ লক্ষ টাকার হিসেব রয়েছে এই বইতে। বেশ কিছু অপ্রয়োজনীয় তথ্যও সেখানে রয়েছে বলে জানান তাঁরা। দূরমুঠ পঞ্চায়েতের রত্নমালা গ্রামের বাসিন্দা খাজা আবুল আলির কথায়, “আমরা গ্রামের সাধারণ মানুষ। বাংলায় লিখলে আমাদের বুঝতে সুবিধে হতো।” এ বিষয়ে কাঁথি-৩ ব্লকের এক বিরোধী নেতা ঝাড়েশ্বর বেরা বলেন, “পঞ্চায়েতের বিভিন্ন প্রকল্পে সারা বছরের আয়-ব্যয়ের হিসেব সকলের জানা দরকার। গ্রামের সকলে সমান লেখাপড়া জানে না। সে ক্ষেত্রে পঞ্চায়েতের উচিত পুরো বইটা বাংলায় ছাপানো, যাতে সবাই সহজে বুঝতে পারে।” তাঁর প্রশ্ন, রাজ্য সরকার যখন সাধারণের সুবিধার্থে বিভিন্ন দফতরে বাংলা চালু করছে, তখন পঞ্চায়েতে ইংরেজি কেন?

কী বলছে প্রশাসন? মহম্মদ নূর আলমের কথায়, “প্রতিবেদনটি এখনও দেখিনি। তবে গ্রামবাসীদের জন্য বাংলায় লিখলে ভাল হতো। বই দেখে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করব, যাতে পুরোটা বাংলায় ছাপানো হয়।” পঞ্চায়েত প্রধান তাপসী সাউ বলেন, “ডিসেম্বর মাসের মধ্যে গ্রামসভা করতে হয়। তাই সময়ের অভাবে এবং তাড়াহুড়োয় একশো দিনের কাজের প্রকল্পের বিষয়টি ইংরেজিতে হয়ে গিয়েছে। আগামী বছর পুরো বইটা বাংলায় ছাপানোর ব্যাবস্থা করব।” পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান স্বপন মাইতি বলেন, “গত বছর গ্রামসভার প্রতিবেদনে বার্ষিক পরিকল্পনা ও একশো দিনের প্রকল্পের কাজ ইংরেজিতে ছাপা হয়েছিল। সেই সভায় দাবি ওঠে, পুরো বই বাংলায় ছাপা হোক। এ বার আমরা বার্ষিক পরিকল্পনার অংশটি বাংলায় ছেপেছি। কিন্তু তাড়াহুড়োয় একশো দিনের প্রকল্পের অংশটি ইংরেজিতে থেকে গিয়েছে। আগামী দিনে পুরো বইটাই বাংলায় ছাপার চেষ্টা করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Panchayat Annual Report English Version unrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE