রাবণ দহন। খড়্গপুরের রাবণ ময়দানে। — নিজস্ব চিত্র।
ঐতিহ্য মেনে ‘রাবণ পোড়া’ উৎসব পালিত হল খড়্গপুরে। মঙ্গলবার খড়্গপুরের নিউ সেটলমেন্ট সংলগ্ন রাবণ ময়দানে সলতে দেওয়া তিরে আগুন লাগিয়ে রাবণ বধ করেন সাংসদ শিশির অধিকারী ও খড়্গপুরের ডিআরএম রাজকুমার মঙ্গলা। উপস্থিত ছিলেন খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিষেক গুপ্ত, পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার, দশেরা উৎসব কমিটির কর্মকর্তা রাজা রায় প্রমুখ। ভিড়ের জেরে বিশৃঙ্খলা তৈরি হওয়ায় উৎসবে কিছুটা তাল কাটে। যদিও পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
অকাল বোধন করে রাবণের সঙ্গে যুদ্ধে নেমেছিলেন রামচন্দ্র। রাবণ বধ হয়েছিল দশমীতে। সে জন্য দুর্গাপুজোর দশমীর সন্ধ্যায় ঘটা করে বহু জায়গায় হয় রাবণ দহন। রাবণের একটি বড় কাঠামো তৈরি করে তার মধ্যে ঠেসে দেওয়া হয় নানা ধরনের বাজি। রাবণ পোড়া শুরু হলে সেই বাজি ফাটতে থাকে সশব্দে। এই উৎসব মূলত উত্তর ভারতের হলেও রাজ্যের খড়্গপুর, লালগড়ের মতো বেশ কিছু জায়গায় দীর্ঘকাল ধরে চলে আসছে এই প্রথা।
অন্য বছর রাবণ ময়দানে বাঁশের ব্যারিকেড করে দু’টি গেট বানানো হয়। একটি গেট দিয়ে বিশিষ্ট ব্যক্তিরা অনুষ্ঠানস্থলে যান। অন্য গেট দিয়ে বিভিন্ন পদযাত্রা (আখড়া) ঢোকে ময়দানে। এ বার শুধুমাত্র ডানদিকের গেটটি খোলা হয়েছিল। বিশিষ্ট ব্যক্তিদের যাওয়ার ওই গেট দিয়েই আখড়াগুলি ঢুকতে শুরু করায় বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বাঁ দিকের গেটের তালা ভেঙে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। উৎসব কমিটির সহ-সভাপতি রাজা রায় বলেন, “দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থার ভুল সিদ্ধান্তে আখড়াগুলি ঢোকার গেট বন্ধ থাকায় একটা বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছিল। পরে সমস্যা মিটে গিয়েছে।”
১৯২৫ সাল থেকে শহরে আয়োজন হচ্ছে রাবণ দহন উৎসব। অন্য বছরের মতো এ দিনও ‘রাবণ পোড়া’ দেখতে ময়দানে ভিড় করেন শহরের বহু মানুষ। ফলে রাবণ ময়দানে যাওয়ার বোম্বে সিনেমা ও অরোরা গেট ঘেঁষা দু’টি রাস্তাতেই যানজট তৈরি হয়। বিপাকে পড়েন দর্শনার্থীরা। ‘রাবণ পোড়া’ দেখে খুশি দর্শনার্থীরাও। দর্শনার্থী টিপু রায়, বি কাবেরিরা বলছিলেন, “খুব কষ্ট করে ময়দানে পৌঁছেছি। কিন্তু রাবণ পুড়ে ছাই হওয়ার দৃশ্য মনকে চাঙ্গা করে দিল। এ ভাবেই দেশের সব অশুভ শক্তিও যেন বিনাশ হয়ে যায়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy