বসো মা লক্ষ্মী... মেদিনীপুরে কেনাকাটা, শুক্রবার। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
সব্জি হোক বা ফল, এমনকী প্রতিমার দামও চড়া। আজ, শনিবার কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর আগে বাঙালি গৃহস্থের কপালে তাই ভাঁজ।
পুজোর প্রসাদে ফল লাগবেই। কিন্তু গেল বার পুজোয় যে আপেল বিক্রি হয়েছে ৬০-৭০ টাকা কেজিতে, এ বার সেই আপেলই বিকোচ্ছে ৮০-১০০ টাকায়। কলা ২০-৩০ টাকা ডজন (চাপা), ৪০-৫০ টাকা (কাঁঠালি)। আঙুরের দাম কেজি প্রতি ১৫০- ১৬০ টাকা, নাসপাতি ১০০-১৪০ টাকা কেজি, খেজুর ১৪০ টাকা কেজি, শশা ২০-২৫ টাকা কেজি। কমলালেবু বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ৮-১০ টাকায় আর এক-একটি নারকেল ১৫-২৫ টাকা। বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, এ বার কিছু ফলের আমদানি কম হয়েছে। ফলে, দাম চড়েছে। মেদিনীপুরের ফল ব্যবসায়ী ভাস্কর রায়, গোপাল দাসেরা বলছেন, “পুজোর সময় ফলের চাহিদা থাকে। তাই দাম একটু বাড়েই।’’
পুজোর ভোগে খিচুড়িও হবে। তরকারি রাঁধতে লাগবে সব্জি। কিন্তু সব্জির বাজারও যে আগুন! ২০-২২ টাকার নীচে এক কেজি আলু নেই। বেগুনের দর ২০ টাকার আশপাশে। ঢেঁড়শ ২০-৩০ টাকা, ঝিঙে ২০ টাকা, কুমড়ো ২০ টাকা কেজি। একই সব্জির দাম আবার কোথাও ৫ টাকা কম, কোথাও ৫ টাকা বেশি। কেন? সব্জি বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, পাইকারি বাজারে সব্জির দামের উপরই নির্ভর করে খুচরো বাজারে তার দাম কী হবে। বিভিন্ন বাজারে বিভিন্ন এলাকার সব্জি আসে। তাই ৪-৫ টাকার ফারাক হতেই পারে। এই অবস্থায় যে সব মধ্যবিত্ত বাড়িতে লক্ষ্মীপুজোর দিনে প্রতিবেশী-পরিজন মিলিয়ে ২০০-৩০০ জনকে পাত পেড়ে খাওয়ানো হয়, তাদের বাজেট দাঁড়াচ্ছে ২৫-৩০ হাজার টাকা। কয়েক বছর আগেও ১২-১৫ হাজার টাকায় সব মিটে যেত।
শুক্রবার লক্ষ্মীপুজোর বাজার করতে বেরিয়ে ছিলেন মেদিনীপুরের বাসিন্দা অলোক দাস, রীতা দত্তরা। অলোকবাবুর কথায়, ‘‘সব্জি থেকে ফল-ফুল, সবই তো চড়া। পকেটের টাকা শেষ হয়ে যাচ্ছে, অথচ ব্যাগ ভরছে না।’’ রীতাদেবী বলেন, “পুজো বছরে একবারই। তাই সব কিছুই নিতে হচ্ছে। পরিমাণে একটু কম নিচ্ছি।’’ গৃহবধূ মানসী গিরির আবার বক্তব্য, “বাড়িতে বহুদিন ধরে লক্ষ্মীপুজো হয়ে আসছে। পুজোর সঙ্গে তো আর আপস করা যায় না। আয়োজনে কিছু কম করলেই মনটা খারাপ হয়ে যায়।’’
প্রতিমার দামও বেশ চড়া। ১০০ টাকার নীচে ছাঁচের ছোট প্রতিমা নেই বললেই চলে। শাড়ি পরানো মাটির ছোট প্রতিমার দাম ৩০০ টাকা। এ দিন মেদিনীপুরের কোতোয়ালিবাজার, এলআইসি মোড়, রাজাবাজার প্রভৃতি এলাকায় এই দামে প্রতিমা বিক্রি হয়েছে। অন্য দিকে, এক-একটি গাঁদা ফুলের মালার দাম ৮-১০ টাকা। রজনীগন্ধা ফুলের মালার দাম ১৫-২০ টাকা। আকারে যত বড় হবে, দামও তত চড়বে।
সব মিলিয়ে, সাধ-সাধ্যের মেলবন্ধন ঘটানোটাই এ বার লক্ষ্মীপুজোয় মধ্যবিত্ত বাঙালি গৃহস্থের কাছে চ্যালেঞ্জ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy