Advertisement
১১ মে ২০২৪

পরিবেশ রক্ষায় বৌভাতে গাছের চারা বিলি

পরিবেশ বাঁচাতে বিভিন্ন ক্লাব বা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে হামেশাই দেখা যায় সচেতনামূলক প্রচার চালাতে বা গাছের চারা বিলি করতে। কিন্তু বিয়ে বাড়ির বৌভাতেও পরিবেশ রক্ষার বার্তা! সচারচর যা দেখা যায়নি, তারই সাক্ষী থেকেছেন পাঁশকুড়ার বাহারগ্রামের বাসিন্দারা।

নিমন্ত্রিতের হাতে গাছের চারা তুলে দিচ্ছেন নবদম্পতি। নিজস্ব চিত্র

নিমন্ত্রিতের হাতে গাছের চারা তুলে দিচ্ছেন নবদম্পতি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৮ ০০:৫১
Share: Save:

পরিবেশ বাঁচাতে বিভিন্ন ক্লাব বা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে হামেশাই দেখা যায় সচেতনামূলক প্রচার চালাতে বা গাছের চারা বিলি করতে। কিন্তু বিয়ে বাড়ির বৌভাতেও পরিবেশ রক্ষার বার্তা! সচারচর যা দেখা যায়নি, তারই সাক্ষী থেকেছেন পাঁশকুড়ার বাহারগ্রামের বাসিন্দারা।

স্থানীয় সূত্রের খবর, পাঁশকুড়ার বাহারগ্রামের বাসিন্দা পেশায় ফল ব্যবসায়ী সুব্রত দুয়া বরাবরই এলাকায় পরিবেশ প্রেমী বলে পরিচিত। শনিবার তাঁর বিয়ে হয়েছে। সোমবার পাঁশকুড়ার একটি অতিথিশালায় ছিল বৌভাত। সেই অনুষ্ঠানে পলিথিন এবং থার্মোকলের জিনিস যত দূর সম্ভব বর্জন করেছে পাঁশকুড়ার দুয়া পরিবার। কাগজ, চিনামাটি এবং শালপাতার প্লেটে হয়েছে অতিথি আপ্যায়নের ব্যবস্থা। এমনকী, চা এবং কফির জন্য প্লাস্টিকের বদলে ছিল কাগজের গ্লাস। এখানেই শেষ নয়, অতিথিদের ফিরে যাওয়ার সময় সুব্রত এবং নববধূ তাঁদের প্রত্যেকের হাতে তুলে দেন একটি করে কাগজের ব্যাগ। সেই ব্যাগে ছিল একটি করে ‘কাম কোয়াত’ লেবুর চারা গাছ এবং সুব্রতর বাবা অনিল দুয়া এবং মা অপর্ণা দুয়ার পরিবেশ রক্ষার আবেদন লিখিত একটি লিফলেট।

দুয়া পরিবার সূত্রের খবর, সুব্রত পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশনে চতুর্থ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করেছেন। পরে বি টেক পাস করে একটি নামী সংস্থায় চাকরিও পান। কিন্তু বাবার ব্যবসা দেখভালের জন্য চাকরিতে তাঁর আর যোগ দেওয়া হয়নি। সুব্রত জানাচ্ছেন, স্কুল জীবনে শিক্ষকদের পরিবেশ রক্ষার বার্তা তিনি আজও মনেপ্রাণে মেনে চলার চেষ্টা করেন।

দুয়া পরিবারের এ দিনের ওই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিতের সংখ্যা ছিল প্রায় দেড় হাজার। তাঁদের সকলের হাতেই তুলে দেওয়া হয় চারাগাছ। সুব্রতর বাবা অনিলবাবু বলেন, ‘‘আমরা পরিবেশ থেকে এত কিছু নিই, কিন্তু পরিবেশকে সে ভাবে কিছুই ফিরিয়ে দিই না। তাই এই অনুষ্ঠানে চারা গাছ বিতরণ করে আমরা প্রত্যেককে সেগুলি লাগানোর অনুরোধ জানিয়েছি। এতে পরিবেশের ভারসাম্য কিছুটা হলেও বজায় থাকবে।’’ নববধূ নম্রতা মাইতি দুয়া এ দিন বলেন, ‘‘ওই গাছগুলি আমাদের বিয়ের স্মৃতি হিসাবে বড় হবে। গাছ বাদে আমাদের অস্তিত্ব ভাবা যায় না। আশা করি আমাদের এই উদ্যোগ পরিবেশে কিছুটা হলেও ভাল প্ৰভাব ফেলবে।’’

দুয়া পরিবারের এই অভিনব উদ্যোগে অভিভূত আমন্ত্রিতরাও। নন্দকুমার থেকে বৌভাতের অনুষ্ঠানে এসেছিলেন কার্তিক সামন্ত। তিনি বলেন, ‘‘উৎসবে আনন্দ করতে গিয়ে আমরা অনেক সময় পরিবেশের ক্ষতি করে ফেলি। এখানে যে আয়োজন করা হয়েছে, তা পরিবেশ বান্ধব।’’ আর এক আমন্ত্রিতের কথায়, ‘‘নেমতন্ন খেতে গিয়ে উপহার দিতে হয় শুনেছি। কিন্তু এমন অভিনব উপহার যে ফিরে পাওয়া যায়, তা জানা ছিল না!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Nature Environment Panskura
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE