Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

জ্বলে না আলো, ভাঙা দোলনার পার্কে ফিকে হচ্ছে সুনীলের স্মৃতি

কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বিদ্যাসাগরের নামাঙ্কিত সেই পার্কের এখন হতশ্রী চেহারা। পার্কে গত তিনমাস ধরে আলো নেই। বিভিন্ন বিদেশি ফুলের গাছের সমারোহে পার্কের সৌন্দর্য ও আকর্ষণ অনেকটাই বাড়িয়েছে হলদি নদী।

হতশ্রী: পার্কে পড়ে আছে ভাঙা দোলনা। নিজস্ব চিত্র

হতশ্রী: পার্কে পড়ে আছে ভাঙা দোলনা। নিজস্ব চিত্র

আরিফ ইকবাল খান
হলদিয়া শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৯ ০০:১২
Share: Save:

হলদি নদীর ধারে সাজানো গোছানো এই পার্কে এক সময় এসে দু’দণ্ড কাটিয়েছেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় থেকে তসলিমা নাসরিন। নানা সময়ে সাংস্কৃতিক জগতের মানুষ এখানে এসে পার্কের প্রশংসা করেছেন। পুরপ্রধান থাকাকালীন তমালিকা পণ্ডাশেঠ এই পার্কটি হলদিয়া বন্দরের কাছ থেকে হলদিয়া পুরসভার নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিলেন। ভোল বদলে বিভিন্ন রকমের গাছ বসিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছিল পার্কটিকে। কাজের সূত্রে হলদিয়ায় আসা মানুষজন কাজের শেষে হলদি নদীর কোল ঘেঁসে থাকা এই পার্কে একটু জিরিয়ে নিতেন। এমনকী পুরপ্রধানও নিয়মিত এই পার্কে আসতেন। নিঃসন্দেহে হলদিয়ার অন্যতম দ্রষ্টব্য ছিল এই পার্ক।

কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বিদ্যাসাগরের নামাঙ্কিত সেই পার্কের এখন হতশ্রী চেহারা। পার্কে গত তিনমাস ধরে আলো নেই। বিভিন্ন বিদেশি ফুলের গাছের সমারোহে পার্কের সৌন্দর্য ও আকর্ষণ অনেকটাই বাড়িয়েছে হলদি নদী। পার্কের বেঞ্চে বসলে রাতের হলদিয়ায় জাহাজের আনাগোনা দেখা যায়। হলদিয়ার মানুষের কাছে এই পার্কটি ছিল বিশেষ পছন্দের। কিন্তু ইদানিং পার্ক হারিয়েছে তার জৌলুস। পার্কের দোলনা ভাঙা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে হলদি নদীর তীরে নির্মাণ কাজ চলছে। কাজের জন্য রাস্তা বন্ধ রাখা হয়। ফলে গাড়ি নিয়ে পার্ক পর্যন্ত যাওয়া যায় না। দীর্ঘ পথ হেঁটে প্রবীণেরাও পার্কে যেতে আগের মিতো উৎসাহ পান না।

কেন আলো নেই পার্কে? হলদিয়ার পুর পারিষদ আজিজুল রহমান বলেন, ‘‘আমরা পার্কটি সরেজমিন ঘুরে দেখেছি, আলো না থাকায় অনেক অসুবিধা হচ্ছে। হলদিয়া বন্দর সংস্থাকে জানিয়েছি। ওই পার্কে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে হলদিয়া বন্দর। ওঁদের পার্কে আলোর সমস্যার বিষয়টি জানানো হয়েছে।’’ পার্ক দেখভালের জন্য পার্কে নিরাপত্তারক্ষীদের একটি ঘরও রয়েছে। সেটিও বিদ্যুৎহীন রয়েছে বলে অভিযোগ।

হলদিয়া বন্দরের প্রশাসনিক ম্যানেজার অমল দত্ত বলেন, ‘‘বিদ্যাসাগর পার্কে বিদ্যুৎ নেই বলে জেনেছি। অবিলম্বে যাতে পার্কে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয় তা দেখা হবে।’’

স্থানীয় বাসিন্দা দিলীপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘এক সময় বিদ্যাসাগর পার্কে নিয়মিত আসতাম। এখানে আমার মতো অনেক প্রবীণ মিলে আড্ডা জমত। কিন্তু ইদানীং আলো না থাকায় যাই না। গেলেও বিকেলের আগেই ফিরে আসতে হয়।’’

পার্কের এক নিরাপত্তারক্ষীর অভিযোগ, পার্কের আশপাশে ঝোপঝাড় গজিয়ে ওঠায় সাপের উপগ্রব হচ্ছে। তার উপর আলো না থাকায় অনেকেই আসেন না। তাই সন্ধ্যার আগেই পার্কে তালা পড়ে যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Park Haldi River Haldia Port
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE