দুর্ভোগ: অনেকটা হেঁটে আনতে হচ্ছে পানীয় জল। নিজস্ব চিত্র
শহরের তাপমাত্রা রোজই থাকছে ৪০ ডিগ্রির আশপাশে। এই তীব্র গরমে ছ’দিন ধরে খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের একটি ট্যাপকল। নতুন ভবনের একতলায় এটিই একমাত্র ঠান্ডা পানীয় জলের কল। ফলে, সমস্যায় পড়েছেন রোগীর পরিজনেরা। পানীয় জলের জন্য হাসপাতাল চত্বরের অন্যপ্রান্তে যেতে হচ্ছে তাঁদের। স্বভাবতই তাঁরা ক্ষুব্ধ।
মেদিনীপুর মেডিক্যালের নতুন এই পাঁচতলা ভবনে রয়েছে পুরুষ ও মহিলাদের দু’টি করে মোট চারটি মেডিসিন ওয়ার্ড। বক্ষ, নাক-কান-গলা, চক্ষু বিভাগ ছাড়াও ব্ল্যাড ব্যাঙ্ক ও বিভিন্ন বর্হিবিভাগ রয়েছে এখানে। ফলে, রোগীর চাপ যথেষ্ট। তাঁদের পরিজনেদেরও নিত্য যাতায়াত লেগে রয়েছে। এত মানুষের একমাত্র ভরসা পানীয় জলের ট্যাপকলটি বিকল হয়ে যাওয়ায় ভোগান্তি বেড়েছে। দাঁতনের বাসিন্দা পল্টন মুর্মু গত সাতদিন ধরে মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। তাঁর নাতি সুকান্ত মুর্মু বলছিলেন, ‘‘জলের জন্য খুব আসুবিধে হচ্ছে। অনেক দূর থেকে এক বোতল জল ভরে নিয়ে আসছি। কয়েক ঘন্টা পরেই আবার জল ভরতে যেতে হচ্ছে।’’ চন্দ্রকোনার বাসিন্দা বাণেশ্বর শাসমল মেডিসিন ওয়ার্ডে পাঁচদিন ধরে ভর্তি। তাঁর ভাই শান্তিবাবুরও বক্তব্য, ‘‘মেদিনীপুর মেডিক্যালের মতো এত বড় হাসপাতালে মাত্র তিনটি জায়গায় পানীয় জলের ব্যবস্থা রয়েছে। এই কলে জল না পড়ায় অনেকটা দূরে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে জল ভরে আনতে হচ্ছে।’’ কেশপুরের নেড়াদেউলের বাসিন্দা তৈমিনা বিবি চারদিন ধরে মেডিক্যালে ভর্তি রয়েছেন। তাঁর আত্মীয় নাজিমা বিবির ক্ষোভ, ‘‘এত বড় ভবন বানিয়েছে, অথচ রোগী ও পরিজনদের জন্য পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। এটা মানা যায় না।’’
হাসপাতালের নতুন ভবনে পানীয় জলের সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন মেদিনীপুর মেডিক্যালের সুপার তন্ময়কান্তি পাঁজা। তিনি বলেন, ‘‘কল মেরামতির জন্য যাদের সঙ্গে চুক্তি রয়েছে, তাদের খবর দেওয়া হয়ছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।’’ সুপারের আরও আশ্বাস, ‘‘শীঘ্রই হাসপাতালে ‘ওয়াটার স্টল’ চালু হবে। দু’টাকায় মিলবে এক লিটার জল।’’
কিন্তু পাঁচতলা ভবনে একটি মাত্র পানীয় জলের কল কেন? তন্ময়বাবুর জবাব, ‘‘প্রতি তলায় কল বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’ হাসপাতালের এক আধিকারিক অবশ্য জানালেন, প্রতি তলায় জলের পাইপলাইনের কাজ করতে পূর্ত, বিদ্যুৎ ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের সঙ্গে সমন্বয় করে এগোতে হয়। তাই সামান্য কোনও কাজ করতে গেলেও অনেকটা সময় লেগে যায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy